গল্পটি একটি অভিশপ্ত রাজকন্যার। এক ভোরে হুট করেই তার জীবনে নেমে আসে কালো মেঘের অমানিশা। তারপর একে একে হারিয়ে ফেলে সকল অবলম্বন। জীবনযুদ্ধে হোঁচট খেতে খেতে একসময় সে নিজেই নিজের অবলম্বন হয়ে ওঠে। কিন্তু অভিশাপ তার পিছু ছাড়ে না। এমনই বিপর্যস্ত মুহূর্তে রাজকন্যার সাক্ষাৎ ঘটে এক রাজপুত্রের সঙ্গে। তৈরি হয় হৃদয়ের রসায়ন। কিন্তু রাজকন্যার মেঘে ঢাকা অন্তরে রাজপুত্রের বৃষ্টির গান পৌঁছাতে পারে না। রাজপুত্র কি পারবে রাজকন্যার জীবনের অভিশপ্ত মেঘগুলো বিতাড়িত করে বৃষ্টি নামাতে?
♦ অনুভূতি প্রকাশঃ গল্পের নামঃ মেঘের কোলে বৃষ্টির গান লেখকঃ প্রভা আফরিন পড়ার মাধ্যমঃ বইটই পৃষ্ঠাঃ ২০৪ (নিজস্ব বইটই অনুযায়ী) শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে, পড়ুক ঝরে তোমারই সুরটি আমার মুখের পরে, বুকের পরে । কেনো যেন এই ইবুকটা পড়ার পরে হঠাৎ করেই আমার এই গানটার কথা মনে পড়ে গেল । জীবনের যত দুঃখ, কষ্ট, সব বেদনার অনুভূতি জীবন থেকে ঝরে পড়ার মতো করে যেন একটা সময়ে দূর হয়ে যায় । অপেক্ষা জীবনকে সার্থক করে । কখনও সুখী করে । কখনোবা বড্ড আলগোছে মিষ্টি শাসন দেয় । সাধারণত যে লেখাগুলো পড়ার পরেই গান শোনার মতো আবহ তৈরি হওয়ার মতো জায়গা তৈরি হতে পারে, সেই লেখাগুলো নিয়ে আসলে এক ধরনের ভালো লাগা কাজ করে । পাঠক হিসেবে তৃপ্তি কাজ করে । এই ইবুকটি একজন নারীর জীবনে ঘুম ভেঙে যাওয়া এক সকালের আলোতে মেঘ করে অন্ধকার হয়ে যাওয়া পৃথিবীতে নিজের ছায়া দেখতে পাওয়ার জন্য মেঘ কাটানোর আখ্যান । যা বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ার আলোড়ন নিয়ে এসেছিল । যে নারীটি নিজ পরিবার নিয়ে সুখী হতে চেয়েছিল । যে মানুষটি নিজের সন্তান এবং পরিবার নিয়ে ভালো থাকতে চেয়েছিলেন । মিশ্রিত ঘরানার এই ইবুকটিতে আসলে সবই আছে । আবার বলতে গেলে পুরোপুরি কোনোটাই নেই । থ্রিলারের রহস্য আছে, সেখানে এক ধরনের ছোঁয়ার মতো জড়তা আছে । কিন্তু সেই জড়তাতেই কোথাও যেন হাস্যরসের দেখা পাওয়া যায় । ভালোবাসা নামক আবহ এবং প্রেক্ষাপটে হঠাৎ করে এই গল্পে কখনও রহস্য তৈরি হয় । কখনও চোখের পলকে একরাশ হতাশা তৈরি হয় । দুঃখ তৈরি হয় । এই ইবুকটা একদিক থেকে বিভিন্ন বিশেষণকে ব্যস্ততা না দেখিয়ে গড়ে নেয়ারও । যেভাবে ইবুকের গল্পের ডালপালা ছড়িয়ে প্রেক্ষাপট তৈরি করা হয়েছে তা বেশ ভালো । একের পর এক ঘটনা ভেসে এসেছে তাও ভালো । এই ইবুকের চরিত্র গঠন নিয়ে দারুণ একটা ব্যাপার আছে । প্রতিটি চরিত্র, যার উপস্থিতি এবং গঠন খুব কম সময়ে, আবার যার উপস্থিতি ইবুকে ভারসাম্য এনেছে প্রতিটি চরিত্রের মধ্যে এক ধরনের অদ্ভুত গভীরতা তৈরি হয়েছে । যদিও এটা গল্পের মাঝে রহস্য তৈরিতে বেশ সুন্দর ভাবে কাজ করেছে । অনন্যা, তার পৃথিবীকে ঘিরে ধরে রাখা এই অনন্যা নিজের নামেই মতোই যেন । মেয়েটি অদ্ভুত সাহসী এবং ধৈর্য ধরে রাখতে জানে বেশ । বুদ্ধিমত্তা, সময়ের জন্য জীবনকে ছেড়ে দেয়ার এক ধরনের আহ্বানে কোথাও তার উদাসীন মুহূর্ত আসে । কিন্তু কাটিয়ে নিতে পারে সে । শুভ্রা, এই চরিত্রটি তার কয়েকটি সংলাপ এবং অদৃশ্য উপস্থিতি দিয়েই যেন জীবনে এক ধরনের গভীরতা এনে দিয়ে গিয়েছেন । আদনানের জীবনের অসহায় পরিস্থিতি, মানিয়ে চলতে গিয়েও নিজেকে হারিয়ে ফেলার চেষ্টা তাকে কোথাও একটা ভাসিয়ে নিয়ে যায় । এছাড়াও রাশেদ চরিত্রটির মধ্যেও অদ্ভুত এক গভীরতা । মানুষটি হঠাৎ করে কোন কারণের জন্য শান্ত হয়ে গিয়েছিলেন । এই পৃথিবীতে অন্ধকার, মেঘের আচ্ছন্ন হয়ে যাওয়া কালো সন্ধ্যা সন্ধ্যা ভাবের সকালটাকে দূর করে মন বিলাসী রাজকন্যাকে জীবনের সুখ দিতে একজন এগিয়ে এসেছিলেন । যার দায়িত্বের প্রতি অদ্ভুত চেষ্টা তাকে মুগ্ধ করায় । ভালোবাসার প্রতি অদ্ভুত জোর, মানুষটির নাম শাহনেওয়াজ শিকদার শ্রাবণ । নিজের পরিবারের ভগ্নদশা সবসময়ে মানিয়ে নিতে না পারা মানুষটি কখনও দুর্বল হয়ে পড়ে, কখনও নিজের কাঁধে অদৃশ্যে ডানা যোগ হওয়ায় উড়তে না পারার দুর্বলতা কুঁড়ে কুঁড়ে খায় তুষার এর । যখন আসে বন্ধুত্বের প্রসঙ্গ, ইতু যেন পুরোটা জুড়ে বসে । এছাড়াও পিয়াসা এর অদ্ভুত ধ্যানধারণা, উচ্চাভিলাষী জীবন তাকে অন্য এক মোড়ে নিয়ে যায় । যেখানে রহস্য আছে, জীবনের ক্ষোভ আছে । স্বামীকে পাওয়া না পাওয়ার চেষ্টা এবং বেদনা এসে জড়ো হয় । এছাড়াও আছেন ইকরাম নামের একজন যুবক, যিনি নিজের সম্মান এবং ভালোবাসার প্রতি তৎপর । আছেন ইসহাক সাহেব এর মতো একজন, যিনি নিজের দূরদর্শিতা, অসাধারণ মনোভাব দিয়ে একটি সংসারকে ধরে রাখেন । এছাড়াও আছে জামশেদ, যিনি পরিস্থিতি অনুযায়ী কখনও হাস্যরস তৈরি করতে পারেন । এভাবেই আরো কতগুলো চরিত্র আসে । নিজ নিজ উপস্থিতিতে গল্পের প্রয়োজনেই কখনও ভেসে বেড়ায় । কখনোবা আবছায়া অনুভবে তাকিয়ে থেকে হেসে বেড়ায় । অদ্ভুত মিশ্র ঘরানার এই ইবুকটিতে তাই ভালো লাগার জন্য অনেকগুলো উপাদান আছে । পটভূমিতে দারুণ একটা বিষয় রাখা হয়েছে । সামাজিক প্রেক্ষাপটে মূলত উপন্যাসটি গড়ে উঠলেও এখানে রোমান্টিক আবছায়া ভেসে এসেছে । তবে গল্পের প্রয়োজনে এটাকে মূলত থ্রিলারধর্মী রহস্য গল্পই বলা যেতে পারে । তা যেভাবে সাজানো হয়েছে, যেভাবে রহস্যগুলো ঘণীভূত হয়ে জমজমাট একটা সময় তৈরি করা হয়েছে একটুখানি ধোঁয়াশা রাখার চেষ্টা করা হয়েছে তা বেশ ভালো । মূলত রহস্য উন্মোচন এর এটাই একটা বড় ধাপ । যেখানে প্রথমদিকে টের পাওয়া গেলেই তা গল্পের মাঝে উত্তেজনার পূর্ণতা পাওয়া যেতো না । সেদিক থেকে এই গল্পটা পুরোপুরি অসাধারণ ছিল । তবে এই ইবুকের জলছাপের দিকে কাজ করা জরুরি ছিল । দৃশ্যপট পরিবর্তনে একটু ফাঁকা জায়গা দেয়া জরুরি ছিল । যেহেতু রহস্য আছে, ফাঁকা জায়গা রেখে বা পর্ব ভিত্তিক নম্বর দেয়া আছে, সেক্ষেত্রে এখানেও কাজ করা যেতে পারতো । বিশেষ করে গল্পের শেষদিকে দৃশ্যপট এবং জলছাপ পরিবর্তনের দিকে কাজ করাটা বেশ জরুরি ছিল । দৃশ্যপটে এক দৃশ্য থেকে অন্য দৃশ্যের আসা, কিংবা একটু আগের অতীতে ঘটে যাওয়া দৃশ্যগুলো বর্তমানে বর্ণনা করার ব্যাপারগুলোতে ফাঁকা জায়গা রাখা খুবই জরুরি ছিল । আর কিছু কিছু জায়গায় বাক্য গঠনে কখনও কখনও শব্দহীনতা দেখা গিয়েছে । এগুলো না থাকলে এটা অসাধারণ ধরনের পটভূমিতে একটা ইবুক বলে মনে করা যায় । যেকোনো ধরনের পটভূমিতেই নিজের লিখনশৈলীর মাধুর্য ফুটিয়ে তোলার এক অসাধারণ দক্ষতা লেখক প্রভা আফরিন এর আছে বলেই, তার লেখাগুলো দূর থেকে চোখে পড়লেও যেন টের পাওয়া যায় এটা তার লেখা । এই অদ্ভুত, অসাধারণ এক বিষয় পড়ার সময়ে তাই মুগ্ধতা আনে । বেশ অন্যরকম একটি ইবুক পড়তে পড়তে তাই মুগ্ধ হতেই হলো । রেটিংঃ ৪.৬/৫
Read all reviews on the Boitoi app
অনেকদিন পর সুন্দর একটা ই-বুক পড়লাম💖
চমৎকার একটা গল্প পড়লাম।
চমৎকার একটা গল্প
কিছু কিছু গল্প পাঠক সত্তাকে হাইলি স্যাটিসফাইড করে। মেঘের কোলে বৃষ্টির গানও আমার জন্য তেমনই একটা সুখপাঠ্য গল্প। একটা বিষাদময় যাত্রার মধ্য দিয়ে গল্পটা পড়তে শুরু করেছিলাম। প্রথম পরিচ্ছেদের ঘটনাগুলো এতই ভারাক্রান্ত ছিল যে ভেবেছিলাম দুঃখে দুঃখেই বেলা বয়ে যাবে। কিন্তু না, এই গল্পের মূল আকর্ষণ তখনও বাকি ছিল। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের মধ্যে দিয়েই যেন টানটান উত্তেজনা শুরু হয়। শ্রাবণ ও জামশেদের কেইস স্টাডিতে আমি মুগ্ধ হয়েছি। গল্পের মূল চরিত্র অনন্যাকে একজন বিপদময়ী বলা যায়। দুনিয়ার সব বিপদ তার দিকেই ধেয়ে আসে। কিন্তু সে ভীষণ স্ট্রং একজন নারী। যেকোনো পরিস্থিতিই সহ্য করতে পেরেছে। মাথা ঠান্ডা রেখেছে। আর তার জন্য একজন স্ট্রং রাজপুত্র ছিল যে ভীষণ বুদ্ধিমান আবার রসিক পুরুষও। প্রেম ও রসিকতায় যেমন মজা পেয়েছি তেমন তদন্তের তৎপরতায়ও উদ্বিগ্ন হয়েছি। দুঃখগুলো খুব সুক্ষ্ম আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলতে জানে লেখিকা। আর সবচেয়ে বড় কথা উপন্যাসে একটা বাস্তবতার প্রতিফলন আছে। বর্তমান সমাজের বেশ কিছু কদর্য ঘটনাই উপন্যাসের সঙ্গে মিলে যাবে। সব মিলিয়ে মেঘের কোলে বৃষ্টির গান আমার জন্য একটা রোমাঞ্চকর যাত্রা ছিল। সবশেষে একটাই আফসোস, এই গল্পটা আরো বড় করে বইতে পেলে বোধহয় বেশি ভালো হতো। এমন সুন্দর একটা প্লট মলাট বইয়ের পাতায় ঠাঁই পাওয়া ডিজার্ভ করে।
অসম্ভব সুন্দর হয়েছে ইবুকটা।প্রভা আপুর লেখা অসাধারণ ❤️
গ্রীষ্মের দুপুরে মন ছুঁয়ে যাওয়া এই ইবুকটি পড়তে পড়তে মনে হয়েছে যেন মেঘের কোলে সত্যিই বৃষ্টির গান বাজছে। গল্পের গতি, সংলাপ আর চরিত্রগুলোর আবেগ এতটাই জীবন্ত যে পাঠ শেষে কিছুটা শূন্যতা অনুভব হয়। বিশেষ করে অনন্যার সংগ্রাম আর শ্রাবণের সংযত রসবোধ মুগ্ধ করেছে। ক্রাইম রিপোর্টার হিসেবে অনুর যাত্রা বা ওদের বিবাহিত জীবনের একটু ঝলক পেলে আরও ভালো লাগত। শেষেটায় আদনানের কিছু ঝলক আশা করেছিলাম। বই আকারে এলে হয়তো গল্পটা আরও বিস্তৃতভাবে উপভোগ করা যেত। তবুও, এই ইবুকটি নিঃসন্দেহে পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়ার মতো।
অনেকদিন পরে এতো চমৎকার একটা ই-বুক পড়লাম। প্রথমে আর পাঁচটা সাধারণ গল্পের মতোই মনে হয়েছিলো কিন্তু যতই সামনে আগালাম ততই আমি যেন গল্পের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছিলাম । উফফ! টানটান উত্তেজনা কাজ করছিল গল্পটা পড়বার সময়। আমি এক বসাতেই শেষ করেছি গল্পটা কারণ আমি পুরোপুরি গল্পের মধ্যে হারিয়ে গেছিলাম। উফফ! কি অসাধারণ লেখনী প্রভা তোমার। গল্পের প্রতিটা চরিত্র কি সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছো মেয়ে। আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি তোমার লেখনীর উপর। আমার গল্পটা পড়তে গিয়ে ঘোর লেগে গেছে। এই গল্পটা অবশ্যই বইয়ের পাতায় আসার যোগ্যতা রাখে। তোমার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা আর দোয়া রইল বোনু। আমাদেরকে আগামীতে আরো চমৎকার লেখনী উপহার দিতে পারো সেই আশায় রইলাম। ভালোবাসা অফুরন্ত মিষ্টি মেয়ে।
সামাজিক, রোমান্টিক, ক্রাইম, থ্রিলার, সাসপেন্স কি নাই এই গল্পে! সব ভরপুর। একবারে পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখবে পুরোটা সময় এমন গল্প। একের ভিতর সব। পড়া শেষে মনটা তৃপ্তিতে ভরে উঠবে।
দারুণ লাগলো শ্রাবন আর অনন্যাকে। থ্রিল আর রহস্য ছিলো যা একদিনে পড়ে ফেলতে বাধ্য করেছে। প্রভা আপু বরাবরের মতোই অসাধারণ সুন্দর লিখেছে।