তনু, আজকের দিনটা সুন্দর। নীলক্ষেত এসে বইয়ের তাক দেখে মন ভালো হলো। পকেটে সত্তর টাকা ছিল, দোকানদার বলল দাম পঁইষট্টি। বইটা কিনে নিলাম, তোমার হাসির জন্য আমি ঢাকা শহর পায়ে হেঁটে যেতে রাজি। বই খুলতেই প্রথম পাতার চিঠিতে চোখ আটকে গেল। আজ ফাল্গুনের চার তারিখ, সাল ২০২৪। রান্নাঘর থেকে ইলিশ ভাজার ঘ্রাণ আসছে। পৃথা মা’র দিকে তাকিয়ে ঘরে ফিরে এলো, সামনে ছয়টি বই। প্রথম বইয়ে লিখা, সেদিন তুমি বললে তোমার মন খারাপ। আমি তোমাকে বেলী এনে দিলাম, তুমি খুশিতে কেঁদে দিলে। দ্বিতীয় বইয়ে লিখা, আমি তোমাকে সবসময় দেখি। তৃতীয় বইয়ে, তুমি অন্য লোককে বিয়ে করে নিয়েছো, এই স্বপ্ন দেখে আমি ভয় পেয়েছি। খাবার ঘর থেকে তনুজা আমিনের কন্ঠস্বর আসছে। শফিকুল আহমেদ বললেন, "কিসব রাঁধো!" তনুজা ফ্যাকাশে হয়ে গেল, কিন্তু পৃথা বলল, "রান্না ভালো হয়েছে।" তনুজা আস্তে মাথা নাড়লেন।
""তোমার লেখায় একটা আলাদা জাদু আছে – বাস্তবতা আর কল্পনার মিশ্রণটা একেবারে নিখুঁত। প্রতিটা লাইনে বাস্তব জীবনের ছোঁয়া আছে, মনে হয় যেন চোখের সামনে ঘটে চলেছে।""
ভীষণ সুন্দর মেহরিমা।দোয়া থাকলো তোমার জন্য।
Read all reviews on the Boitoi app
দারুন হয়েছে।চমৎকার।
মেহরিমা আফরিন আপুর লিখা গুলো অনেক ভালো লাগে তাই আপুকে ভালোবেসে এই গুল্পটাও পড়লাম,,, সত্যি অসাধারণ 😊
কি নিদারুন কষ্ট আর অস্থিরতা নিয়ে জীবন বয়ে বেড়ানো,,, স্বামীর প্রতি অ-ভালোবাসার মাত্রা এতটাই যে স্বামী পরনারীতে আসক্ত হওয়া সত্তেও সে সর্বদা চোখের আড়াল করে গেছে,,, এতগুলো বছর পরেও সে প্রতি রাত তার অপেক্ষায় থাকে ,,, কল্পনায় তার কাঁধে মাথা না রাখলে তার ঘুম আসে না,,, যেন এটা ধ্রুব সত্য,,,ভালোবাসা যতটা সুন্দর,, ততটাই বেদনাদায়ক !!! লেখিকার তরে বলবো,,, তোমার লেখা আর চিন্তাশক্তি অনেক সুন্দর ❣️
দারুণ একটা গল্প। ইউনিক প্লট আর চমৎকার উপস্থাপন! লিখে যান, এগিয়ে যান। সাহিত্যকে এগিয়ে নিয়ে যান। শুভকামনা!
আপ্পি আপনার লিখনি বরাবরই অসাধারন, আর এই গল্পটা হৃদয় ছুয়ে যাওয়ার মতো...। অসাধারন
অনেক সুন্দর লিখেছো। পড়তে পড়তে হারিয়ে গিয়েছিলাম। মনে হলো আরেকটু লেখা পড়তে পারলে ভালো লাগতো। তোমার লেখা এতো সুন্দর। তনু আর ধ্রুব'র জন্য মন খারাপ হয়ে গেলো।
তোমার লেখনি বরাবরই আমাকে মুগ্ধ করে বারবার তোমার লেখনির প্রেমে পরি। এটাও অসাধারণ হয়ছে।
✨ রিভিউ: কিছুক্ষণ থেকে যাও — লেখিকা: মেহরিমা আফরিন ধরন: আত্মকেন্দ্রিক গদ্য, কাব্যিক ন্যারেটিভ, স্মৃতিস্নিগ্ধ প্রেমকাহিনি “এই গল্পে কেউ উচ্চস্বরে কাঁদে না, কিন্তু পাঠকের হৃদয়ের কোণে কোথাও একটা হু হু করে কেঁদে ওঠে। এই গল্পে প্রেম আছে—কিন্তু তা ফুলেল নয়, রক্তাক্ত। এই গল্পে মৃত্যুও আছে—তবু তার চেয়েও দীর্ঘমেয়াদি এক 'বেঁচে থাকা' আছে।” 🕊️ গল্পটির প্রেক্ষাপট ও গঠন: ‘কিছুক্ষণ থেকে যাও’ গল্পটি যেন সময়ের কুয়াশায় হারিয়ে যাওয়া এক প্রেমিক যুগলের দীর্ঘশ্বাস। ১৯৯৭ সালের ঢাকার নীলক্ষেত থেকে শুরু হয় একটি চিঠির হাত ধরে আমাদের যাত্রা—সেই চিঠি, যা লিখেছিল ধ্রুব, তার তনুজাকে। চিঠির প্রতিটি বাক্যে থাকে এক চেনা, কিন্তু ভীষণ অচেনা মায়া। এমন এক প্রেম, যেখানে “ভালোবাসি” শব্দটা উচ্চারিত হলেও, সেটার পেছনে ঝরে পড়ে হাজারটা না বলা কথা। গল্প এগোয় পৃথা নামের এক মেয়ের চোখ দিয়ে—যিনি জানতেন না, তার মা তনুজা আমিন এক সময়ে ছিলেন কোনো এক ছেলেটার সমস্ত পৃথিবী। এবং সে ছেলে তার জীবনের চেয়ে দামি ছিল এতটাই, যে তার মৃত্যুতে তনুজাও জীবন্মৃত হয়ে উঠেছিলেন। এই গল্প একটা অদৃশ্য চিঠি, যা পৌঁছায় একজন মৃত প্রেমিকের হাত থেকে তার বিধ্বস্ত প্রেমিকার বুক অবধি। এবং সেই প্রেমিকার মুখ থেকে তার মেয়ের কাছে। এটা কেবল গল্প নয়—একটি প্রজন্মান্তরের ট্রান্সফার অফ ট্রমা। 🌸 চরিত্র ও মাধুর্য: তনুজা আমিন – হয়তো এক হাজার গল্পে আমরা মা চরিত্রকে পেয়েছি, কিন্তু তনুজার মতো একজন মা, যিনি এক জীবনে তিনবার মরেছেন—একবার প্রেম হারিয়ে, একবার মৃত্যু দেখে, আর একবার বিয়ের পর অবহেলায় পুড়ে—এমন নারীর হৃদয়ের হাহাকার খুব কম গল্পেই ধরা পড়ে। তাঁর মুখে যখন আসে – "আমি মরেছি নক্ষত্রেরও মৃত্যুর আগে" — তখন তা শুধুই সাহিত্য নয়, তা হয়ে ওঠে নিঃশব্দ চিৎকার। ধ্রুব – নিঃশব্দ প্রেমিক। যিনি বাঁচতে পারেননি, কিন্তু মরে গিয়েও তনুজার বুকের মধ্যে বেঁচে থেকেছেন। তার লেখা চিঠিগুলো যেন হিমেল রাত্রির বাতাস—যা বুক জুড়িয়ে দেয়, আবার বুক ভারও করে তোলে। পৃথা – এক নীরব শ্রোতা। যে নিজের মায়ের দুঃখকে ধারণ করে, জানে না যে তার জন্মই এক প্রেমের শোকগাথা থেকে। কিন্তু যখন জানে, সে ভেঙে পড়ে না। সে মাকে আগলে রাখে। মায়ের গোপন বিষাদের পাহারাদার হয়ে ওঠে। 🌿 লেখার ভাষা ও অনুভব: মেহরিমা আফরিনের কলম যেন এক নিঃশব্দ ঝড়। তিনি গদ্যের মাঝে কাব্য বুনতে পারেন। তিনি পাঠককে ‘প্রেম’ দেখান না—প্রেমে তলিয়ে যেতে বাধ্য করেন। তিনি দুঃখকে দুঃখ বলেও বলেন না—দেখান ছাদের কোণে পড়ে থাকা শুকিয়ে যাওয়া একটি অর্কিড ফুলের মতো করে। চিঠির ভাষা, স্মৃতির সিঁড়ি, চরিত্রের স্তরভাগ, নস্টালজিয়ার কুয়াশা—সব মিলিয়ে এই গল্প যেন একটি আবেগের থিয়েটার, যেখানে আমরা সকলে দর্শক, আর তনুজা ও ধ্রুব সেখানে মুখ্য অভিনেতা। গল্পটি কেন এতটা বিশেষ? এখানে প্রেম আছে, কিন্তু তা সোশ্যাল মিডিয়ার প্রেম নয়; এখানে মৃত্যু আছে, কিন্তু তা কফিনে ঢোকা নয়—একটা হৃদয়ের ক্রমশ ফুরিয়ে আসা; এখানে মা-মেয়ের সম্পর্ক আছে, তবে সেটিও রক্ত নয়—ভাঙা কাঁচে মুখ দেখা এক ভালোবাসার প্রতিফলন। গল্প শেষে যখন তনুজা বলেন – "তুই ঘুমা। তুই না ঘুমালে সে আসবে না। আর তার সাথে কথা না বললে আমার ঘুম আসে না..." তখন পাঠকের মনে হয়, ধ্রুবও বুঝি কোথাও বসে অপেক্ষা করছে, এই চাঁদনির রাতে তনুজা তার পাশে বসবে বলে। 📖 শেষ কথা: "কিছুক্ষণ থেকে যাও" শুধু একটি গল্প নয়— এটি হলো হৃদয়ময় সময়ের রক্তাক্ত চিঠি, একটি মা-মেয়ের চোখের ভাষার সংলাপ, একজন প্রেমিকের শ্বাসরুদ্ধ মৃত্যুর বর্ণনা, একটি নীরব কিন্তু বজ্রবৎ উচ্চারিত আর্তনাদ। লেখিকা মেহরিমা আফরিন এই লেখায় প্রমাণ করেছেন, যে প্রেম যত নীরব হয়, সে তত গভীর হয়। এই গল্পে শব্দ কম, আর্তনাদ বেশি। এই গল্পে হাসি নেই, কিন্তু সে এতটাই নিখাদ, যে পাঠকের চোখে জল আসে—তাও শব্দহীনভাবে। রেটিং: ৪/৫ পড়ার পরবর্তী অনুভব: বুকে কিছু একটা দলা পাকিয়ে বসে থাকবে বহুদিন। শেষ অনুরোধ: এই গল্পটাকে আপনারা কেবল গল্প বলে ভুল করবেন না। এটা এক অসুস্থ মায়ের বুকফাটা কান্না। এক মেয়ের হৃদয়ের কাছে নিজের মা-কে নতুন করে আবিষ্কারের পরিক্রমা। এবং এক মৃত প্রেমিকের ফিরে না আসতে পারার চিরন্তন ট্র্যাজেডি। 💌
আপনার লেখা মাশাল্লাহ আপু। এভাবে ই লিখে যান❤️❤️