বুলেট কী যে করে দিয়ে গেল! তার বুক থেকে কবিতার মতো করে এখন পোষা কবুতরগুলো উড়ে যাচ্ছে! চলে যাচ্ছে নজরুল ও রবীন্দ্রনাথ। জীবনানন্দ ও জসীমউদ্দীন! ঢেউ ভাঙতে ভাঙতে দূরে চলে যাচ্ছে তার চিরচেনা পদ্মা ও যমুনা। তিনি তবু সামনের দিকে হাত বাড়ানোর চেষ্টা করলেন। বাংলাদেশটাকে তিনি যদি আরেকবার ছুঁয়ে দিতে পারতেন! তাহলে হয়তো আবারো জেগে উঠত প্রিয় বাংলাদেশ! শেষ ভাবনায় খুব সামান্য সময়ের জন্য ফিরে এলেন লালন সাঁই! চলে যাবার আগে উপস্থিত শিষ্যদের কাছে লালন জানতে চেয়েছিলেন- কেউ কি আমাকে বুঝল? কেউ কি আমাকে চিনল? বঙ্গবন্ধুকে কি কেউ চিনল?... যখন বেঁচে থাকা অন্যদের কান্না শোনা যাচ্ছে না, ঠিক তখনই বুটের টাস-টাস-টাস-টাস-টাস শব্দ তুলে সিঁড়ির কাছে চলে এলো এক সৈনিক। সবাইকে অবাক করে সে বঙ্গবন্ধুর মরদেহটা উল্টে রাখল। এরপর দম্ভ করে বলল- ‘শেষমেশ মারতে পারলাম শয়তানটাকে! সবাই যেন ওর মুখটা দেখতে পারে এই কারণে মুখটা ওপরে তুলে দিলাম’- বলেই নূরকে স্যালুট দিল সে! নূর স্যালুট নিল না। খুন করার পর স্যালুট দিতে বা নিতে হয় কি না সে জানে না। ওই সৈনিক গট গট করে সিঁড়ি ভেঙে নিচে নামতে থাকল। কেউ খেয়াল করল না ওই সৈনিকের বুট জুতোতে রক্ত লেগেছে। সে আজ যেখানে যেখানে যাবে, সেখানে সেখানে ছড়িয়ে যাবে বঙ্গবন্ধুর রক্ত!