“আচ্ছা আপনাকে যদি মানুষ ব্যতীত অন্য কোনো প্রাণী হয়ে আবারও পৃথিবীর বুকে জন্ম নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তবে আপনি কোন প্রাণী হয়ে জন্ম নিতে চাইবেন?” বর্ষণ পাশ ফিরে তাকাল প্রিয়ার দিকে। চোখে চোখ রেখে জবাব দিল, “কাক।” প্রিয়া অবাক হলো। কাককে আমরা সর্বদা একটি নোংরা কুৎসিত প্রাণী হিসেবেই চিনি। সারাদিন যার কাজ থাকে শুধু নোংরা ময়লা আবর্জনা ঘাঁটাঘাঁটি করা। গায়ের রংটাও কালো, কণ্ঠস্বর কর্কশ। বাড়িতে বা আশেপাশে ডাকাডাকি করলে তাড়িয়ে দেই, ঢিল ছুড়ি। কারো এমন একটি প্রাণী হওয়ারও ইচ্ছে থাকতে পারে জানা ছিল না তো। প্রিয়া কিছুটা অবাক স্বরেই শুধাল, “এত প্রাণী থাকতে কাক হওয়ার ইচ্ছে কেন আপনার?” “শুনেছি কাকেরা নাকি তার সঙ্গীর প্রতি ভীষণ আসক্ত থাকে। সঙ্গীর মৃত্যু হলে তারা আর দ্বিতীয়বার জোড় বাঁধে না। নিজের বাকিটা জীবন কাটিয়ে দেয় একাকী নিঃসঙ্গ। তবুও তাকে ব্যতীত আর অন্য কারো মায়ায় ঘর বাঁধে না।” থামল বর্ষণ। দম ফেলে শীতল কণ্ঠে ফের বলল, “আবারও সুযোগ পেলে এই পৃথিবীর বুকে আমি কাক হয়ে ফিরে আসতে চাই। নিজের ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে বিশাল এই প্রকৃতির বুকে ডানা মেলে দাপিয়ে বেড়াতে চাই। দু’জন শুধু দু’জনের জন্য বাঁচতে চাই। তারপর দিন শেষে যখন সে হারিয়ে যাবে আমি তার স্মৃতি আঁকড়ে ধরে তার মায়ায় নিজের জীবনের অন্তিম প্রহর পর্যন্ত গুনতে চাই। তবুও দ্বিতীয়বার আর অন্য কারো মায়ায় নিজেকে বিলিয়ে নিঃশেষ হতে চাই না।”