দুনিয়া এক রহস্যঘেরা জায়গা। এখানে মানুষ আসে। শৈশব, কৈশোর আর তারুণ্যের সিড়ি বেয়ে বার্ধক্যে পৌঁছে। তারপর হঠাৎ একদিন চলে যায়। এই স্বল্পতম সময়ে দুনিয়াবি সফলতার সিঁড়ি বেয়ে উপারে উঠার জন্য মানুষের কি নিরন্তর চেষ্টা। অথচ সে জানে না উপরে উঠতে গিয়ে সে কতটা নিচে নেমে যাচ্ছে। দুনিয়ার সাথে আমাদের সত্যিকার সম্পর্ক কী? দুনিয়ার ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত? প্রকৃত সফলতা কিসে? নবী রাসূলদের জীবন ও বক্তব্য থেকে এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে পড়ুন ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) রচিত এক কালজয়ী গ্রন্থ ‘কিতাব যুহুদের’ অনুবাদ এই ‘রাসূলের চোখে দুনিয়া’
বইয়ের নাম- রাসুলের চুখে দুনিয়া (কিতাবুয যুহদ’গ্রন্থের অনুবাদ) লেখকের নাম- ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল রহিমাহুল্লাহ। রিভিউ- আমরা দুনিয়াকে আমরা ঠিক কীভাবে দেখি? আর, রাসূল (সাঃ) এর চোখেই বা দুনিয়াটা কেমন ছিলো? জানতে মন চায় না আমাদের? আমাদের সবার কাছে দুনিয়া মানেই ভোগ বিলাসিতা। ক্যারিয়ার, চাকরি, বাড়ি, গাড়ি, অট্টালিকা,ব্যাংক-ব্যালেন্স সহ দুনিয়ার সব চোখ ধাঁধানো ব্যাপারই যেন আমাদের কাছে দুনিয়া। সামান্য একটু গরমে এসি না হলে আমরা সলাত পড়তে পারি না। ডাইনিং টেবিলে বসে ভাত না খেলে যেন আমাদের মানসম্মানই থাকে না। ফোমের আরামদায়ক বিছানায় গা এলিয়ে শু'তে না পারলে যেন আমাদের চোখই ঘুমেই আসতে চায় না। আর পেটভর্তি খেয়ে এমন অবস্থা করি, ইবাদাত করার ইচ্ছে এবং শক্তি- দুটোই হারিয়ে পেলি। অথচ, রাসূল (সাঃ), যিনি আমাদের আদর্শ, তিনি কেমন ছিলেন বলতে পারেন? আয়েশা রাঃ বলেন, - একবার এক আনসার মহিলা আমার কক্ষে প্রবেশ করে দেখতে পেলো, রাসূল (সাঃ) এর তোষক হলো দ্বি-ভাজ করে রাখা আলখাল্লা সদৃশ একটি উলের কম্বল। এ দৃশ্য দেখে আনসার মহিলা তাঁর ঘরে গিয়ে উলে-ভর্তি একটি তোষক আমার কাছে পাঠিয়ে দিলো। রাসূল (সাঃ) আমার কক্ষে এসে জিজ্ঞেস করলেন- 'এটি কী?' আমি বললাম,- 'অমুক আনসার মহিলা আমার কক্ষে প্রবেশ করেছিলো। সে আপনার বিছানা দেখে এটি পাঠিয়েছে।' রাসূল (সাঃ) বললেন,- 'এটি ফেরত পাঠিয়ে দাও।' তবে, আমি সেটা ফেরত পাঠাই নি।তোষকটি আমাকে মুগ্ধ করেছিলো। আমি চাচ্ছিলাম সেটি আমার ঘরেই থাকুক। শেষ পর্যন্ত এটি ফেরত পাঠাতে রাসূল (সাঃ) আমাকে তিনবার নির্দেশ দিয়ে বললেন,- 'আয়িশা! এটি ফেরত দিয়ে দাও। আল্লাহর শপথ! আমি যদি চাইতাম, তাহলে আল্লাহ তা'লা স্বর্ণ ও রৌপ্যের পাহাড়কে আমার সাথে চলমান করে দিতেন''। পরিশেষে, আমি তা ফেরত পাঠিয়ে দিই। এই হচ্ছে আমাদের প্রাণপ্রিয় রাসূল (সাঃ)। বিলাসিতা যাকে স্পর্শ করতে পারেনি কোনদিন। একটি আরামের তোষকও যিনি নিতে প্রস্তুত ছিলেন না। খাবারের অভাবে সাহাবা (রাঃ) গন সামুর এবং আঙুরের লতা চিবিয়ে দিনযাপন করছিলেন, যার ফলে তাদের মুখের কোণে ঘাঁ হয়ে গিয়েছিলো। এমন অনেকদিন পার হয়েছে, ঈমাম হাসান (রাঃ) এবং হোসেন (রাঃ) এর ক্ষুধা নিবারণের জন্য রাসূল (সাঃ) এর ঘরে তরল খাবার পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। তিনদিন অভুক্ত থাকার পরে রাসূল সাঃ এক ছিলতে রুটি খেতে পেয়েছিলেন। তবে, যবের রুটি, গোশতের ব্যবস্থা হলে রাসূল (সাঃ) সবাইকে নিয়ে বিলি বন্টন করে খেতেন। বিলাল রাঃ কে উপদেশ দিয়ে বলেন,- 'হে বিলাল! খরচ করো (অর্থাৎ, কৃপণ হয়ো না)। এমনটা ভেবো না যে, খরচ করলে আল্লাহ কমিয়ে দেন ' যাদের হাতে পুরো অর্ধ পৃথিবীর শাসনভার ছিলো, কতো নির্মোহ, নির্লোভ, নিঃস্বার্থ জীবনযাপনই না তারা করেছেন। যাদের কাছে পার্থিব এই জীবনের চেয়ে আখিরাতের জীবন ছিলো বেশি মূল্যবান। আর আমরা? কী করছি দুনিয়ার লোভে পড়ে? 'শপথ সময়ের! নিশ্চই মানুষ ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত।'- সূরা আল আসর, ১-২ চার মাযহাবের অন্যতম একজন ঈমাম ছিলেন। প্রচুর হাদীস সংগ্রহ করেছেন তিনি। নিজের জীবনটাকে উৎসর্গ করেছেন দ্বীনের জন্য, দ্বীনি জ্ঞানার্জনের জন্য। 'কিতাবুয যুহ্বদ' পড়ে জানতে পারা যায় রাসূল (সাঃ) দুনিয়াটাকে কীভাবে দেখেছেন, কীভাবে নিয়েছেন। এটি থেকে আমাদের জানার, শেখার অনেক অনেক কিছুই আছে। অনেকদিন থেকেই চাচ্ছিলাম গ্রন্থটি বইটই এপ্সে নিয়ে আসুক। আলহামদুলিল্লাহ্, কাজটি আল্লাহ তায়ালা করিয়ে নিয়েছেন ভাইদের দ্বারা। 'কিতাবুয যুহ্বদ' এর বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করেছে ইসলামিক প্রকাশনী 'মাকতাবাতুল বায়ান'। বইটির নাম দেওয়া হয়েছে 'রাসূলের চোখে দুনিয়া'... অনুবাদ করেছেন শ্রদ্ধেয় ভাই, জিয়াউর রহমান মুন্সী। আল্লাহ ভাইকে এবং এর পেছনে কাজ করা সকলকে উত্তম যাজা দান করুন, আ-মীন। বইটি প্রত্যেকের সংগ্রহে থাকাটা জরুরি মনে করি। আমার দেখা ই-বুকের মাঝে সব চাইতে ভালো একটা এপ্স হলো বইটই।বইটই এপ্সে পচুর ভালো ইসলামীক বইয়ের কালেকশন রয়েছে। বইটি পড়তে চাইলে https://link.boitoi.com.bd/tw7R লিংকে ডুকে পড়ে আসতে পারেন। বইটই ই-বুক মেলা ২০২৩" রিভিউ প্রতিযোগিতা। #BoitoiEbookMela2023
Read all reviews on the Boitoi app