কখনো কোথাও থেকে বহিষ্কার হবার অনুভূতিটা কেমন? সামান্য অপরাধে, কিংবা আদৌ কোনো অপরাধ ছাড়াই—কৈশোরের নিছক কৌতূহলে—যখন বহিষ্কারের মতো জীবন ওলটপালটকারী সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয় কারও ওপর, তখন কেমন লাগে তার? কিভাবে ভেঙে-চূড়ে, নতুন এক ছাঁচে গড়ে ওঠে তার মন? এসব নিয়েই নামভূমিকায় রচিত গল্প—‘বহিষ্কার’। সার্বিকভাবে গল্পগ্রন্থ সম্পর্কে গল্পকার বলেন: “আমাদের ছোট্ট খেলাঘরে ভীষণ আলোস্বল্পতা। জমানো কিঞ্চিৎ আলোয় দেখা যায় কদাকার মুখগুলো। বিদ্যুৎ চমকের মতো কিছু আলো হঠাৎ ভেতরে এলে কদাকার মুখগুলো যেন ম্যাজিক দেখায়—মুহূর্তেই বদলে যাচ্ছে বীভৎস খোলস, আর প্রদর্শিত হচ্ছে সুবোধ ও সুশীল কিছু সংলাপ। অথচ কণ্ঠের ভারে ঝুলে আছে নিস্তব্ধ অন্ধকার। আমাদের ভেতরে মনুষ্যত্ববোধ প্রধান হয়ে উঠলে হঠাৎ মনে হয়—এসব কি অমানবিকের মতো দেখতে, মজার ও নেশাতুর কোনো ম্যাজিক? অথচ জাদুবাস্তবতার মতো দেখতে এই নিরেট বাস্তবতা, যেন শরীর গুলিয়ে দেওয়া বিষম ক্ষত। তবু সমাজে তা যত্নে পালিত হয়, সুপ্তভাবে লালিত হয় আমাদের মননে। গল্পের চরিত্রগুলো এমন নিরেট বাস্তবতার ভেতরে বসবাস করে। এইসব আখ্যানে যাপিত জীবনের অভিজ্ঞতালব্ধ যে নির্যাস, তা পাঠককে ব্যাকুল করে তোলে—গা-ঘিনঘিনে বাস্তবতার সামনে এনে দেয় অস্বস্তি। যেন চোখে আঙুল দিয়ে সমাজের স্বরূপ চেনায়।”