"মাহি আপুর লেখা ধূসর রংধনু গল্পটি অসাধারণ সিজন ১, ২ পড়েছি এবং সিজন ৩ এখনো চলমান তবে তার লেখা এই ছোট্ট অনুগল্প সুজন আর আশা কে নিয়ে লেখা এটা অসাধারণ। অবশ্য ধূসর রংধনু এর মাঝে তাদের হাসি ঠাট্টা খুনসুটি কম ছিল না তবে এটা একটু অন্যরকম মাহি আপু গল্প মানে নতুনত্ব কিছু তো আছে এভাবেই আমাদের সুন্দর সুন্দর গল্প উপহার দিয়ে যেও আপু"
সুজন মাঝি ও আশা অর্থাৎ তার পাখির বাসার সঙ্গে আলাপ হয় এক তীব্র হাস্যকর মর্মান্তিক দুর্ঘটনায়। সেই যাত্রা হতে সূচনা হয় তাদের দুষ্টু মিষ্টি খুনসুটির। পরিবারের চাপে পড়ে প্রচণ্ড অনীহায় দুজনে চরে বসে বিয়ের পিরিতে। আবদ্ধ হয় এক হালাল সম্পর্কের বন্ধনে। যে অনীহা নিয়ে তারা বিয়ের পিরিতে বসেছিল, মাস কয়েক যেতেই তাদের সে অনীহা পরিণত হয় ধূলোকণায়, বরং সেখানে জায়গা করে নেয় একগুচ্ছ নাম না জানা বুনো ফুলেরা। সারাদিন খুনশুটিতে লিপ্ত থাকা দুটো মন তাদের না বলেও ভালোবাসে চুপিসারে। একে অপরের খেয়াল রাখে চুপিচুপি। আদরে গা ভাসায় তারা মিষ্টি ঝগড়ায়। দুজন মাঝি তো তার পাখির বাসায় দিনকাল চলছিল এভাবেই। আশাকে ওবাড়ি থেকে গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়ার পরে আশা নাক টেনে টেনে কান্না করছিল। গাড়ির লাইট অফ। মানবতাহীন বরটা তার পাশে বসে। সুজন বিরক্ত হয়ে ফিসফিস করে সুধালো, “এত কান্না করার কি আছে বলোতো? দুদিন পর তো তোমায় আবার নিয়ে আসবো। আজন্মের জন্য তো আর যাচ্ছো না আমার বাড়ি।” আশা নাক টানতে টানতে বলল, “ও, আপনি বুঝবেন না। আপনাকে তো বাবা-মা কে ছেড়ে থাকতে হবে না। আপনারা পুরুষ মানুষ, মেয়েদের কষ্ট কখনোই বুঝলেন না।” সুজন সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো, “ড্রাইভার গাড়ি ঘোরাও। তোমার ভাবীকে রেখে আছি।” ড্রাইভার সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক কষলো। সুজন আশার হাত শক্ত করে টেনে ধরে বলল, “চলো, তোমায় দিয়ে আসি। যেতে হবে না।” আশা কান্না থামিয়ে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে রইলো লোকটার পানে, “পাগল হয়েছেন। আশ্চর্য, আমি কি বলেছি আমি এক্ষুনি যেতে চাইছি?” “বাপের বাড়ি যাবেনা তাহলে? ভেবে বলছো তো?” আশা মাথা নাড়লো। সুজন হাসলো। “ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট করো।” ড্রাইভার দাঁত কেলিয়ে হেসে গাড়ি পুনরায় স্টার্ট দিলো। গাড়ির ঝাঁকিতে আশা সামনে পড়তে নিতেই সুজন তার কোমর জাপ্টে ধরলো। আশা হাতের মুঠি শক্ত করে চেপে ধরলো। ফিসফিস করে বলল, “কি করছেন, ছাড়ুন।” “উহু।” সুজন আশার বাম গালে টুপ করে চুমু খেয়ে বসলো। আশা স্তব্ধ বনে বসে রইলো। ড্রাইভার সঙ্গে সঙ্গে কেশে উঠে ব্রেক কষলো। সেই সুযোগে সুজন আশার ডান গালে চুমু খেলো। ড্রাইভার আগে চেয়ে দ্বিগুণ জোরে কাশতে আরম্ভ করলো। সুজন বিরক্ত হয়ে বলল, “কি ব্যাপার আব্দুল? তুমি এভাবে কাশছো কেন? আর গাড়ি থামালে কেন? এই তোমাদের জন্য তো গাড়িতেও একটু শান্তি নেই।” আব্দুল জোরে জোরে মাথা নাড়িয়ে পুনরায় গাড়ি স্টার্ট দিলো। আশা রাগে দুঃখে সুজনের হাঁটুর ওপর হাতের পাঁচ নক বসিয়ে খামচি দিলো। সুজন ব্যথায় চোখমুখ কুঁচকে মৃদু আর্তনাদ করে উঠলো, ফিসফিস করে সুধালো, “আমার হাঁটুর মাংস তুলে খাওয়ার ধান্ধা করেছো নাকি মেয়ে? উফফ, জ্বলে গেল।” আশা দাঁতে দাঁত চেপে বললো, “আপনি এক নম্বরের একটা লম্পট। আপনার জালায় শান্তিতে কি, এখন একটু কান্না করতেও পারবো না আমি?” সুজন দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওদিকে চেপে বসে আশার মাথাটা নিজের কোলে নিয়ে রাখলো। ভাগ্যিস, এই গাড়িতে তারা একা। আশা ড্যাবড্যাব করে চেয়ে বলল, “কি করছেন?” “কিছুনা, এখন কান্না করো। দশহাত দূরে বসে কেন কান্না করবে? তোমার কান্না হবে সব আমায় ঘিরে।” সুজন আশার মাথায় বিলি কাটতে লাগলো। আশা অসহায় মুখ করে চেয়ে বলল, “কিন্তু এখন তো কান্না আসছে না ডাক্তার সাহেব। আমার তো ঘুম পাচ্ছে।” “ঘুমাও তবে, নিষেধ করেছে কে?” “সত্যিই?” “আজ্ঞে, ঘুমান।” আশা সত্যিই চোখ বুজতেই ঘুমের দেশে হারিয়ে গেল। সুজন মুঁচকি হাসলো। কি কপাল তার, বউ তার গাড়িতে ঘুমাচ্ছে বরের কোলে মাথা রেখে, তার বউয়ের রাজ কপাল আর তার ফাটা কপাল। বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামতেই লেহেঙ্গা পরিহিত সুজন আশাকে কোলে তুলে নিলো। তার একটুও ইচ্ছে করলো না তার আস্ত ঘুমন্ত পাখির বাসাটাকে জাগ্রত করতে। বিয়ে বাড়ির সকলের সে কি হাসি ঠাট্টা। সুজন সেগুলো পাত্তাই দিলো না। ঘুমন্ত আশা বুঝতেও পারলো না তাকে বিয়ে করবে না বলা পুরুষটা তার প্রতি কতটা যত্নশীল। আবেদা বেগম শুধু ছেলের কান্ডে মুখে আঁচল চেপে হাসলেন। ফিসফিস করে বললেন, “মেয়েটা আমার জাগ্রত হলে বলিস। খাবার দিয়ে আসবো। সেই বিকাল থেকে না খাওয়া মেয়েটা।” সুজন আশাকে রুমে এনে শুইয়ে দিলো নিঃশব্দে। অতঃপর রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেল চুপিসারে। আশার সে ঘুম ভাঙলো রাত বারোটার সময়। রুমে টিমটিমে আলোর ডিম লাইট জ্বলছে। আশা উঠে বসলো। অবাক হয়ে চারপাশে তাকালো। লক্ষ করলো সে এতক্ষণ শুয়ে ছিল ফুলে সাজানো বিছানায়। এটা তো সুজনের রুম। তার মানে কি, তারা চলে এসেছে? মানে কি? লোকটা তো তাকে ডেকে তুলে নি। কি করে আসলো সে রুমে তবে? ছিঃ ছিঃ, বাড়ির আত্মীয় স্বজন সব কি ভাবলো। আশা উঠে বেলকনির দিকে গেল। ইশশ, কি সুন্দর ফুরফুরে হাওয়া দিচ্ছে প্রকৃতি। আশা রেলিংয়ে হেলান দিয়ে হাত ছড়িয়ে দাঁড়ালো। অদূরে দেখা যাচ্ছে সবুজ গাছপালা। রাতের আকাশ কতটা স্বচ্ছ আর প্রাণবন্ত। দিনের আলোয় তো আকাশের পানে তাকানোই কষ্ট। সূর্যিমামা গ্রাস করে নেয় আকাশের সবটুকু সুখ। সে চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস চেনে নিলো। প্রাণ ভয়ে আশা অনুভব করলো তার বাড়ন্ত হাতের উপরে পুরুষালী দুটো হাতের অস্তিত্ব। গলায় স্পর্শ করলো একজোড়া পুরুষালী ঠোঁট। আশা শিউরে উঠলো। ধীরে ধীরে তার বাড়ন্ত হাত দুটো সংকুচিত করে ফেলল। মুহূর্তেই পুরুষালী হাতদুটো দৃঢ় স্থান করে নিল তার কোমরে। সুজন ফিসফিস করে মাদকীয় কন্ঠে সুধালো, “ভালোবাসি, তার সুজন মাঝির জন্য নিজের অস্তিত্বকে ঢেকে রাখা মেয়েটাকে আমি ভালোবাসি। তীব্র গরমে দুপুরে নিজের হাত পুরিয়ে অপ্রিয় পুরুষটার জন্য রান্না করে নিয়ে যাওয়া মেয়েটাকে আমি ভীষণ ভালোবাসি। ভালোবাসি না বলেও যে রমণী তার অর্ধাঙ্গের ছোট ছোট কাজের খেয়াল রাখে খুব যত্ন করে সংগোপনে, সেই রমণীকে আমি প্রচণ্ড ভালোবাসি। কালো শাড়িতে নদীর পাড়ে বৃষ্টির পানিতে লাফিয়ে প্রাণবন্ত খিলখিল করে হাঁসতে থাকা ছেলেমানুষী যুবতীকে আমি এই বিশাল আকাশের সমান ভালোবাসি। আমার হাসিখুশি, হইহুল্লোর, অকারণে ঝগড়া করা অর্ধাঙ্গিনীটাকেই আমি ভালোবাসি। তার চঞ্চলতাকেই আমি ভালোবাসি। তার কথায় কথায় দেখানো অযথা রাগটাকেই আমি ভালোবাসি। ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি।”
মাহি আপুর লেখা ধূসর রংধনু গল্পটি অসাধারণ সিজন ১, ২ পড়েছি এবং সিজন ৩ এখনো চলমান তবে তার লেখা এই ছোট্ট অনুগল্প সুজন আর আশা কে নিয়ে লেখা এটা অসাধারণ। অবশ্য ধূসর রংধনু এর মাঝে তাদের হাসি ঠাট্টা খুনসুটি কম ছিল না তবে এটা একটু অন্যরকম মাহি আপু গল্প মানে নতুনত্ব কিছু তো আছে এভাবেই আমাদের সুন্দর সুন্দর গল্প উপহার দিয়ে যেও আপু
Read all reviews on the Boitoi app
ই-বুকটা পড়ে এওো এওা ভালো লাগছে বলে বুঝাতে পারব না।ভাবছিলাম সুজন আর বিয়ে করবে না,তৃপ্তির আশাতেই জীবন পার করবে।ওমা না সে তো বিয়ে করলো তার লাল টুকটুকে বউ আশাকে।আর সবচেয়ে ভালো লেগেছে আশার সাথে ওর শাশুড়ির ব্যবহার,ইশ মা-মেয়ের মতো কত মিল।সুজন কিন্তু মার কথায় বিয়ে করেছে,এমন কজন পারে?মা ভক্ত এককথায় সুজন যা আমার হৃদয় ছুয়ে গেছে।সুজনের রাগী রাগী কথা পরে আশাতেই মেতে থাকে সব এক অন্যরকম ছিলো।ই-বুকটা পড়ার সময় সামনে কি হবে ভাবতে থাকা আমি মানে এওো সুন্দর করে গল্পটা লিখেছে তুমি আপু কি আর বলব।দারুন সামনে এগিয়ে যাও হ্যাঁ?আর আমাদের সুন্দর সুন্দর গল্প ই-বুক উপহার দিও আপু।সত্যি বলতে সুজনকে আমার মেলা ভালো লাগে,কি সুন্দর টা ভদ্রসভ্য পোলা।দোয়া করো যেন এমন জামাই পাই।
দারুন দারুন হয়েছে আপু খুব ভালো হয়েছে । সুজন তার পাখির বাসা কে খুব ভালবাসে এবং যত্ন করে এই ই বুক টা টা তুমি পুরো ফুটিয়ে তুলেছো। আমার সুজন ও তার পাখির বাসা কে খুব ভালো লাগে এবং আমার পছন্দের জুটি তুমি ওদের নিয়ে আরো বই লিখো এবং খুব সুন্দর সুন্দর গল্প লিখে আমাদের অবসর সময়ে এক চিলতে হাসি ও আনন্দ নিয়ে এসো।