বাংলাদেশে অনলাইনে ইসলামবিদ্বেষের প্রচারণা নতুন কিছু নয়। বহু বছর আগে থেকেই এর শিকড় বিস্তার লাভ করেছে। তবে এর বিপরীতে দাঁড়িয়ে নাস্তিক ও ইসলামবিদ্বেষীদের জবাব দেওয়ার প্রচেষ্টা তুলনামূলকভাবে সাম্প্রতিক। যদিও সূচনা হয়েছিল আরও আগে, প্রকৃত গতিমুখ দেখা যায় ২০১৬ ও ২০১৭ সালে। বিশেষ করে গত বছর একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে এ বিষয়ে, যা পাঠকমহলে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। ইতোমধ্যে আরও বহু লেখক ও প্রকাশক এই ধারায় কাজ শুরু করেছেন, এবং শিগগিরই আরও কিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি ইতিবাচক ও আশাজাগানিয়া পরিবর্তন। আমাদের স্বপ্ন—এই প্রচেষ্টা যেন কেবল একটি প্রবণতা হয়ে না থেকে, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ আন্দোলনে রূপ নেয়। এমন এক আন্দোলন, যা নাস্তিক্যবাদ ও ইসলামবিদ্বেষী মতাদর্শের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয়। তবে এ কাজ কেবল কয়েকজন লেখক বা চিন্তকের পক্ষে সম্ভব নয়; প্রয়োজন বৃহত্তর সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ। তবুও একটি দিক নিয়ে ভাবনার অবকাশ রয়ে যায়। আমরা লক্ষ্য করি, অনেক সময় ইসলামবিদ্বেষীদের জবাব দিতে গিয়ে যুক্তি, বিজ্ঞান কিংবা পশ্চিমা মানদণ্ডের প্রতি অতি মাত্রায় নির্ভরশীলতা তৈরি হয়। “বিজ্ঞানই প্রমাণ করে ইসলাম সত্য”, “ইসলাম মানবিক”, “ইসলাম যৌক্তিক”—এসব বক্তব্য তারই বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো—এসব মানদণ্ড আসলে কার তৈরি? এগুলো পশ্চিমা জগৎ নির্মিত কাঠামো, যেগুলো সীমিত ও ত্রুটিপূর্ণ। অথচ মুসলমানদের হাতে আছে তার চেয়েও শ্রেষ্ঠ মানদণ্ড—ইসলাম নিজেই। ইসলামি শরীয়াহ এমন এক পরিপূর্ণ কাঠামো, যা মানবসৃষ্ট যে কোনো আদর্শ বা মাপকাঠির চেয়ে বহুগুণ শ্রেষ্ঠ। ইসলামের সত্যতা প্রমাণের জন্য পশ্চিমা কাঠামোর শরণাপন্ন হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং স্বাভাবিকভাবেই, সেই অপূর্ণ কাঠামোর সঙ্গে ইসলামের বহু দিক খাপ খাবে না। আর সেটাই তো প্রমাণ করে—ত্রুটি ইসলামে নয়, বরং সেই কাঠামোয়।