বোকা হাবলু। নামটা যেন তার সঙ্গেই জন্ম থেকে লেগে আছে। অধিকাংশ মানুষই তাকে এ নামেই ডাকে। কেউ কেউ আবার সংক্ষেপে কেবল “হাবলু” বলেই সম্বোধন করে। অথচ তার আসল নাম রায়হান কবির—কিন্তু এ নামটা যেন কালের স্রোতে হারিয়ে গেছে। এমনকি মা–বাবাও ভুলে গেছেন তার প্রকৃত নাম। পরিবার-পরিজনও হাবলু নামটিকেই আপন করে নিয়েছে। পড়াশোনার ক্ষেত্রে হাবলু একেবারেই অযোগ্য। কোনো ক্লাসেই তার পাঠদক্ষতা নেই। শিক্ষকরা প্রায়ই বলেন, তার মাথায় নাকি গোবরের কারখানা চলে। সেখানে জ্ঞানের কোনো চিহ্ন নেই, আছে শুধু গোবর। পরীক্ষায় সে প্রায় প্রতিটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। এমনকি সর্বাধিকবার শূন্য নম্বর পাওয়ার রেকর্ডও গড়ে ফেলেছে স্কুলে। তবে অদ্ভুত ব্যাপার হলো, অন্য শিক্ষকরা যখন হাবলুকে স্কুলের বোঝা মনে করেন, তখন হেডস্যার তাকে ভীষণ পছন্দ করেন। কেননা প্রতিদিন সকালে তিনি স্কুলে প্রবেশ করতেই প্রথম সালামটি পান হাবলুর কাছ থেকে। মনে হয়, কেবল হেডস্যারকে সালাম দেওয়ার দায়িত্ব পালনের জন্যই সে ভোরে স্কুলে আসে এবং গেটের পাশে দাঁড়িয়ে থাকে। তবু অভিযোগের শেষ নেই। শিক্ষকরা একের পর এক বিচার নিয়ে হেডস্যারের কাছে হাজির হন। সবার বক্তব্য প্রায় একই—হাবলু পড়ালেখা শিখে আসে না, ক্লাসে কোনো কাজে লাগে না, তার কারণে স্কুলের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। হাবলুকে দিয়ে কিছুই হবে না।