তৈয়ব মাওলানা আর আব্দুর রব বাল্যকালের বন্ধু। দুই বন্ধুর দীর্ঘদিনের ইচ্ছে, তারা আত্মীয় হবেন। তাদের ছেলেমেয়েদের মাধ্যমে আত্মীয়তার মনোবাসনা থাকলেও তা পূর্ণ হয়নি। ফলশ্রুতিতে, তাদের নাতি-নাতনিদের মাধ্যমে নিজেদের ইচ্ছে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে শায়লা আর রিদওয়ানের বিয়ে হয়। সহজ সরল মাকে ঠকিয়ে ডাক্তার বাবা যখন অন্যত্র ঘর বাঁধলো, তখন থেকে ডাক্তার পুরুষ শায়লার চোখের বিষ। অথচ সেই তাকেই কিনা বিয়ে করতে একজন ডাক্তারকে! অপরদিকে, অবস্থাপন্ন পরিবারের রিদওয়ানের হৃদয়েও দগদগে ঘা। তবুও, দাদুর ইচ্ছেপূরণে বিয়ে করে। মন থেকে মানতে না চাইলেও, নিয়তির লিখন ভেবে বিয়েটা মেনে নেয় সে। শায়লা ও তার পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু শায়লা বারবার তাকে ভুল বোঝে। রিদওয়ান ভেবে পায় না, শায়লা তাকে ভুল বোঝে নাকি বোঝানো হয়? কে চায় না তারা দু'জন একসাথে থাকুক? বাধ্য হয়ে শায়লার কথা ভেবেই রিদওয়ান একসময় নিজেকে দূরে সরিয়ে নিতে চাইলেও, সেখানে ঘটে বিপত্তি। দাদুদের ইচ্ছার মান রাখতে বিয়েটা করলেও, আদৌ কি সংসারটা করতে পেরেছিল শায়লা আর রিদওয়ান? কি পরিণতি হয়েছিল তাদের দাম্পত্য? তাদের ঘিরে থাকা মানুষগুলোর জীবনই বা কেমন যাচ্ছে? এরই মাঝে শায়লা আর রিদওয়ানের গল্প। তাদের ঘিরে থাকা মানুষের ভালো থাকা না থাকার গল্প।
এরই মাঝে উপন্যাসটি হৃদয়ের গভীরে খুব ভীষণভাবে দাগ কেটে গেছে। এই উপন্যাসটি পড়তে যে কখনো হেসেছি কখনো রাগান্বিত হয়েছি কখনো শায়লার মতো চোখ দুটি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল কিছুই পড়তে পারতেছিলাম না। শায়লার কষ্টটাকে খুব গভীরভাবে ফিল করতে পেরেছি সেই সাথে রিদওয়ানের অপরিসীম ধৈর্য শক্তি দেখে আশ্চর্য হয়েছি।
Read all reviews on the Boitoi app
শায়লা আর রিদওয়ানের বিবাহিত জীবনের টানাপোড়েন আর ভালবাসার অসাধারণ গল্প, খুব ভালো লাগলো।
ফেইস বুকে খুব আগ্রহ নিয়ে লেখাটা পড়েছি।এত সুন্দর ভাবে গল্পটা এগিয়েছি যা আমাকে চম্বুকের মত টেনে রেখেছিলো।ই বুক আসার সাথে সাথে কিনে নিজের সংগ্রহে রেখে দিয়েছি।যখন খুশি পড়তে পারবো।অসাধারণ ছিলো।
দাম্পত্য সে কি ইচ্ছে ঘুড়ি যে তাকে বাসবে ভালো তার আকাশেই উড়ি! বইটা পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে দাম্পত্যের বিকাশে সবচেয়ে বেশি কি প্রয়োজন?একটি চারাগাছকে বৈরি পরিবেশে রোপণ করলে অভিযোজিত হতে তার প্রয়োজন স্নেহ,ভালোবাসার মিশেলে এক অনুভূতি। তেমনি দাম্পত্যকে লালন করতে চাইলে প্রয়োজন স্নেহ, ধৈর্য্য, সহানুভূতি। বিয়েটা দুই জনের হলেও তাতে দুটি পরিবার যুক্ত হয়। বিয়ে দুটি মানুষের এক অপরের এক সাথে চলার জন্য সমাজ স্বীকৃত উপায়।কিন্তু এই বিয়ে নামক প্রহসনে কেউ বা হারিয়ে ফেলে আপন স্বত্তা।Child psychology তে বাবা মায়ের দাম্পত্যে ভয়াবহ প্রভাব রয়েছে।বাবা মায়ের মধ্যে যদি সুখী দাম্পত্য থাকে সেই পরিবারের সন্তানেরা হয় আত্ববিশ্বাসী আর Broken Family র সন্তানেরা বেড়ে ওঠে একরাশ কষ্ট নিয়ে, হতাশা নিয়ে।আত্ববিশ্বাসের অভাব তাদের জীবনের পরবর্তী সম্পর্ক গুলো নিয়ে দোটানায় থাকে।নিজের অস্তিত্বের লড়াইয়ে নিজেরাই নিজেকে নিয়ে দ্বিধায় বাস করে।সঙ্গি যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে,তাই তো বিয়েতে তীব্র ভয় কাজ করে।তখন প্রয়োজন একটু স্নেহের,একটু মায়ার।মায়ার হাত বাড়িয়ে প্রিয় জনকে কাছে টেনে নেয়ার। দাম্পত্য আমার কাছে আকাশে উড়ে চলা মুক্ত বিহঙ্গের মতো।আকাশ তার বিশালতায় ঠাঁই দিবে তার উড়ন্ত গাঙচিলকে।উড়ন্ত গাঙচিল শান্তি খুঁজে পাবে আকাশের সফেদ মেঘের ভেলায়।আর আকাশ তার বিশালতায় আলিঙ্গন করবে তার প্রিয়জনকে। যে দাম্পত্যে বিহঙ্গরূপী সঙ্গীর ইচ্ছে,স্বাধীনতা,স্বপ্নকে নষ্ট করে স্বর্ণের খাঁচায় পুড়ে ফেলা হয় তা আমার মতে জেলখানা হয়, আপন নীঁড় নয়।
ফারহানা আপুর লেখা "এরই মাঝে" গল্পটি বাবা- মায়ের বিচ্ছেদ সম্তানের ছোট মনে কি দারুণ ক্ষত তৈরী করে তা দারুণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন চমৎকার শব্দ শৈলীর মাধ্যমে।গল্পের নায়িকা শায়লা র ডাক্তার বাবা মুকুলের তার সহজ, সরল মা রুবিনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা তার ছোট মনে ডাক্তারদের প্রতি প্রবল বিতৃষ্ণা তৈরী করেছিলো সেটা তার নিজের জীবনেও কতটুকু প্রভাব ফেলেছে-গল্পের পুরোটা জুড়ে তার চিত্র লেখিকা চমৎকার শব্দ শৈলীর গাঁথুনি তে তা তুলে ধরেছেন। শায়লার দাদাজান মাওলানা তৈয়বুর রহমানের চরিত্র দারুণ ভাবে মনে দাগ কেটেছে। মুকুলের করা অন্যায়কে তিনি প্রশ্রয় না দিয়ে তাকে পরিবারচ্যুত করলেন ছেলের বউ রুবিনাকে মেয়ে বানিয়ে রেখে দিলেন নিজের কাছে। সৎ চিন্তা ধারার মানুষ তৈয়বুর রহমানের কাছে অন্যায় সে যেই করুক সেটা অন্যায়। "এরই মাঝে"পুরো গল্পটি দুইটি পরিবার কে কেন্দ্র করেই লেখা। দুইটি পরিবারের প্রতিটি সদস্যদের চিন্তাধারা, মন মানসিকতা, তাদের কৃত ভালো খারাপ কাজের চিত্র আপু এত সুন্দর করে লিখেছেন পড়তে পড়তে মনে হলো এটা তো গল্প না আমাদের আশেপাশের ঘরে ঘরে ঘটা চিত্র চোখের সামনে ভেসে উঠলো কল্পনায়। শায়লার মনের ভীতি,তার ছোটছোট ঘটনায় কুঁকড়ে যাওয়া, কষ্ট পেয়ে ও তা নিজের মধ্যে লুকিয়ে রাখা তার মনোজগতে কতটুকু প্রভাব ফেলেছে সেটা পাঠকদের জন্য চমৎকার ভাবে তুলে ধরেছেন আপু। রিদওয়ানের চমৎকার সহনশীলতা, দায়িত্ববোধ,শায়লাকে প্রতিটি কাজে সাপোর্ট দেয়া দারুণভাবে মুগ্ধ করেছে আপু। ফারহানা আপু আপনার লেখা পড়ে আমি বরাবরই আবেগাপ্লুত হই। " এরই মাঝে" গল্পেটি পড়ে আবারো আবেগাপ্লুত হলাম আপু। অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো আপু❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️
ফেসবুকে আমার অন্যতম প্রিয় ধারাবাহিক ছিল এই গল্পটা। খুবই আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করে ছিলাম আপু কবে এটিকে বই আকারে নিয়ে আসবেন। আসার সাথে সাথে পড়ে ফেললাম আর মনে হলো এটাকে আপু আরো সুন্দর করে গুছিয়ে প্রকাশ করেছেন। ফেসবুকে প্রকাশের সময় কিছু গ্যাপ ছিল সেগুলো পূরণ হয়েছে। কিছু জায়গায় পড়ার সময়ে মনে হত আরেকটু ডিটেইল থাকলে ভালো হতো, সেটা বইতে সুন্দর করে করা হয়েছে। পড়তে পড়তে আবার মনে হল জাকিয়া কখনও ছানা আছে এরকম হাঁস বা মুরগির তাড়া খায়নি তাই রুবিনাকে ঘাটাতে গিয়েছিলো 😂 এই অংশের পুনঃলিখন আগের থেকেও উপভোগ্য ছিল। অন্য সব অপূর্ণ চরিত্রদের পূর্ণতা দেওয়া হয়েছে যা পড়তে বেশ আরাম দিয়েছে। সর্বপরি সুখপাঠ্য একটি বই ❤️
ফেসবুকে পড়া প্রিয় গল্প গুলোর একটি। ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তানদের মনোস্তাত্ত্বিক বিকাশ ঠিক কতোটা ব্যঘাত ঘটে তার চমৎকার বর্ণনা এই গল্পে ফুটে উঠেছে। মানব মন বড়ো বিচিত্র আর তার চাহিদা ও ব্যাপক.... গল্পটি যদিও শায়লা আর রিদওয়ানের তবুও বোকা মন রুবিনা আর মুকুল এর সম্পর্কের সমীকরণ জানতে ব্যাকুল ছিলো। মরে যাওয়া গাছ যেমন পূনর্জীবিত হয় না তেমন লেখিকা গল্পে একদম স্পষ্ট বলেছেন হেলায় ফেলে আসা সম্পর্ক গুলোর কাছে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। মন চেয়েছিলো অন্ততঃ একটি বার মুকুল নিজের কৃতকর্মের জন্য রুবিনার মুখোমুখি হোক। কি অবলীলায় একজন ব্যক্তি তার স্ত্রী, সন্তানদের ফেলে যেতে পারে... নিজের মোহ কে প্রাধান্য দেয়....নিজের আলাদা জগৎ সাজায়....যার জন্য চারটি জীবন কষ্টের কালো আধারে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে কতো সহজ ভাবে সে তার নতুন জীবনে সুখী হতে চায়🥺চমৎকার এই গল্পটি জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ফারহানা ইয়াসমিন আপু....
বইটি আমি fb তেই পড়েছিলাম তাই এখানে ডাউনলোড করে আগেই 5 স্টার দিয়ে দিলাম। মাঝে মাঝে shaila র উপরে খুব বিরক্ত লাগতো, ridwan এর ধৈর্য দেখে অবাক হতাম আর ridwan এর মায়ের উপর খুব রাগ হতো। তবে সব শেষে ফারহানা ইয়াসমিন এর অন্য গল্প গুলোর মতো এটা ও আমার খুব পছন্দের গল্প। ❤️