আমাদের অপেক্ষা শুধু পহেলা বৈশাখের জন্য নয়। আমাদের মূল অপেক্ষা থাকতো চৈত্রসংক্রান্তির জন্য। এর মূল কারণ ছিলো চড়কপূজা এবং চৈত্রসংক্রান্তির মেলা। ফাল্গুন মাস থেকেই চড়কপূজার প্রস্তুতি শুরু করতেন বাদ্যকর সম্প্রদায়। শিব-পার্বতী-(হরগৌরী) সেজে। ছেলেরাই পার্বতী সাজতেন খুব সুন্দরভাবে। গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ঢোল-কাসর বাজিয়ে চমৎকার সব গানের সাথে শিবপার্বতী নাচতেন আর গৃহস্থ বাড়ি থেকে চাল-সবজি দক্ষিণার অর্থ দেওয়া হতো। ঢোলের আওয়াজ শোনামাত্র গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়ে সেই দলে যোগ দিতাম। এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি যেতাম। নিজেরাও আনন্দে একটু নেচে নিতাম। আর দিন গুনতাম চড়কপূজার। শিবপার্বতীকে নিয়ে দল এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে যেতো। ফাল্গুন-চৈত্র এই দুই মাস কান পাতলেই দূর থেকে ভেসে আসতো ঢোলের শব্দ। আমরা বুঝতাম শিব-পার্বতী নাচ চলছে। চোখের সামনে ভেসে উঠতো সেই সব দৃশ্য ।