সত্য অনুসন্ধিৎসু বৈষ্ণব ঘরানার লেখক মনোজবিকাশ দেবরায়। অন্তরে গভীর শ্রদ্ধা ও ভক্তি বিশ্বাসের এক সুন্দরভূমিতে তাঁর অবস্থান। জগতের সর্বজীবে অনন্ত-অনন্তাময় জগদ্বন্ধুকে তিনি গভীরভাবে অনুভব করেন, যা তাঁকে নিয়ে গেছে মানবপ্রেমের চৈতন্যময় ভূমিতে। এ ভাবনায় ভাবিত হয়ে তিনি মধুকরের মতো বিচরণ করেছেন সনাতনীশাস্ত্র, সাহিত্য, দর্শন, সমাজ ও সংস্কৃতির সুরম্য নিকুঞ্জে। মধুকরবৃত্তি করে জ্ঞান ও ভক্তির পুষ্পিত উদ্যান থেকে শোভন ও সৌরভমণ্ডিত মধু সংগ্রহে সুকৌশলী, প্রেম ও ভালোবাসার ইমারত তৈরির সুদক্ষ কারিগর, আত্মিক প্রসন্নতার রসিক, শিল্পচেতনায় উদ্বুদ্ধ, ভুয়োদর্শন লেখকের রচনার বিষয়শৈলীর নির্বাচন আত্মজিজ্ঞাসু পাঠকের মনোস্কাকমনা পূরণের অভিনব মৌলিক চিন্তনের ফসল। পাঠকের মননশীলতার এক অদ্বিতীয় ভাব ও সরোবর বিনির্মাণে তাঁর সুগভীর শ্রদ্ধাবোধ, সংযমচারুতা, বুদ্ধিদীপ্ত সাত্ত্বিক গুণান্বিত চিত্তবৃত্তির রসায়িত ভোগসভার আয়োজন অতি অভিনব। মানুষের মধ্যে দুটি ভাব দেখা যায়-এর একটি হলো চেতনার বৃহত্তর পরিমণ্ডলে ব্যক্তির স্থূল ইন্দ্রিয়ের ভোগায়োজনে পরিতৃপ্তি আর অন্যটি অন্তর্জগতের আনন্দরস আস্বাদনের ব্যাকুল চেতনায় তৃষ্ণালোভাতুর প্রচেষ্টা। মনোজবিকাশ দেবরায় রচনাবলি দ্বিতীয় পর্যায়ে পড়ে। রচনাবলিতে আছে প্রবন্ধ, কবিতা, গান, কীর্তন, অমিয় বাণী ও দিনলিপিসহ মনোরম সাহিত্যসম্ভার-যা পাঠককে নিয়ে যাবে মানবপ্রেমের অমিত সম্ভাবনাময় আনন্দের শ্রীনিকেতনে। নির্মলপ্রাণ মানবচিত্তবিনোদনকারী গ্রন্থকারের অধ্যয়ননিষ্ঠ, ভজনপ্রিয়তা ও অনুসন্ধিৎসু মননের স্বভাবধর্মের সৌরভমণ্ডিত প্রকাশ ঘটেছে তাঁর রচনাবলিতে। আনন্দের এ মহোৎসব পাঠককে স্বাগত আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার স্নিগ্ধ সমীরণে।