পৃথিবীর প্রায় তিনলক্ষ বর্গমাইল এলাকা মরুভূমির অবস্থান। এ শতকের প্রারম্ভে আধুনিক মানচিত্রে এ জায়গাকে ফাঁকা দেখানো হয়েছে। বারজাক কমিশন যখন অবর্ণনীয় দুঃখকষ্ট স্বীকার করে অগ্রসর হচ্ছিলেন তখন এ মরুভূমি অতিক্রম করা তো দূরের ব্যাপার কেউ পদচিহ্নও আঁকেনি এর বুকে। আসলে সাহারা তখনো সভ্য মানুষের কাছে অজানা-অচেনা ছিল। তখন থেকে এ-অঞ্চলটাকে নিয়ে কতই না মজার মজার কল্পকাহিনী লোকের মুখে মুখে ঘুরে বেড়াত। কারো কারোর মুখে শোনা যেত, লকলকে আগুনের শিখা মুখ দিয়ে অনবরত নির্গত করতে করতে আগুন-পাখি মরুপ্রান্তরের ওপর দিয়ে চক্কর মেরে বেড়াতে দেখেছে। তার চোখ দুটো দিয়েও নাকি আগুনের শিখা ঠিকরে বেরতো। আবার লাল দৈত্যাকৃতি দস্যুরা নাকি দল বেঁধে মরুভূমির বুকের ওপর দিয়ে ছুটে যেত। আগুনে জ্বালিয়ে পুরিয়ে খাক করে দিত একের পর এক শহর। লুঠ করে আবার উল্কার বেগে ধেয়ে যেত মরুভূমির বুকে। মোট কথা মরুভূমি ছিল অপদেবতাদের নিশ্চিন্ত বাসস্থল। কেউ এ রহস্যভেদ করতে প্রয়াসীও হয় নি। সমগ্র নাইজার এবং মরুভূমির প্রান্তদেশ থেকে প্রায় একশো মাইল পর্যন্ত আজও অসহায় মানুষরা এমনি হাজারো গুজবে আতঙ্কিত বুকে শুনেছে। ভয় ডরে সিটকে থেকে এমনি করে কাটিয়েছে সহায়সম্বলহীন মানুষগুলো দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আর বছরের পর বছর।