রূপকথায় সে সব কিছুর সুস্পষ্ট ছাপ থেকে যায়...। এই সব কাহিনির বেশিরভাগই যখন প্রথম বলা হয়েছিল, তারপর বহু শতাব্দী পার হয়ে গেছে। যারা কাহিনি বলেছে তারা তাদের পছন্দমত, তাদের ইচ্ছানুসারে এদিক-ওদিক বাড়িয়ে নতুন কিছু যোগ করে নতুন রূপ দিয়েছে। কাহিনিগুলো যত পুরনো হয়েছে, ততই বেশি মনোগ্রাহী হয়েছে, আর তাদের শিল্পগুণও বেড়েছে। শত শত বছর ধরে লোকেরা মেজে-ঘষে তুলির নানা টানে এদের একেবারে নিখুঁত করে তুলেছে...। সবচেয়ে কাব্যময় আর আনন্দের হলো রূপকথাগুলো। এরা আমাদের অপরূপ কল্পনার জগতে নিয়ে যায়। মনে হয় এই সব রূপকথার ভিত্তি কেবল কল্পনা আর স্বপ্ন। অমঙ্গলের বাহনদের সঙ্গে এই সব রূপকথার যে বীর-নায়করা যুদ্ধ করেছেন, তাঁরা কেউই সাধারণ জগতের নিয়মে বাধা নন। কিন্তু তবুও এই সব কিছুর ভেতরে মানুষের সত্যিকার স্বপ্ন ফুটে উঠেছে। এই রূপকথাগুলির বীর-নায়কেরা লোকপ্রচলিত আদর্শের মূর্তি। তারা সবসময়ই নির্ভীক, দুঃসাহসী, মহৎ, অমঙ্গলকে তারা জয় করবেনই...। উপকথা পড়তে ছোটদের চেয়ে বড়রাও কিছু কম ভালোবাসে না। কারণ এইসব গল্পের ভাষার সৌন্দর্য, নায়কদের মোহনীয়তায় মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। আকৃষ্ট না হয়ে পারা যায় না তাদের মর্মবাণীতে—কেননা এই সব গল্প দেশকে ভালোবাসতে শেখায়, সাধারণ মানুষের শক্তিতে আস্থা রাখতে বলে, উন্নত ভবিষ্যত এবং মন্দের উপর ভালোয়ের জয়ের প্রত্যয় গড়ে তোলে।