''কোনো অপরাধ করেছি, মা? অন্যায়কারী মাথা পেতে সব শাস্তি গ্রহণ করতে প্রস্তুত! দাও, কী শাস্তি দিবে? বহুদিন তোমার আদুরে শাস্তি থেকে বঞ্চিত আছি।" শাহানা বেগম ডানহাত বাড়িয়ে ছেলেকে কানমলা দিয়ে বললেন, ''যাওয়ার পথে কী বলেছিলাম, মনে নেই তোর? তুই কবে একটু দায়িত্বশীল হবি, ঋজু? পরশু আঁচলের জন্মদিন। মা হয়ে মেয়েটাকে কিছু গিফট করব না?" "বড্ড ভুল হলো। আমি একদম ভুলে গেছি, মা। আঁচলকে সাথে নিয়ে যাও, যা পছন্দ হয় কিনে দিয়ো।" "এটা কী ধরনের কথা বলিস, তুই? আমি যা দেব, তা তো আমার তরফ থেকে। তুই কী দিবি, সেটা তো তুই জানিস। অন্তত একটা ডায়মন্ড সেট দিতে পারিস।" ''এক কাজ করো, পুরো ডায়মন্ডের পাহাড় এনে ওর গায়ে বসিয়ে দাও। শুধু গলায় দিবে কেন?'' রিজভী হেসে কথা বলে ড্রয়িংরুম ক্রস করে নিজের রুমে আসতে গিয়েই পড়ল বিপদে। ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে একজোড়া চক্ষু তাকে আনমনে গিলে খাচ্ছে। শুধু যে গিলছে তা নয়, এতক্ষণে অ্যাটমবমের মতো ফুলে, ফেটে যাওয়ার জোগাড় হয়েছে তার। রিজভী কানে আঙুল দিয়ে স্যরি ভঙ্গিতে দুঃখপ্রকাশ করল। আঁচল পাত্তা দিল না। মুখ বাঁকিয়ে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। শাহানা বেগমের সামনে গিয়ে রিজভীর দিকে কড়া দৃষ্টি ফেলে বলল, ''মা, তোমার কাঠখোট্টা ছেলেকে বলো, আমার কোনো গিফট লাগবে না। অন্তত পার্টিতে যেন উপস্থিত থাকে। নয়তো ভাইয়াদের খারাপ লাগবে।'' "শুধু কি ভাইয়াদের খারাপ লাগবে? অন্যজনের লাগবে না?'' দুষ্টু হাসিতে চোখ নাড়িয়ে প্রশ্ন করল রিজভী। আঁচল জবাব দিল না। হনহনিয়ে বেরিয়ে গেল দরজা দিয়ে। রিজভী মায়ের দিকে তাকিয়ে হাসতে গিয়েও কোনোমতে হাসি চেপে দ্রুত নিজের রুমে চলে এলো। আচ্ছামতো ক্ষ্যাপানো গেছে আদরিনীকে, এখন গাল ফুলিয়ে বসে থাকবে।