গলাটা তার চেনা। খুব করে চেনা। ভীষণ চেনা। পিছনে ফিরে তাকালো ফালাক। বছর আটাশ-ত্রিশের, সুঠামদেহি, শ্যামবর্ণের একজন সুপুরুষ দাঁড়িয়ে। পরনে কালো রঙের শার্ট, ফরমাল প্যান্ট। চুলগুলো এখনো ভেজা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ঠোঁটে মৃদু হাসি লেপ্টে আছে। সম্পূর্ণ মুখ সেটা জানান দিচ্ছে। চোখে গোল-কালো ফ্রেমের চশমা। হাতে একগুচ্ছ কয়েক ধরণের মেশালো ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ফালাক মাথা থেকে পা অবধি একবার ভালোভাবে দেখে নিল। এই লোকের সাথে এতদিন সে উল্টাপাল্টা ব্যবহার করে এসেছে! আর এই লোক তার ব্যবহার সহ্যও করেছে! কিছুক্ষণ আগেও এই লোকের সাথেই ধমকে ধমকে কথা বলেছে! জিভে কামড় খেল ফালাক। তার আশার চেয়েও যে অতি সুদর্শন ছেলে দাঁড়িয়ে আছে সামনে। বিশ্বাসই হচ্ছে না ফালাকের। ফালাক অসহায় চোখে তাকিয়ে এতক্ষণে জবাব দিল,“জি।” ফালাকের গলা নিশোর কানে পৌঁছতেই নিশো হেসে ফেলল। মাথা বাঁকিয়ে বলল, “অনেকক্ষণ অপেক্ষা করিয়েছি তাই না? স্যরি ডিয়ার প্রেমিকা।” ফালাক স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে বলল,“প্রেমিকা? মামার বাড়ির আবদার নাকি?” নিশো ফালাকের দিকে ফুলগুলো বাড়িয়ে দিয়ে বলল,“উহু৷ শ্বশুরবাড়ির আবদার, ম্যাডাম।” ফালাক ফুলগুলো হাতে নিল। নিশো গিয়ে সামনের সিঙ্গেল সোফায় বসলো। হাতের ফোনটা টেবিলের ওপর রেখে বলল, “দাঁড়িয়ে রইলে কেন? বোসো।” ফালাক ধপ করে বসে পড়ল। ফুলগুলো সামনেই রেখে দিল৷ কী বলবে বুঝতে পারছে না সে। কী বলা উচিত তার! অনুচিতই বা কী? চুপচাপ বসে থাকা? এটাই উচিত? ফালাককে চুপ করে বসে থাকতে দেখে নিশো বলে উঠল, “আমাকে অপছন্দ হয়েছে তোমার? অপছন্দ বলেই কি চুপ করে আছ? অনেক বেশি সুদর্শন পুরুষ হব আমি সেটা আশা করেছিলে?” ফালাক চকিতে বলে উঠল,“ না, না। সেরকম কিছু না।” নিশো সাথে সাথে বলল,“তার মানে পছন্দ করেছ?” ফালাক ভ্রু সটান বিস্তৃত করে বলল,“ ফাঁসিয়ে দিচ্ছেন কেন?” “ফাঁসেননি এখনো? ভালোবাসেন না? আমাকে ভালোবাসেন না?” ফালাক মাথা নাড়িয়ে বলল,“না। আমার বাবা তো আমার বিয়ে....” ফালাককে কথা শেষ করতে দিল না নিশো। বলল, “বর পাল্টে দিলে কেমন হবে? মেয়ে রাজি কি না সেটা বলো। বাপকে ঠিক রাজি করিয়ে নেব।” ফালাক মুচকি হাসল। “বাবার নম্বর লাগবে?” নিশো ফালাকের চোখে চোখ রেখে বলল,“ জি, প্লিজ। কবে বিয়ে করবে বলো?” “সেটা পরে ঠিক করি?” “হ্যাঁ ঠিক করা-ই যায়। এখন বলো কী খাবে?” “আপনি যেটা অর্ডার দিবেন সেটাই। সেদিন তো খুব বললেন, আমার সবকিছু জানেন। এসবও নিশ্চয়ই অজানা নয়?” “তুমি তো ফোনে বলছিলে আমি আসলে আমাকে খাবে। প্লিজ, ইয়্যু ক্যান...” “অসভ্য আপনি।” “অনেক! সময় নাও টের পাবে।” নিশো মুচকি হেসে খাবারের মেন্যু দেখতে দেখতে আবার বলল,“ এভাবে তাকিয়ে থেকো না আমার লজ্জা লাগছে।” ফালাক নজর নামিয়ে নিল। চোখ বন্ধ করে ফেলল। লোকটা ভারি লজ্জায় ফেলে দিতে পারে। এটা আর নতুন কি! শুরু তো হয়েছে অনেক আগেই। নিশো মুখ তুলে চাইলো। ফালাকের দিকে নজর নিবদ্ধ রেখেই বলল,“নির্লজ্জ ভাবছ? যখন তখন যা-তা বলে ফেলি? মাথায় রেখো মেয়ে, নির্লজ্জ ছেলেরা বউকে আদরে রাখে৷ বউকে লজ্জায় না রাখলে বর কী জিনিস সেটা বউ বুঝবে কীভাবে? লজ্জার জন্য তৈরি হয়ে যাও। সভ্য পুরুষ আমি মোটেও নই।” ফালাক নিশোর কথার পৃষ্ঠে বলে উঠল,“আমার ব্যাপারে সবকিছু পজেটিভলি কেন নিচ্ছেন? আপনার কেন মনে হচ্ছে আমি আপনাকে মেনে নিয়েছি?” নিশো ফালাকের চোখে চোখ রাখল। গলার স্বর পরিবর্তন করে মৃদু আওয়াজে বলল, “তোমার চোখ বলে দিচ্ছে তোমার আমাকে লাগবে, খুব করে লাগবে। চোখে হারাচ্ছ তুমি আমায়।” “বেশি বুঝছেন আপনি।” “বেশিই বুঝাচ্ছ যে!” “ বাজে কথা।” “আরেকটা বাজে কথা বলি?” “কী?” “ ভালোবাসি, ফালাক।”
নিশো আর ফালাকের দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের গল্প!
Read all reviews on the Boitoi app
Outstanding book🌹🫶
এক কথায় অসাধারণ একটি ইবুক মাশাল্লাহ বারাকাল্লাহু ফিকুম । আপু এগিয়ে যাও দোয়া এবং শুভকামনা রইল। সামনে এমন আরো সুন্দর সুন্দর লেখা আমাদের উপহার দাও এই প্রত্যাশায় রইল। 💜
কী বলবো বলো তো? আমি সবার আগে কিনেছি একটু একটু করে পরে এখন শেষ করলাম। আরেকটু দীর্ঘ হলে কী হতো? ভীষণ সুন্দর হয়েছে। দুষ্টু মিস্টি ভালোবাসার এক অমায়িক মিশ্রণ। আমি গল্পে বিশ্বাসী। গাঁথুনি আর বাক্যবিন্যাস খেয়াল করি। কমেডি ট্র্যাজেডি সব গল্পেই কম বেশি থাকেই। আমার কাছে সত্যি কারের লেখক/লেখিকা কে জানো যে অনুভূতির ব্যাখ্যা দিয়ে তা পাঠককে অনুভব করাতে পারে। তুমি ঠিক তেমন একজন বুবু। নীলকুরিঞ্জি যেমন আমার প্রিয় একটা বই। এটাও আমার প্রিয় একটা ই-বুক। ফালাক&নিশো এই দুই চরিত্রকেই তুমি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছো। মনে গেঁথে দিয়েছো নাম দুটো। তাদের মিষ্টি ভালোবাসা দেখে নিশ্চিত তোমার অনেক পাঠিকা ফালাককে হিংসে করেছে। আমি কিন্তু করি নি কারন আমার মন তো সাদমানে আটকে আছে। দোয়া করি একদিন অনেক বড় লেখিকা হও। আর এমন সুন্দর সুন্দর বই,ই-বুক আমাদের উপহার দাও। ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি বুবু। অনেক ভালোবাসা তোমার জন্য যা অগনিত।❤️🥰😘
অনেক বেশি ভালো লাগছে
অসাধারণ লিখেছেন আপু 💙🔥
অসাধারণ হয়েছে৷। অনেক সুন্দর হয়েছে গল্প টা❤️🥰
অল্পতেই মন ভালো করে দেওয়ার মতো মিষ্টি একটা গল্প। সন্ধ্যার গল্পের মাধ্যমে সৃষ্ট ফালাক নিশোর প্রতি ভালোলাগার অনুভূতি "মনে আঙিনায়" গল্পের মাধ্যমে যেনো আরো গভীর হলো। নিশোর মনের আঙিনায় ফালাকের বিচরণের মতো গল্পটাও আমার পাঠক মনের আঙিনায় জায়গা করে নিলো। অভদ্র অসভ্য ঠোঁট কাটা নিশো আর মিষ্টি মেয়ে ফালাকের গল্পটা দারুণ ছিলো। ইন্টারেস্টিং ছিলো নিশোর ফালাকের প্রেমে পড়ার গল্পটা, ফালাকের প্রতি তার ভালোবাসার অনুভূতি ছিলো মুগ্ধ করার মতো। সবচেয়ে বেশি ভালোলাগার বিষয় ছিলো "একটি সাঁঝরঙা গল্প" গল্পের ফালাক নিশো আর "মনের আঙিনায়" গল্পের ফালাক নিশোর মাঝে আকাশ পাতাল তফাৎ। ব্যক্তিত্ব ভিন্ন, প্লট ভিন্ন, চরিত্রদের সম্পর্ক ভিন্ন, তাদের বৈশিষ্ট্যও ভিন্ন, সবটাতেই ছিলো নতুনত্বের ছোঁয়া। পড়তে গিয়ে একদম মনে হয় এই চরিত্রদের নিয়ে আরো কোনো গল্প লেখা হয়েছে। পরিশেষে একটা আফসোস থেকেই গেলো গল্পটা আরেকটু বড়ো হলে কী এমন হতো? আবার নিজের মনকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য ভেবে নিয়েছি গল্পটা ছোট, অল্পতেই শেষ হয়ে গেলো বলেই হয়তো বেশি ভালো লাগলো, ঠিক যেনো হাওয়া মিঠাই।
Khub sundor❤👀🥺
প্রথমত নিশো আর ফালাককে চিনেছি,, "একটি সাজরঙা গল্প" থেকে।এটা পড়তে পড়তেই জানতে পারলাম নিশো আর ফালাকের ই-বুক আসছে ভিন্ন প্লটে। তখন থেকেই ইচ্ছে ছিল আমিও পড়বো।আমি না পড়লে নিশো অসম্পূর্ণ থাকবে(আমার নিজের মনে হওয়া আরকি😑 নিশোকে বেশি ভালোবাসিতো তাই🤧) আস্তে আস্তে অনেক গুলো অংশ ও পড়েছিলাম ফেসবুকে। বরও অনুপ্রেরণা জাগলো পড়ার জন্য। বের হওয়ার পরের দিন এক আপি থেকে গিফট পাই।😇 এবার আসি গল্পে,,,,,,,,,,,,,, "মনের আঙ্গিনায়" নামটা এতো সুন্দর। আর প্রছদটা বেশি ভালো লেগেছে।দুইটা মানানসই ছিল সেজন্য। নামটা একেবারে গল্পের সাথে মিলে যায়। নিশোঃ আমার পছন্দের একজন এবং গল্পের প্রধান চরিত্র। সম্পূর্ণ নাম নুহাশ নিশো।কি দারুন নাহ! 🤭 তার সম্পর্কে কিছু বললে কম হবে। কোন ছেলে পারে এই যুগে এসে এতো নিখুঁতভাবে ভালোবাসতে? সে পেরেছে। খুব সুন্দর করেই পেরেছে। তার ভালোবাসা এতো গভীর পড়লেই বুঝতে পারবেন সবাই। ফালাকঃ আরেকটি প্রধান চরিত্র। নিখুঁত ব্যক্তিত্বের মেয়ে। এতো গুনতান সব জায়গাতে। তার ভালোবাসাটাও খাঁটি ছিল।কিন্তু আমার একে সহ্য হয় নাহ।😒 নিশোকে কেন বিয়ে করবে? 😭😭 অন্যান্য চরিত্রঃ সবার চরিত্রই ভালো লেগেছে। সব দিক দিয়ে একেবারে পারফেক্ট। সবকিছু অনেক সুন্দর ছিল। আমার মতামতঃ গল্পটা অসাধারণ। অনেক সুন্দর। আমার অনেক ভালো লাগছে।দারুণ ছিল। মূলত নিশোর জন্য গল্পটা পড়ার আগ্রহ হলেও গল্পের সবাইকেই ভালো লেগেছে। দারুণ এক কথায়। সবকিছু চমৎকার একেবারে। জানি নাহ কেমন হলো।🥹 আমি নিজের মতামত দিলাম। ভুল হলে ক্ষমা করার জন্য অনুরোধ রইলো। রেটিংঃ ৫/৫ ~আহানা! (তামাপুর ছোট্টি) 🙈😘