সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং সামাজিক ভোজবাজির মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা অসম্ভব। জেলের ভয় ও বন্দুক দেখিয়ে সাম্প্রদায়িক মানুষকে অসাম্প্রদায়িক করা সম্ভব নয়। যেখানে সাম্প্রদায়িকতা আছে, সেখানে দুই বা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে অজ্ঞতা, ভুল বোঝাবুঝি, ক্ষোভ, বিদ্বেষ, অহংকার এবং ঔদ্ধত্যের কারণে দাঙ্গা, খুনোখুনি, এবং অগ্নিসংযোগ ঘটে। সুতরাং, সাম্প্রদায়িকতা দূর করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে এসব সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন। শুধুমাত্র প্রশাসনের চাপ বা কাগুজে আইনের ভয় দেখিয়ে এটি সম্ভব নয়। ভারতে মুসলমান সম্প্রদায় অনেকের মতে একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। যে কোনো দেশে সংখ্যালঘু দুর্বলতর সম্প্রদায়ের ওপর যদি শক্তিশালী গোষ্ঠী অত্যাচার চালায়, তাহলে সেটি কখনো বাহাদুরি নয়, বরং চরম কাপুরুষতা। উদাহরণস্বরূপ, পাকিস্তানের মুসলিমরা যদি সেখানকার সংখ্যালঘু খ্রিষ্টান, ইহুদি, বা হিন্দুদের ওপর আঘাত হানে, তাহলে সেটি বীরত্ব নয়, বরং কাপুরুষতা। আমাদের দেশে সাঁওতাল, কোল, ভিল, মুণ্ডা, ইহুদি, পার্সি, খ্রিষ্টান, মুসলমান প্রভৃতি নানা জাতি বা গোষ্ঠী রয়েছে, কিন্তু এগুলো সমমান বা সমপর্যায়ের নয়। যেমন, ভারত সংলগ্ন নেপাল ছাড়া পৃথিবীতে কোনো হিন্দু রাষ্ট্র নেই এবং ভারত ছাড়া হিন্দি কোথাও রাজভাষা নয়। মুসলমান জাতি বিশেষভাবে নজর কাড়ে। আজকের হিসাবেও মুসলিম রাষ্ট্রগুলো সংখ্যা কম নয়, যেমন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, ইয়েমেন, এবং আরও ৫২টি মুসলিম রাষ্ট্র বিশ্বের বুকে দাঁড়িয়ে আছে। অজ্ঞতার কারণে যারা আরবি ভাষাকে অখ্যাত মনে করেন, তাদের জানা উচিত যে বর্তমানে ২১টি রাষ্ট্রের সরকারি ভাষা আরবি। মুসলিম রাষ্ট্র নয়, এরকম রাষ্ট্রেও স্থায়ী মুসলমান বাসিন্দা রয়েছেন, যেমন অস্ট্রেলিয়ায় অর্ধকোটিরও বেশি মুসলমান বাস করছেন। উত্তর আমেরিকার কোস্টারিকা, জামাইকা, কানাডা, এবং যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমান বাসিন্দা আছেন প্রায় এক কোটির ওপর।