চোখ মেলে তাকাতেই দেখলাম, আমরা অন্য একটা জায়গায়। কোথায় জানি না। একটা বন্ধ ঘরে আমাদের আটকে রাখা হয়েছে। আমার আর কুহুর দুজনেরই হাত-পা বাঁধা। কুহুর চুলগুলো মুখের ওপর এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে। সাদা শাড়িতে ওকে একদম ফুটন্ত সাদা নয়নতারা ফুলের মতো লাগছে। মৃদুমন্দ বাতাসে কুহুর চুলগুলো মুখের ওপর থেকে সরে গেল। মুখটা এখন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। সেই হাত ভর্তি চুড়ি, কপালে স্টোনের টিপ, কানে ঝুমকো—একদম বাঙালিআনা যাকে বলে। ওর লম্বা চুলগুলো মাটিতে লেপ্টে আছে। মেয়েরা এত লম্বা চুল সামলায় কী করে! ছেলেদের যদি এমন বড় চুল হতো, তাহলে চুলের ওজনে হাঁটাচলাই করতে পারতো না মনে হয়। অবশ্য তখন আর তাকে ছেলে বলা যেতো না, সে মেয়েই হয়ে যেতো। অবশ্য মেয়েদেরকে ছোটছোট চুলেও খারাপ লাগে না। অন্তত অদ্ভুত দেখায় না। এই জন্যই মেয়েদেরকে তরল পদার্থ বলা হয়। যেই পাত্রে রাখবে, সেই পাত্রের আকারই ধারণ করবে। তবে আমার কাছে মনে হয় নারীর অর্ধেক সৌন্দর্যই থাকে তার চুলে। কুহুর কোমরের কাছ দিয়ে শাড়িটা সরে আছে। ভুলবশত চোখ পড়তেই আমি নিজের চোখ সরিয়ে নিলাম। জ্ঞান ফেরার অপেক্ষা না করে ওকে কয়েকবার নাম ধরে ডাকলাম। কুহু, শুনছো? তিয়াশ বলছি। ও কোনো সাড়া দিলো না। আশেপাশে এমন কাউকে দেখতেও পাচ্ছি না, যার কাছ থেকে সাহায্য চাইতে পারি। অবশ্য এমন জায়গায় আমাদের আনা হয়নি, যেখানে সাহায্য করার জন্য কেউ থাকবে। কিছুক্ষণ পর কুহুর জ্ঞান ফিরে এলো। চোখ খুলে আমাকে দেখে অনেকটা ভূত দেখার মতো অবস্থা হলো। হাতের বাঁধন দেখে জোরে চেঁচিয়ে বলল, “আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন! আমার হাত বেঁধেছেন কেন?” এরপর? কী হয় কুহু আর তিয়াশের? কিভাবে অচেনা একটা জায়গায় এলো তারা? কে-ই বা নিয়ে এলো তাদের? এর পেছনে রহস্য কী?