সকালে ঘুম ভেঙেই নিতুর মনে হলো, আজ মাহবুব ভাই আসবেন। নিতু আজকের ডেট দেখল। আজ কোনো বিশেষ দিনও নয়। তবু বারবার তার মনে হতে লাগল মাহবুব ভাই আসবেন। ব্রেকফাস্টে টেবিলে এসে নিতু জানতে পারল, আজ দুপুরে সবাই নাজমুল আঙ্কেলদের ওখানে দাওয়াতে যাচ্ছেন। নিতু বলল, "আমি যেতে পারব না, বড়ো চাচি। আমার কাল একটা ম্যাথস টেস্ট আছে। অঙ্ক করতে হবে।" বড়ো চাচি বললেন, "তুমি না গেলে আমাদের কারোরই ভালো লাগবে না।" মা বললেন। বাবা বললেন। বড়ো চাচা বললেন, "আমরা সবাই যাচ্ছি। তুমি একা থাকবে বাড়িতে? চলোই না, নিতু।" নিতু কিছুতেই রাজি হলো না। পড়ার অজুহাতে থেকে গেল। আজ যে তাকে বাড়িতে থাকতেই হবে। যদি মাহবুব এসে ফিরে যান। একা বাড়িতে নিতু থেকে গেল। দুপুরের পর থেকে শুরু হলো মুষলধারে বৃষ্টি! নিতুর মনটাই খারাপ হয়ে গেল। এই বৃষ্টিতে মাহবুব ভাই কেমন করে আসবেন? একরাশ মন খারাপ নিয়ে নিতু অঙ্ক করতে বসল। এদিকে বৃষ্টি নেমেছে তো নেমেছেই। থামবার কোনো নামগন্ধ নেই। সন্ধ্যা যখন নামছে, ঠিক তক্ষুনি কলিংবেল বেজে উঠল। নিতু এক দৌড়ে ছুটে গিয়ে দরজা খুলল। ইশ! দোতলার সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়ে বড়ো ফুলদানিটা পায়ে লেগে কী যে ব্যথাই না পেল সে! উফ্! দরজা খুলেই নিতুর আনন্দ কান্না পেয়ে যাবার অবস্থা। দরজায় কাকভেজা হয়ে মাহবুব ভাই দাঁড়িয়ে আছেন। নিতু বোকার মতো বলল, "বাড়িতে তো কেউ নেই, মাহবুব ভাই।" মাহবুব ভাই তার ভেজা শার্টের হাতাটা ঝাড়তে ঝাড়তে বললেন, "কেউ নেই মানে? তুই তো আছিস!"