সমাজকে যদি এক সরব অস্তিত্বরূপে কল্পনা করা হয় তবে মানতেই হবে যে এর বিচিত্র আচরণ কোনো প্রাজ্ঞ মনস্তত্ত্ব দিয়েও অনুধাবন করা সম্ভব নয়। সমাজ নিয়ে কিংবা বিভিন্ন অনুষঙ্গ, সমাজবদ্ধ মানুষের বিচিত্র ক্রিয়াকলাপের ব্যাখ্যা কোনো একক গবেষণালব্ধ ফলাফল দিতে অক্ষম। আর এজন্যই হয়তো বহুল সমাজসমৃদ্ধ পৃথিবী এতটা রোমাঞ্চের, যাতনার কিংবা উপভোগের। ‘কথার আলপনা’ বইটিতে মোট ২৭টি রচনা স্থান পেয়েছে যার প্রায় প্রতিটিতেই সামাজিক মানুষের বিভিন্ন আচরণ, বিভিন্ন মানসিক ব্যঞ্জনার তিক্ত-মধুর সুর বেজে উঠেছে। পাঠকের আগ্রহ বর্ধনের পাশাপাশি এইসব রচনা কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপভোগের মাত্রাকে বাড়াবে বলেই আমার বিশ্বাস। প্রাত্যহিক জীবন-যাপনের ছোটখাটো বিষয়গুলো যা হয়তো আমরা নিতান্তই অবহেলায় দূরে ঠেলে রাখি, কিংবা আটপৌরে বিষয়ের আওতায় ফেলে রাখি সেইসব বিষয়গুলোই মূলত ‘কথার আলপনা’ বইটির প্রধান অলংকার। মাঝে মাঝে গোলাপ, রজনীগন্ধার মতন দামি ফুল নয়, বরং পথের ধারে ফুটে থাকা দামহীন, গন্ধহীন ফুলগুলোই বেশি কাছে টানে; মেকি করে দেয় দামি ফুলের আভিজাত্যকেও। ‘কথার আলপনা’ বইটির বিষয়বস্ত কিছুটা সেই মাপের যা পাঠককূলকে হয়তো এক অজানা আনন্দের পথ পরিক্রমণের অভিজ্ঞতা দেবে।