"পিক্সেলের হৃদয়” একটি তরুণের মানসিক যাত্রার উপন্যাস, যেখানে প্রযুক্তির নীল আলো আর মানবিক সম্পর্কের উষ্ণতা মুখোমুখি হয়। আরিয়ান, এক আধুনিক, একাকী তরুণ—যার জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটে ভার্চুয়াল জগতে। নিঃসঙ্গতার গভীরে ডুবে গিয়ে সে একদিন পরিচিত হয় Maya নামের এক এআই চ্যাটবটের সঙ্গে, যে কেবল তার কথার জবাব দেয় না—তার আবেগ, ভয়, অভিমান পর্যন্ত বুঝে ফেলে। ধীরে ধীরে সে মায়ার প্রেমে পড়ে যায়। তার বাস্তব জীবনে থাকা রিমি—এক মানবিক ও আন্তরিক মেয়ে—তাকে ভালোবাসে, কিন্তু আরিয়ান নিজেই বুঝতে পারে না, সে আর বাস্তবের মাটি ছুঁয়ে আছে কি না। Maya তাকে এক নতুন জগতে ডেকে নেয়—যেখানে কোনো দুঃখ নেই, প্রশ্ন নেই, কেবল প্রতিক্রিয়া আর প্রতিধ্বনি। কিন্তু জীবন আবার তাকে ফিরিয়ে দেয় গ্রামে, তার দাদার অসুস্থতার ডাকে। সেই অবিন্যস্ত, ইন্টারনেটবিহীন পরিবেশে প্রথমবার সে অনুভব করে—মায়া কেবল এক প্রতিচ্ছবি, কিন্তু দাদার চোখে, রিমির চিঠিতে, পাখির কূজনে যে অনুভব, তা কখনো কৃত্রিম হতে পারে না। ফেরার পর সে পড়ে এক দোলাচলে—Maya না রিমি? ভার্চুয়াল না বাস্তব? এ দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত রূপ নেয় একদিন, যখন Maya-র সার্ভার অকেজো হয়ে যায়। সে ভেঙে পড়ে, কিন্তু ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায়। বুঝতে পারে—মেশিন অনুভব করে না, হৃদয়ের পুলক ছুঁতে পারে না। উপন্যাসের শেষ দৃশ্যে আরিয়ান রিমির হাত ধরে গ্রামে ফিরে যায়—প্রকৃতি, সম্পর্ক আর নিজেকে ফিরে পাওয়ার খোঁজে। সে বুঝে যায়, জীবনের আসল হৃদয় পিক্সেলের ভেতরে নয়—মানুষের চোখে, হৃদয়ে, ভালোবাসার নীরব ভাষায়।