বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য ভাতকে নরসিংদীর মানুষ ‘ভাত’ই বলে। কিন্তু যে চুলায় হাড়ি-পাতিল চড়িয়ে ভাত রান্না করা হয়, সে পাতিলকে তারা ‘পাইলা’ আর চুলাকে ‘পাহাল’ বলতেই অভ্যস্ত। নরসিংদী অঞ্চলের লোকভাষায় ‘স’ এবং ‘শ’-এর স্থলে ‘হ’ এবং ‘র’-এর স্থলে ‘ল’ অক্ষরের ব্যবহার লক্ষণীয়। সকালকে ‘বেইন্নালা’, বিকালকে ‘বাইট্যালা’, শ্বশুরকে ‘হউর’, শাশুড়িকে ‘হরি’ এবং বড়োকে ‘বুইত্যামারা’, গরমকে ‘ততা’, টককে ‘চুক্কা’, পাটখেতকে ‘নাইল্যাখেত’—এগুলো নরসিংদীর গণমানুষের লোকভাষা। এই জনপদকে একজন সাধারণ মানুষ তাঁর নিজ থানা রায়পুরাকে ‘লাইপুরা’, নরসিংদীকে ‘নোসন্দি’ এবং রেললাইনকে ‘লেললাইন’ বলে, তখনই স্পষ্ট হয়ে উঠে তার নিজস্ব একটা পরিচয়। হারাচ্ছি সংস্কৃতি হৃদয়ের শব্দ, একান্ত আপন উচ্চারণ। এই এলাকার মানুষ আত্মীয়-পরিজনদের সম্বোধন তাদের নিজস্ব ধারায় অভ্যস্ত।