একটা সময় ছিল, যখন সৈকতের পরিচয় ছিল শুধু একজন হতাশ চাকরিপ্রার্থী। ভিসা হাতে সে পাড়ি জমিয়েছিল মালয়েশিয়ার পেনাং শহরে—অজানা, অচেনা, কঠিন এক জীবনের দিকে। পকেটে ছিল স্বপ্নের ফর্দ, চোখে ছিল নিজের জন্য নয়, বরং দেশের পথে কিছু করার সংকল্প। শ্রমিকের জীবন, অবৈধতার ভয়, ঘামে ভেজা দুপুর আর একাকিত্বের কুয়াশা—সব পেরিয়ে তার গল্পে একদিন মনিকা এসে দাঁড়ায়। মনিকা, সেই মালয় তরুণী, যার চোখে ছিল সহমর্মিতা, হৃদয়ে ছিল বিশ্বাস। একসঙ্গে পথ হাঁটার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা গড়েছিল এক নতুন সংসার—যা ছিল না শুধুই ভালোবাসার, ছিল সহযাত্রার, সহমর্যাদার। সৈকতের কলম একদিন জন্ম দেয় ‘তিন নদীর দেশে জন্ম’ নামে এক গল্প। সেই গল্প মঞ্চে ওঠে, দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়, আর সৈকত বুঝে যায়—প্রবাসেও জন্ম নেওয়া যায়, যদি স্বপ্ন থাকে। এই উপন্যাস শুধু ভালোবাসার নয়, এটি ঘরে ফেরা এক নীরব বিপ্লবের দলিল। এখানে সম্পর্ক আছে, দায়িত্ব আছে, আত্মউন্নয়ন আছে—আর আছে সেই চেনা-অচেনা শহর, যার আকাশে একদিন এক ঘুড়ি উড়েছিল বাঁধাহীন মন নিয়ে। শেষ পর্যন্ত, সৈকত ও মনিকা ফিরে আসে বাংলাদেশে। ফিরে আসে মাটি ও মানুষকে নিয়ে কিছু গড়তে, কিছু ফেরাতে।