১২ মে ১৯৪২ রাশিয়ান আর্টিলারির মুহুর্মুহু গোলার আওয়াজে কাঁপছে খারকভ রণভূমি। পুব খারকভে হিল টোয়েণ্টি সিক্স-এর জার্মান অবস্থানের ওপর সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন জেনারেল আইভান তিমোশেঙ্কো। বৃষ্টির মত গোলাবর্ষণ করতে করতে এগিয়ে আসছে রেড আর্মি। সবে সূর্য উঠেছে তখন। করডাইটের কটুগন্ধে ভারি হয়ে আছে ভোরের নির্মল বাতাস। দূর থেকে মাঝে মাঝেই রাশিয়ান অফিসারদের তীক্ষ্ন কণ্ঠের কম্যাণ্ড কানে আসছে জার্মানদের। নিজের সুদৃঢ় অবস্থান থেকে শত্রুর অগ্রযাত্রা দেখছেন জার্মান চলিশতম প্যানজার ডিভিশনের অধিনায়ক জেনারেল বক। বড্ড ধীর, অবিচল দেখাচ্ছে তাঁকে। অথচ সামনে থেকে ডিভিশনের পর ডিভিশন রেড আর্মির মার্চ করে আসার দৃশ্য যে কোনো সমরনায়কের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেবে। অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক টি ৩৪-এর পিছন পিছন পিলপিল করে এগিয়ে আসছে তারা। 'তৈরি হয়ে নাও,' পাশে দাঁড়ানো ক্যাপ্টেন মোলডার্সকে বললেন জেনারেল। 'আর খুব বেশি হলে এক ঘণ্টা সময় পাচ্ছ তুমি।' দূরবীন চোখে লাগিয়ে সামনের বিস্তৃত উপত্যকার দিকে চেয়ে আছেন তিনি। একটু পর কী ঘটতে যাচ্ছে, ভালই জানা আছে। জেনারেল তিমোশেঙ্কোর জন্যে করুণা হচ্ছে তাঁর। বাঙ্কারের এ-মাথা ও-মাথা নজর বুলিয়ে নিল মোলডার্স। উঁচু গলায় বলল, 'রেডি হও সবাই। ভদ্রলোককে যথাযোগ্য অভ্যর্থনা জানাতে হবে।' 'এবং ফেরত পাঠাতে হবে বেইজ্জত করে,' পাশ থেকে এক লেফটেন্যাণ্ট বলে উঠল। 'তাই না, ক্যাপিটান?'