আমাদের মতো এই মরণশীল জীবের অবস্থা কী বিচিত্র! এই ধরাতলে অত্যন্ত সীমিত সময়ের জন্য আমাদের আগমন। কেন যে মানুষ এ পৃথিবীতে আসে, তা সে জানে না; যদিও সময় সময় এই কারণ অনুভব করেছে বলে সে ভাবে। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টির খুব গভীর দেশে না গিয়েই বলা যায় যে, আমাদের অস্তিত্ব আমাদের সাথীদের জন্য। প্রথমত, যাদের মুখের হাসি ও কল্যাণ ভাবনার ওপর আমাদের সুখশান্তি নির্ভর করে এবং দ্বিতীয়ত, আমাদের অপরিচিত যে সব শত সহস্র ব্যক্তির ভাগ্যের সঙ্গে সমবেদনাসূত্রে আমরা যুক্ত, তাদের সকলের জন্যই আমাদের বেঁচে থাকা। প্রত্যহ শতাব্দী বার আমি নিজেকে এই কথা স্মরণ করিয়ে দিই যে, আমার অন্তর্লোক ও বাহ্য-জীবন জীবিত ও মৃত বহু ব্যক্তির শ্রমের ফলে পরিপুষ্ট এবং মনে করি যে, তাঁদের কাছ থেকে আমি যেভাবে গ্রহণ করেছি ও করছি, সেইভাবে নিজেকেও বিকীর্ণ করে দেওয়া উচিত। সরল জীবনযাত্রা পদ্ধতির প্রতি আমার তীব্র আকর্ষণ এবং মাঝে মাঝে এই ভাবনা আমাকে পীড়িত করে যে, আমার সাথী-ভাইদের অনেকখানি পরিশ্রম আমি অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করছি। শ্রেণি-বৈষম্যকে আমি ন্যায়বিচারবিরোধী ও হিংসা-আধারিত বলে মনে করি। আমার মতে, দৈহিক ও মানসিক উভয় দিক থেকেই সরল জীবনযাত্রা সকলের পক্ষে মঙ্গলকর।