বর্তমানকালে যে ধর্মমতটি সনাতনধর্ম বা হিন্দুধর্ম নামে পরিচিত-এর নিদির্ষ্ট বা সুসংহত কোনো 'ক্রিড' (Creed-ধর্মমত,ধর্মবিশ্বাস) নেই, নেই নিদির্ষ্ট কোনো প্রচারকও। বহুজনের বহু মত, তত্ব ও দর্শনকে ধারণ করে এ-ধর্মমতের বিকাশ। এ-ধর্মের প্রধান গ্রন্থ বেদ-মনুসংহিতা বা পুরাণ-সবখানে একই সুর ও লয়ে চতুর্বর্ণ তত্ব অভিব্যক্ত হয়েছে, যে-তত্বের মূলকথা-সৃষ্টিকর্তা ব্রাহ্মণ, বাহুদ্বয় থেকে ক্ষত্রিয়, উরু থেকে বৈশ্য এবং পদ থেকে শূদ্রের জন্ম হয়েছে। কাজেই সৃষ্টিকর্তার বিধান-অনুযায়ীই 'ব্রাহ্মণ' হলো মানবজাতির মধ্যে শ্ৰেষ্ঠ এবং অন্য সকলের পূজ্য; এই ধর্মমতের যারা প্রবর্তক, প্রচারক ও শাস্ত্র-রচয়িতা- চতুর্বর্ণ তত্ব-অনুযায়ী, এরা সবাই ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ভুক্ত বিধায় এ-ধর্মমতে ব্রাক্ষণকে কখনো দেবতার পর্যায়ে, কখনো বা দেবতারও পূজ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। চতুর ব্রাহ্মণ্যবাদ যুগ-যুগান্তরব্যাপী ধর্মের দোহাই দিয়ে কিভাবে অপরাপর সম্প্রদাইয়ের উপর প্রভুত্ববিস্তার করেছে-এই ঘটনাক্রমেরই বস্তুনিষ্ঠ বিবরণ পাওয়া যাবে ধর্ম, ধর্মতন্ত্র ও ব্রাহ্মণ্যবাদ গ্রন্থে।