"এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?" কল্লোল দৃষ্টি না সরিয়ে বেশ সাবলীল স্বরেই উত্তর দিলো, "পরিবেশের সঙ্গে আপনার রূপ বদলায় নাকি? সকালে মনে হলো রোদের মতোই তেজি, আবার নদীর ধারে মনে হলো স্রোতের মতোই উচ্ছল। আর..." "আর কী?" "এখন আপনাকে মনে হচ্ছে চাঁদের মতো উজ্জ্বল, জ্যোৎস্নার মতো মায়াবী।" রিমঝিম স্থানুবৎ হয়ে আছে। এই নির্জন, নয়নাভিরাম, নিকষিত মুহূর্তে এক পুরুষের ভানহীন, অকপট চোখে নিজেকে আবিষ্কার করে ওর চিত্তে উৎকণ্ঠা ছড়িয়েছে। এই লোকের মাঝে কেন যে রাখঢাক নেই! রিমঝিম আরক্ত মুখখানি থমথমে করার চেষ্টা করে বলল, "একা পেয়ে ফ্লার্ট করছেন?" কল্লোল হঠাৎ ওর নিকটে এলো। ক্ষীণ দূরত্বে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে হাওয়ার মতোই ফিসফিসিয়ে বলল, "রিমঝিম, আপনাকে দেখলে বুকের ভেতরটা ঝিমঝিম করে কেন?"
♦ অনুভূতি প্রকাশঃ গল্পের নামঃ চিত্তচারিণী লেখকঃ প্রভা আফরিন পড়ার মাধ্যমঃ বইটই পৃষ্ঠাঃ ৮৮ (নিজস্ব বইটই অনুযায়ী) চিত্তচারিণী ইবুকটা তার নামের অর্থটার মতোই ধারণ করে । যা মনকে ধারণ করে, মুগ্ধ করে । একধরনের আকর্ষণ দেয় । মনকে আকর্ষণ করতে এই পৃথিবীতে ভালোবাসা দরকার । সেটা সম্পর্কের বিশেষণে একেক সম্পর্কের রসায়নে একেক ভাবে আসে । এই গল্পটিতেই সম্পর্কের বিভিন্ন নাম আছে । মানুষ সুখে থাকার জন্য সবসময়ই পাশে কাউকে আশা করে । তা সেরকম মানুষটিই হোক, যার চাহনি দেখলেও মনে বিশ্বাস আসে । সুখ পায় । শান্তি পায় । এই ইবুকের পটভূমিটাও বেশ সাধারণ । সহজ । সেভাবেই পুরো গল্পটা বয়ে গিয়েছে । শব্দচয়ন বেশ ভালো । বৃষ্টি যেভাবে প্রকৃতিতে স্নিগ্ধতা আনার পাশাপাশি মানবমনেও একধরনের অদ্ভুত ভালোলাগা নিয়ে আসে । বিরহ বিরাজ করায় । কিংবা অদ্ভুত সব ধরনের বিশেষণ পৃথিবীতে নিয়ে আসতে সাহায্য করে । এই গল্পটাও যেন বৃষ্টিতে পূর্ণ হয় । বৃষ্টি দিয়েই শেষ হয় । একই ধাঁচে গল্পটা বয়ে গিয়েছে যেন । তবে সময় নিয়ে যখন গল্পের দৃশ্যপটে পরিবর্তন আসে । খানিকটা সময় পরের দৃশ্যপটে জীবনধারা এবং ঘটনাপ্রবাহ ভেসে আসে তখন খানিকটা সময় দেয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল । এক্ষেত্রে ভাষা প্রয়োগ এবং অন্যান্য বিষয়ের দিকেও খেয়াল রাখা জরুরি । ভালো গল্প, কিন্তু আরো ভালো হতে পারতো । সুন্দর সাধারণ এবং বেশ কাছাকাছি থাকা একটা পটভূমির মতো । এই গল্পে মূলত চরিত্র খুবই কম । ছোট একটা গল্পে চরিত্রের গভীরতা তাই কাহিনী এবং জীবনধারার মাধ্যমেই বয়ে গিয়েছে । এই গল্পে ভেসে এসেছে রিমঝিম নামের একজন, যার জীবনটা পাখির মতো । উচ্ছল, প্রাণবন্ত । জীবনে সে সুখ চেয়েছিল । পাশের মানুষদের সুখের দিকে তাকিয়ে শান্তি চেয়েছিল । সবাইকে বোঝার মতো অদ্ভুত এক টান তার মাঝে সবসময়ই যেন বিরাজ করে । তাহমিনা, নিজের সন্তানের মতো মানুষটিকে লালনপালন করে বড় করা মানুষটির একটা সময়ে সংসার হয় । নিজের সংসার । সেই সংসারের সুখের জন্য জীবনযুদ্ধে নিঃশ্বাস নেয়ার কাজটি তিনি ভালো ভাবেই করে যান । এছাড়াও এই গল্পে আছে একজন অসাধারণ বাবা, আলমগীর সাহেব । যিনি নিজের সন্তানের সুখের ছায়ার অদৃশ্য অবয়ব নিজে বুঝতে পেরেছিলেন । এছাড়াও আছে একজন অসাধারণ স্বামী, কল্লোল । যে নিজের স্ত্রীর প্রতিটি মুহূর্ত বোঝার মতো ব্যাপারগুলো দারুণ ভাবে মনে ধারণ করেন । নিজের সম্পর্কের প্রতি দায়িত্ববোধ থাকা মানুষটির গল্পের শেষের দৃষ্টিভঙ্গিটা আমার পছন্দ হয়নি । হঠাৎ করে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম । এই গল্পের লেখক প্রভা আফরিন । বোধহয় এখন পর্যন্ত পড়া লেখকের সবথেকে দুর্বল পটভূমির একটি । সবথেকে দুর্বল পটভূমির প্রেক্ষাপটের গল্পটি আসলে সাজিয়ে তুলতে পারাটাও খুব কঠিন একটা বিষয় ছিল । বৃষ্টি, প্রকৃতির বর্ণনা এবং রংপুরের সৌন্দর্য সাথে পারিবারিক কিছু সম্পর্কের মেলবন্ধন এই গল্পের একমাত্র পাওয়া । গল্পের শেষ মুহূর্তগুলো বাদ দিয়ে তার আগে শেষ করাটাও বোধহয় ভালো কিছু হতে পারতো । রেটিংঃ ৩.৭/৫
Read all reviews on the Boitoi app
কয়েকদিন ধরে কোন কিছুই ভালো লাগছিলো না।বই,ফেইসবুক উপন্যাস এমনকি ইবুকও ভালো লাগছিলো না। মারাত্মক রিডিং ব্লকে আটকে গিয়েছিলাম।। কাল রাতে হঠাৎ করেই কল্লোলের বুক ঝিমঝিম কথাটা মনে হলো।ভাবলাম গল্প টা পড়ি। আপুর পেইজে যখন খুঁজে পেলাম না তখন মনে হলো এটার ইবুক ভার্সন আছে।চট করেই রাত দুইটায় কিনলাম পড়বো বলে।কিন্তু জামাইয়ের ধমকে রাতে আর পড়ার সাহস পায় নি। বিকালে এক বসায় পড়ে শেষ করলাম। আশ্চর্য বিষয় হলো আমার রিডিং ব্লক কেটে গেছে। আপুর লিখা নিয়ে তো কিছু বলার নেই। বরাবরই চমৎকার লিখে।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। অনেক গুলো ভালোবাসা।
বৃষ্টির মিষ্টি সুবাস ছড়ানো একটা গল্প পড়লাম। ঠোঁটকাটা, রাখঢাক ছাড়া কথা বলা পুরুষের চিত্ত জুড়ে বিচরণ করা এক চিত্তচারিণীর গল্প। এক বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় সুদূর রংপুর থেকে এক আগন্তুক এসে উপস্থিত হয় রিমঝিমদের বাড়িতে। সেখান থেকেই গল্পের যাত্রা শুরু। এরপর রংপুরে বেড়াতে যাওয়া, এক মেঘমেদুর সময়ে দুজনের মনের রাস্তা হারানো, এরপর মান অভিমান ও পূর্ণতা। গল্পের মাঝে রংপুরের ঐতিহ্যবাহী সিদল, শোলকা ও হাড়িভাঙা আমের নামও উঠে এসেছে। আবার এসেছে সামাজিক সচেতনতামূলক এক বিষয় যেটা এখন মেয়েদের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। ★কল্লোলের মতো দায়িত্বশীল প্রেমিক পুরুষরাই আসলে পুরুষ জাতীর গৌরব হয়ে ওঠে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা ভালোবাসার মানুষকে আগলে রাখতে জানে। ওর ভালোবাসা আমায় মুগ্ধ করেছে। আদর্শ স্বামী, আদর্শ প্রেমিক। ★রিমঝিমও ভীষণ সুন্দর মনের মানুষ। বাবা, খালার সঙ্গে ওর খুঁনসুটি সবটাই মনে লাগার মতো। কিছু কিছু মুহূর্তে আবেগপ্রবণ হয়ে গেছিলাম। সব মিলিয়ে গল্পটা ভীষণ ভালো লেগেছে। বৃষ্টি দিনে বৃষ্টি নিয়ে লেখা গল্প পড়ার মজাই আলাদা। আর প্রভা আপুর লেখা হলে তো কথাই নেই। সুন্দর সময় কাটলো গল্পটার সাথে।
অসম্ভব ভালো লেগেছে আপু। আপনার লেখা বরাবরই আমার ভিষণ পছন্দের।🥰
চমৎকার একটি ই-বুক।