"সমস্যা কি আপনার? এভাবে সাথে সাথে হাঁটছেন কেনো?" "রাস্তাটা কী তোর একার নাকি? এতো বড়ো রাস্তা দিয়ে দুজন পাশাপাশি হেঁটে যেতেই পারে।" "আপনি ইচ্ছে করেই এমন করছেন আমার সাথে তাইনা?" "ইচ্ছে করে কী করলাম আবার? রাস্তা তো সবার। এটা তো আর তোর জল্লাদ বাপের না, যে তুই ছাড়া আর কেউ হাঁটতে পারবে না।" "কিন্তু এভাবে কারোর পথচলার সমস্যা করে তো আর কেউ চলছে না রাস্তায়।" "যাহ বাবা, আমি আবার কখন তোর সমস্যা করলাম। এই দেখ তোর আর আমার মধ্যে দূরত্ব কতটুকু। আমি কি টাচ করছি নাকি তোকে? তোর হাত ধরেছি? নাকি তোর পায়ে পা বেড়ী দিয়ে চলছি?" "উফ! আপনি একটা অসহ্য লোক অনিক ভাই। আমাকে হাঁটতে দিচ্ছেন না ঠিকমতো। আবার উল্টা পাল্টা যুক্তি দিচ্ছেন।" "এই এই দেখি এদিকে আয় তো, তোর কোমর, বডি একটু মেপে দেখি কত মোটা হয়েছিস।" "ছিঃ! আপনি আসলেই অশ্লীল একটা লোক।" "এতো বড়ো রাস্তা দিয়ে পাশে একজন হাঁটছে বলে তোর প্রবলেম হচ্ছে, তাই তো কতো মোটা হয়েছিস মাপতে চাইলাম। আর এই মুহূর্তে আমার হাত ছাড়া অন্য কিছু তো নেই মেজারমেন্ট করার জন্য। এজন্য তো বললাম।" ঋতু রাগী একটা দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো অনিকের উপর। এরপর কোনো প্রকার বাক্যব্যয় না করে সোজা হাঁটা ধরলো। অনিক ঠোঁট কামড়ে হাসে। ঋতুকে বিরক্ত করতে তার বেশ লাগে। যদিও এটা তার সহজাত প্রবৃত্তি। ঋতুর জন্মের পর থেকেই এই প্রবৃত্তি ধরা দিয়েছে তার মধ্যে। ঋতু আজও সেই আগের মত আছে। আগে শুধু কান্না করতো আর এখন গাল ফোলায়, নাকের পাটা ফুলে ফেঁপে ওঠে। দেখলেই নাক টেনে দিতে মন চায় যেনো। কাল থেকে ক্লাস শুরু হবে ঋতুর। অ্যাডমিশনের কাজটুকু যেনো রাতারাতিই হয়ে গেছে তার। অথচ সে জানে না এসব কিভাবে সম্ভব হলো। পরেরদিন কলেজে গিয়ে জানতে পেরেছিলো তার অ্যাডমিশন হয়ে গেছে। কাল থেকেই ক্লাসে জয়েন করতে পারবে সে। খুশিতে বাকবাকুম হয়ে এসব নিয়ে আর সেভাবে ভাবেনি সে। ঘড়ির কাঁটায় সময় নয়টা ত্রিশ। ঋতু ব্যাগপ্যাক করছিলো বসে বসে। ব্যাগটা গুছিয়েই খেতে যাবে নীচে। বেশ কিছুক্ষন ধরে নীচতলা থেকে ডাক আসছে তার জন্য। এমন সময় আচমকা খুট খুট করে শব্দ হয় ব্যালকনির দরজায়। সেদিনের পর থেকে ব্যালকনির দরজা বেশিরভাগ সময়টাতেই লক করে রাখে সে। বিধায় আবারও ওই অসভ্য লোকটা এমন অহেতুক কান্ড না করে বসে। এমনি কোনো খুটখাট শব্দ আসছে ভেবে প্রথমে পাত্তা দিলো না ঋতু। কিন্তু পরবর্তীতে যখন শব্দের উৎস জোরালো হলো, ভয় পেলো সে। সাথে কৌতূহলও হলো শব্দের উৎস খুঁজতে। অতঃপর বেশী কিছু চিন্তা না করে আস্তে করে খুলে দেয় দরজার লক। এরপর দরজাটা হালকা ফাঁক করে সামান্য উঁকি দিতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে অনিকের বিরক্তমাখা মুখখানি। "এতক্ষণ লাগে কেনো তোর দরজা খুলতে? আর রাত বিরেতে এসব দরজা লাগানো কী? কী এমন আকাম কুকাম করিস যে দরজা লাগাতে হবে এতো সন্ধ্যা সন্ধ্যা।" অনিকের ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলা কথাগুলো শুনে চোখ উল্টে যাওয়ার উপক্রম ঋতুর। যার থেকে বাঁচতে সে দরজায় খিল এঁটে থাকে, তাকেই নাকি এখন কৈফিয়ত দিতে হবে তাকে। আর কী বলে এই লোক? এখন সন্ধ্যা? ঘড়ি কি দেখেনি নাকি? "আই নো আই অ্যাম টু মাচ হট। তাই বলে চুপ থেকে ওমন হা করে দেখবি আমাকে? লজ্জায় তো আমার নিজেরই মাথা কেটে যাচ্ছে তোর তাকানো দেখে।" ঋতু চোখ বড় বড় করে খানিকটা সময় নেয় অনিকের কথাগুলো হজম করতে। অতঃপর আঙ্গুল উঁচিয়ে তেড়ে আসে অনিকের কাছে। চেহারায় তার রাগের আভাস। অনিক তাকে এগিয়ে আসতে দেখে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বেডে আরাম করে বসে। তারপর রুমের চারপাশে চোখ বোলাতে বোলাতে লাগামহীন কণ্ঠে বলে ওঠে, "এতো হট, ড্যাশিং একটা ছেলেকে রুমে একা পেয়ে ইজ্জত লুটে নেওয়ার চেষ্টা করিস না আবার। দূরে দূরে থাক একদম।" "সিরিয়াসলি অনিক ভাই? আপনি এই রাতের বেলা আমার রুমে এগুলো বলতে এসেছেন?" "নাহ তো। কে বললো আমি এগুলো বলতে এসেছি? এই তুই কি আজকাল আমার উপর নজরদারি করছিস নাকি?"
পুরো গল্প ভালো লাগলেও শেষটা মনটাকে ভারাক্রান্ত করে দিল তবে সবকিছু তো পরিকল্পনা মাফিক হয় না কিছু পরিকল্পনা লেখিকাও করেন আবার ঈশ্বরও করেন। ছোঁয়াছুঁয়ি গল্পটা সেই রকমই।।💓💖
Read all reviews on the Boitoi app
মূলত পটভূমিটা বেশ ভালো বলেই গল্পটা একটু হলেও ভালো লাগলো । পটভূমিতে প্রেক্ষাপট এবং দৃশ্যপটে সামান্য কিছু গভীরতাও আনার চেষ্টা করা হয়েছে । যা গল্পে সামান্য ভারসাম্য দিয়েছে । চরিত্র গঠন এবং উপস্থিতির দিকে যদিও একটু জোর দেয়া দরকার ছিল । যেহেতু গল্পে গভীরতা আছে কিছুটা, তাই চরিত্র গঠনে এবং আবহের জায়গাতেও সামান্য সাদৃশ্য রাখার জন্য আরেকটু সময় নেয়া যেতে পারতো । প্রতিটি দৃশ্যপটে যেন খুব তাড়াহুড়ো করার একটা ছাপ পাওয়া গিয়েছে । যে ছাপ থাকার কারণে ভালো একটা পটভূমি পেয়েও কাজে লাগানোর ব্যাপারটা কম ছিল । আর এই গল্পে মনোযোগ ধরে রাখার ব্যাপারটাও কঠিন ছিল খুব । এত টাইপিং মিস্টেক থাকলে সাধারণত সেই গল্পে পাঠক মন হিসেবে মনোযোগ রাখা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায় । গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘ঋতু’ নাকি ‘রিতু’ সেটা বুঝতেই যেন সময় চলে গেল খুব । এছাড়াও এত এত বানান ভুল থাকলে সেটা দারুণ অস্বস্তিকর! রেটিংঃ ৩.৫/৫
খুব ভালো লেগেছে এটা পড়ে। ❤️