ইসলাম মানবজাতিকে দারিদ্র্যের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত করে একটি সুখী, সমৃদ্ধ এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে চায়। যদি কোনো ব্যক্তি তার মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে সে সহজেই অনৈতিকতার শিকার হতে পারে বা শোষণের ফাঁদে পড়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় তাকে শান্তি ও কল্যাণের ইসলামের বাণী শোনালেও তেমন ফলপ্রসূ হয় না। তাই, দারিদ্র্য ইসলামি জীবনের সহায়ক নয়; বরং তা ইসলামের অগ্রযাত্রার একটি বড় বাধা। বর্তমান যুগে দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য নানা কর্মসূচি এবং উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে, বাস্তবতা হলো—দারিদ্র্য কমার বদলে দিন দিন তা আরও বাড়ছে। আধুনিক পশ্চিমা অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পদকে কিছু মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত করেছে, আর একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নতির পরও এই সমস্যা সমাধানে বর্তমান সভ্যতা ব্যর্থ হয়েছে। অথচ চৌদ্দশ বছর আগেই ইসলাম এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সফল হয়েছিল। ইসলামের খিলাফতের যুগে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল যে জাকাত গ্রহণের মতো দারিদ্র্যপীড়িত মানুষ খুঁজে পাওয়া যায়নি! কীভাবে এটি সম্ভব হয়েছিল? আসলে, দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য ইসলামের নিজস্ব কিছু সুনির্দিষ্ট নীতি ও পরিকল্পনা রয়েছে। জাকাত, সদকা, ইনসাফভিত্তিক সম্পদ বণ্টনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ ইসলামের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে ইসলামের এই কর্মসূচি ও পরিকল্পনাগুলো বিশদভাবে আলোচনা করলে বোঝা যায়, একটি ন্যায়ভিত্তিক ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে ইসলাম কতটা কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে।