"তীর!" আবারো সেই ডাক। যেই ডাক শুনে তীরের সারা অঙ্গপতঙ্গ কেঁপে উঠে। শ্বাস ঘন হয়ে আসছে, বুকের কাঁপনও বেড়ে যাচ্ছে, সারা শরীরের অদ্ভুত এক শিহরণ বয়ে যাচ্ছে। কথা না বলতে চাওয়া সত্ত্বেও অস্পষ্ট স্বরে বলে উঠে। "হু!" "তাকা আমার দিকে।" তীর তাকায় না চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। এ কোন পাগলের পালায় পড়লো আগে তো এমন করতো না তাহলে আজকে কেন এই লোক এমন করছে? তবে কি ইশার কথাই সত্যি। না আর ভাবতে পারছে না তীর পালাতে হবে এই লোকের কাছ থেকে না হলে একটা অঘটন ঘটে যাবে কিন্তু পালাবে কি করে ইশান যেভাবে সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ইশানের কন্ঠ পুনরায় শুনা যায়। "কি হলো? তাকা আমার দিকে।" তীর মিনমিন করে বলে, "কেন?" "একটু আগে তো আড় চোখে আমাকে দেখছিলি। তাই এখন সরাসরি দেখ তোর চোখের কষ্ট কম হবে। তুই আমার দিকে না তাকানো পর্যন্ত কিন্তু এখান থেকে এক পাও নড়তে পারবি না।" তীর হাঁসফাঁস করছে। দু হাত সমান তালে কচলিয়ে যাচ্ছে। নাহ এখানে আর বেশিক্ষণ থাকা যাবে না তাই তীর যেই দৌঁড় দিতে যাবে ওমনি খপ করে হাত ধরে ফেলে ইশান। "আগে আমার দিকে তাকাবি তার পর যাবি এখানে থেকে, নে তাকা আমার দিকে আমার চোখের দিকে তাকা। যত তাড়াতাড়ি তাকাবি আমার দিকে তত তাড়াতাড়ি এখান থেকে যেতে পারবি।" তীর চোখ বন্ধ করে রেখেছে কি করবে ভেবে উঠতে পারছে না। ইশান ধৈর্য হারা হয়ে নিজেই তীরের চিবুক ধরে মুখটা উঁচু করে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে নেশালো কন্ঠে বলে। "তাকা তীর একবার তাকা শুধু একবার তাকা আমার দিকে।" তীর এবার নিজের চোখের পাতা মেলে তাকায়। মেলে তাকাতেই দুজনের চোখ এক সাথে মিলিত হয়। ইশানের চোখে মুখে ফুটে আছে একরাশ মুগ্ধতা, চোখে মুখে অন্যরকম এক মাদকতাও প্রকাশ পাচ্ছে ইশানের। তীরের ছোট মনটা কেঁপে উঠলো, অন্তরে দোলা দেয় প্রণয়ের হাওয়া, তীর নিচের ঠোঁট জিভ দিয়ে ভিজিয়ে নেয়। আর তাকিয়ে থাকতে পারছে না ইশানের এই চোখের দিকে। ইশানের হাত এক ঝটকায় ছাড়িয়ে নিয়ে দ্রুত পায়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে যায়। ইশানের মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠে। এবার হয়তো তার অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে এটা ভাবতেই বুকের মাঝে অদ্ভুত এক প্রশান্তি কাজ করছে।