অনেককে দেখেছি বিয়ে করার সময় বুদ্ধিমতী, চৌকষ, চটপটে মেয়ে খোঁজেন। কিন্তু বিয়ের পরে সেই বুদ্ধিমতী মেয়েটি যখন তাকে কোন ব্যাপারে পরামর্শ দেয় তখন অন্যদের সম্মুখে সেই পরামর্শকে মেনে নেয়াকে কাপুরুষতা মনে করেন। ভাবেন- স্ত্রীর কথা শুনলে অন্যরা কি মনে করবে? সবাই মনে করবে আমি স্ত্রীর কথায় উঠি-বসি। ওরা বলবে আমি একটা স্ত্রৈণ। অথচ এটা তো খুব স্বাভাবিক যে, যে কোন শিক্ষিত বুদ্ধিমতী মেয়েই আশা করবে যে তার স্বামী তার সঙ্গে পরামর্শ করবে, তার মতামতের গুরুত্ব দেবে। একদিকে বুদ্ধিমতী স্ত্রী চাওয়া অন্যদিকে স্ত্রীর মতামতকে (তা যতটা মানসম্মতই হোক না কেন) মেনে নিলে মান যাবে এমনটা ভাব পরস্পর বিরোধী মানসিকতারই লক্ষণ। আমার ধারণা এই Transition Period এ অনেক পুরুষই আসলে কি চাইছেন এ ব্যাপারে নিজেরাই যথেষ্ট স্বচ্ছ ধারণা রাখেন না বা এক ধরনের দোটানায় ভোগেন। একদিকে তারা আমাদের দেশের নারীদের অন্যদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চাইছেন, তাদেরকে সচেতন নারীরূপে দেখতে চাইছেন, আবার একই সাথে বাস্তব জীবনে নিজের ঘরের নারীটিকে নিজ অধিকার সম্পর্কে নীরব, নিশ্চুপ বোধহীন দেখতে ভালবাসছেন। এ দ্বৈততার ফল মারাত্মক হতে পারে। সমস্যার কারণ শুধু পুরুষদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না। নারীদের মধ্যেও রয়েছে। নারীরা অনেক ক্ষেত্রেই নিজেদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন না। এ সম্পর্কিত জ্ঞানের অভাব যথেষ্ট পরিমাণে সমাজে পরিলক্ষিত। কোথায় কতটুকু অধিকার রয়েছে এবং এ অধিকারের সীমা কতদূর এটা নাজানা থাকার কারণে সঠিক অবস্থান নেয়াও তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে সাংসারিক ও পারিবারিক জীবনে দেখা দেয় নানামুখী সমস্যা। এই নানামুখী সমস্যার বিভিন্ন দিককে তুলে ধরে এ সম্পর্কিত জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধি করাই এই বইটির প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য।