আমি সেলফ হেল্প ধরণের বই (জয়ী হোন, বা কীভাবে বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করবেন, বা দশটি পথের মাধ্যমে জীবনকে পালটে ফেলুন টাইপের বই) ঘৃণা করি। প্রত্যেকের জীবন আলাদা, এবং সেখান থেকে উত্তরণের পথও আলাদা। সভ্যতার সূচনা থেকেই মন সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে আসছে অসংখ্য বিশৃংখলা এবং সমাধান। আমি বিজ্ঞান এবং শিল্পের সমন্বয়ে চেষ্টা করেছি মানুষের মনকে সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করার জন্য। আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি যখন একজন ব্যক্তি তার সমস্যাটি সম্পূর্ণ রূপে বুঝতে সক্ষম হয়, তখন সে তার নিজের মস্তিষ্ক এবং কল্পনা করার ক্ষমতার মাধ্যমে সেটা নিজেই সমাধান করতে সক্ষম কারণ কাউকেই এমন কোন সমস্যা দেয়া হয়না যা সে সমাধান করতে সক্ষম না। মানুষের যে সব বিচিত্র আচরণ বা কর্মকাণ্ড আপনাকে বিস্মিত বা অবাক করেছে সেগুলোর খুব সহজ ধরনের ব্যাখ্যা বিভিন্ন উদাহরণের মাধ্যমে আমি এই গ্রন্থে তুলে ধরেছি যেন সবাই বৈচিত্রময় মানব অনুভূতি এবং আচরণ দিয়ে আঘাত প্রাপ্ত নাহয়ে সেগুলো উপভোগ করতে সক্ষম হয়। মনোচিকিৎসা (সাইকিয়াট্রি) এবং মনোবিদ্যার অর্থ ও গুরুত্ত্ব আধুনিক বিশ্ব ও সভ্যতায় যুগোপযোগী ভাষায় ব্যাখ্যা করেছি সেগুলো সংক্রান্ত বিভিন্ন ভূল ধারণা এবং কুসংস্কার দূর করার উদ্দেশ্যে। পরিচিত মানসিক রোগগুলোকে যেন মানুষ সহজে চিনতে পারে সেরকম করে তুলে ধরা হয়েছে এই গ্রন্থে। মস্তিষ্ক- শেষ যুদ্ধক্ষেত্র, শেষ অজানা ঠিকানা- কে সহজভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মনের সাথে এর সম্পর্ক তুলে ধরার উদ্দেশ্যে। একইসাথে শরীরে সাথে মনের সম্পর্ক তুলে ধরেছি দৈনন্দিন জীবনের উদাহরণের মাধ্যমে। নিঃসন্দেহে জটিল মানব সমাজের এই ধরনের সরলীকরণ জীবনকে একেবারে "রসকষহীন" করে তুলতে পারে। কিন্তু আমি আমার চারপাশে থাকা দুঃখে জর্জরিত মানুষগুলোর কষ্ট ঘৃণা করি যেখান থেকে কোন একটি সাধারণ চিন্তাধারাই তাকে মুক্তি দিতে পারে। এটা সেইসব মানুষকে মানসিক অসুবিধা তথা সামগ্রিক দুঃখ-কষ্ট থেকে বাঁচানোর একটা প্রচেষ্টা মাত্র।