এই উপমহাদেশের সভ্যতা ও সংস্কৃতির আদি কেন্দ্র হরপ্পা ও মোহেনজোদারো, যার উপর ভিত্তি করে এদতঅঞ্চলে সভ্যতা ও সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। যেমন বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের। আর এর উপর ভিত্তি রচিত এই গ্রন্থ যা কিনা বর্তমান বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রভুক্ত এলাকা, এর সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংস্কৃতি বিষয়ক ঘটনাসমূহ উল্লেখিত হয়েছে। প্রাচীন ও মধ্যযুগের সিন্ধু সভ্যতা ও সংস্কৃতি পূর্ব ভারতের তথা বিশেষ করে বাংলাদেশের সভ্যতার উত্থান-পতনের কারণগুলো নতুন ভাবে পর্যালোচনা করা অন্যদিকে আদি বাসস্থান সম্পর্কিত তথ্য গুপ্ত, পাল, কুষাণ ও সুলতানী আমলের ইতিহাস সর্ম্পকে আলোকপাত করা হয়েছে। তাছাড়া শিল্প, সাহিত্য, কবিতা, প্রেম, আবেগ, নৃত্য, গীত ও লোকশিল্পের বিষয়গুলি বিস্তারিতভাবে উল্লেখিত হয়েছে। দেশের ও বিদেশের খ্যাতিমান ব্যক্তিদের সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিষয়ক আলোচনা জাতিভেদের নিষ্পেষণ ও নিপীড়ণের কারণ উদ্ধৃত করা হয়েছে। এছাড়া এ গ্রন্থে বর্তমান বিশ্বের সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, বিশেষ করে ছোট ছোট রাষ্ট্র, জাতি, গোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতি বিলীন হয়ে যাওয়া। এমনকি বাংলাদেশে ভাষা ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন এখন এক প্রকট আকার ধারণ করেছে, বাংলার মৌলিক সংস্কৃতির বিষয়গুলি এখন প্রায় বিলীন হওয়ার পথে। হয়তোবা অতীতের মতো চিত্রকলা ও সাহিত্য যে ভাবে নেপাল ও অন্যান্য দেশ থেকে সংগ্রহ করে আনতে হয়েছিল। আগামীতে আমাদের সংস্কৃতি ও সভ্যতা অন্য দেশ থেকে আনতে হবে। ভাষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, শিক্ষা এ সকল বিষয় না থাকলে একটি জাতির পরিচয় বিলীন হয়ে যায়। হয়তোবা বাঙালি জাতি তার এই আত্ম পরিচয় হারাতে বসেছে। বিশ্বায়নের যাতাকলে কতদিন টিকে থাকতে পারবে সেটিই এখন মৌলিক প্রশ্ন। উল্লেখিত এই গ্রন্থ সেই মৌলিক প্রশ্নের অনুসন্ধানেরই প্রয়াস।