প্রিয় পাঠক, এই উপন্যাস “শ্যামা” আমার হৃদয়ের এক অঙ্গীকার, যার প্রতিটি পঙক্তিতে জমে আছে আমাদের যুগের প্রেম, সংগ্রাম ও আত্মউন্নয়নের মিশেল। জীবনের পথে চলতে চলতে আমরা অনেক সময় নিজেদের হারিয়ে ফেলি, আবার কিছু মুহূর্তে প্রেম ও আদর্শে পূর্ণ হয়ে উঠে। ২০২৪ সালের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সেই উত্তপ্ত দিন, যখন কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা ডিগ্রী কলেজে নুতন ইন্ধনের জ্বালা জ্বলতে শুরু করেছিল, তখন থেকেই এই গল্পের বীজ পেরেছে। সেই সংগ্রামের গর্জনে, এক অদ্ভুত মিলনের স্পন্দনে ও কিছু শূন্যতায় জন্ম নেয় শ্যামা—লেখকের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যার সাথে কাটানো হাসি, কান্না ও বিচ্ছেদের রাত্রিগুলো আজও আমার স্মৃতির পাতা ভরিয়ে রাখে। এই কাহিনী শুধু একটি রোমান্টিক গল্প নয়, বরং এটি আমাদের সেই বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি, যেখানে মানব হৃদয়ের গভীরতা ও সমাজের কঠিন বাস্তবতা একসাথে মিলেমিশে থাকে। ছাত্র আন্দোলনের উত্তেজনা, প্রগতির স্বপ্ন এবং প্রেমের উত্থান-পতনের মাঝে আমরা খুঁজে পাই নিজের প্রতিচ্ছবি—একটি সংগ্রামী, আত্মবিশ্বাসী ও কখনো কখনো বিচ্ছিন্নতার মধ্য দিয়ে উজ্জ্বলতার খোঁজে থাকা আত্মা। শ্যামা ও লেখকের এই সম্পর্ক, যেখানে ভালোবাসা ও আদর্শ একে অপরের সাথে নৃত্যে মিশে চলেছে, তাতে শুধুই হৃদয়ের স্পন্দন নয়, বরং জীবনের নানা বাঁকে ধরা পড়া পথচলার গল্প ও সংগ্রাম ফুটে উঠেছে। এই উপন্যাস রচনার সময় আমি নিজেকে বারবার প্রশ্ন করেছিলাম—ভালোবাসা কি শুধু আবেগের অনুভূতি, নাকি এটি আমাদের নিজের পরিচয় ও লক্ষ্যকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করার এক শক্তিশালী উপায়? চলমান সমাজবিরোধী আন্দোলন, প্রতিদিনের ছোট ছোট সংগ্রাম ও উদ্যম, এক কথায় জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলে। এই কারণে, এই গল্পে আমি চেষ্টা করেছি প্রতিটি চরিত্রের মধ্য দিয়ে সেই বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটাতে—যেখানে বিচ্ছেদ, অপেক্ষা, ও পুনর্মিলনের অধ্যায়গুলো আমাদের শেখায় যে, সত্যিকারের ভালোবাসা কখনোই হারিয়ে যায় না, বরং তা সময় এবং বাস্তবতার ভারে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। আমি আশা করি, এই উপন্যাসের মাধ্যমে আপনি শুধুই এক প্রেমের গল্পই নাবিড়বেন না, বরং নিজের জীবনের নানা পরীক্ষায় সাহস, আত্মবিশ্বাস এবং ভালোবাসা কীভাবে আমাদের পথপ্রদর্শন করে তা এক নতুন দৃষ্টিতে দেখতে পাবেন। পাঠকেরা, এই পৃষ্ঠাগুলোতে লুকিয়ে আছে আমার সেই প্রাণের অভিজ্ঞান, প্রতিটি শব্দে মিশে আছে আমার অভিজ্ঞতা ও স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি। আসুন, একসাথে এই যাত্রায় ডুবে যাই—যেখানে প্রতিটি অধ্যায় যেন জীবনের এক নতুন অধ্যায় খুলে দেয়, আর ভালোবাসার দীপ্তিটি চিরন্তন হোক। আপনাদের ভালবাসা, সমর্থন ও উদ্দীপনাই আমাকে এই রূপান্তরের পথে এগিয়ে নিয়ে গেছে। ধন্যবাদ, — ইফতেখার ইমন