ওরা এখানে বসেই দেখতে পাচ্ছে, ঢেউয়ের মাঝে তন্ময় আর কামালের সাঁতার কাটার প্রচেষ্টা। চাঁদটাও যেন ততোক্ষণে আরও নিবিড় হয়ে নেমে এসেছে ওদের আরো কাছে। অশান্ত তরঙ্গমালা বার বার উছলে উঠে ছুঁয়ে দিতে চাইছে ওদের চির কাঙ্খিত মায়াবী চাঁদকে। বাতাসের তোড়ে সমুদ্রের গর্জন! সেই সাথে দমকে দমকে ভেসে আসছে উচ্ছ্বসিত ভ্রমণপ্রেমীদের চাপা কোলাহল। রুমা একটু নড়েচড়ে আরাম করে বসে বলল, 'এই রাতে আমাদের এখানে টেনে আনার জন্যে কামাল ভাইকে ধন্যবাদ দে।' নীলাও ঠাট্টার ছলে বলে ওঠে, 'কামাল, আপনাকে শত-সহস্র ধন্যবাদ, লাল গোলাপ শুভেচ্ছা, আর আপনার জন্যে হৃদয় নিংড়ান সুনিবিড় ভালোবাসা...।' রুমা বলে, 'এই 'ভালোবাসা' উনার সামনে দাঁড়িয়ে বলতে হবে, পারবি?' নীলা বলল, 'না, পারবো না।' 'উনি কিন্তু তোকে নিয়ে খুব কষ্ট পাচ্ছেন। বলতে পারিস তোর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন।' 'উনি তো সাগরেও হাবুডুবু খাচ্ছেন! দেখ, দেখ... উনি সাঁতার জানেন তো?' 'তুই কিন্তু হেঁয়ালি করছিস, নীলা! কামাল ভাই কিন্তু তার ভালো লাগার কথা আমাকে একপ্রকার বলেই ফেলেছেন। উনি কিন্তু ডেসপারেট...!' নীলা বলে, 'ইউরোপীয়ান মাইন্ড! কিন্তু এটা বাংলাদেশ, আর আমি একটা বিবাহিতা মেয়ে...। শোন, তোকে আগেও বলেছি, উনার এই মনোভাবের কথা তুই আমাকে বলেছিস, উনি যেন না জানতে পারেন। সবকিছু জানবার পরও উনাকে আমাদের সাথে রাখা অন্যায়, আমার দুর্বলতার প্রকাশ। আমি কী বলেছি বুঝতে পেরেছিস?' 'হ্যাঁ, পেরেছি। আর বাস্তবতা হলো এই, তুই তো আসলে সবকিছু জানিসই। আর জেনেশুনে উনাকে সঙ্গেও রেখেছিস। মানে, তুই কামাল ভাইয়ের প্রতি কিছুটা হলেও দুর্বল।' নীলা চমকে রুমার দিকে তাকাল।