এক ঝোড়ো বৃষ্টির দিনে জরুরি কারণে নন্দিতাকে ঘরের বাইরে বের হতেই হয়। দৈবক্রমে দেখা হয়ে যায় এক আগন্তুকের সাথে। পুরো সময়টায় লোকটা ওর সঙ্গে ছিল। এরপর আরও বেশ কয়েকবার তাদের দেখা হয়, কথা হয়। তারা প্রেমে পড়ে পরস্পরের। কিন্তু অজ্ঞাতপরিচয় আগন্তুক আসলে কে? মাতৃ অন্তঃপ্রাণ ফারহানের সাথে প্রেয়সী অহনার ভালোবাসা এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন। তাদের পরিণতি কী?
রহস্য ময়তার সাথে রোমান্টিকতা বেশ লাগলো।
Read all reviews on the Boitoi app
মেঘদূত আর আকাশলীনা ভালোবাসায় বুঁদ হয়ে থাকুক।
ইদানিং আমি মনে শান্তি পাই না কিছুতে । মনে হয় কোথাও একটা হারিয়ে যাই । যেখানে কিছু থাকবে না । শুধু থাকবে কিছু নিঃশব্দতা । আর থাকবে চুপচাপ বসে থাকার মতো অগণিত সময় । এই শান্তি না পাওয়া মুহূর্তগুলোতে ভীষণ কষ্ট পেতে পেতে হাঁসফাঁস করতে থাকা মুহূর্তগুলোতে মনে হয় আমার জন্য দুদণ্ড শান্তি হিসেবেই আসে প্রিয় গল্পগুলো । যতটুকু সময়ে পড়ি, ততটুকু সময়ে আমাকে শান্তি দিয়ে যায় । সুখের আবছায়া ছিটিয়ে দিয়ে গিয়ে অন্তত আহ্বান জানিয়ে রাখে ভালো থাকার । হয়তো মন খারাপের সুরে কেউ ডাকে না, কিন্তু গল্পগুলো ভালো লেগে গেলে পড়ার শেষে রেশ যতটুকু সময়ে থাকে ততটুকু সময়ে একটু ভালো লাগলেও এরপর মনে হয় শান্তি আসলে কোথাও নেই । ভীষণ একা একা লাগা এই পৃথিবীতে আসলে শান্তি আমার জন্য ওই দুদণ্ড হয়ে থাকা গল্পগুলোই । ওই গল্প, উপন্যাসের প্রতিটি শব্দই আমাকে শান্তি দিয়ে যায় । যদি কখনও গল্পে কষ্টও জমা থাকে, তবুও তা মনে শান্তি দিয়ে যায় । এই শান্তি আমার আজন্মকাল পাওয়া হবে না, কিন্তু যতটুকু সময় তাই পাওয়া হয় ততটুকুই আঁকড়ে নেই । আর বলতে থাকি, এটাই আমার সঙ্গী থাক । এই গল্পের পটভূমিটা অসাধারণ । বেশ অনেকগুলো দিন পরে একটা অন্যরকমের অসাধারণ একটা গল্পের সাক্ষী হলাম । এই পটভূমিটা যদি ঠিকমতো ব্যবহার করে সাজানো যায় এবং উপস্থাপন করার চেষ্টা করা যায় তাহলে এই গল্পটা ভালো লাগার মতো একটা জায়গা তৈরি করবেই । এটা আমার মনে হচ্ছিল খুব । এবং ঠিক তাই হয়েছে । এই অসাধারণ একটা পটভূমি যেভাবে ব্যবহার করা হয়েছে এবং উপস্থাপন করার পাশাপাশি দারুণ একটা আবছায়া রাখা হয়েছিল যা অসাধারণ ছিল । একই সমান্তরালে এই পটভূমিতে দুই ধরনের প্রেক্ষাপট বয়ে গিয়েছে ঘটনাপ্রবাহে । যা একই সুরে গাঁথার জন্য যেভাবে সংযোগ রাখা হয়েছে তা বেশ দারুণ চেষ্টা ছিল । এছাড়াও গল্পের সবথেকে ভালো দিক হলো আবহ তৈরি । আবহ সৃষ্টিতে দারুণ এক মুগ্ধতা এসেছে আমার । দুই ধরনের আবহ সৃষ্টি করা হয়েছে যেন । মূল পটভূমিতে এক অন্যরকম আবহ এসে জড়ো হয়েছিল পটভূমিতে । আর পার্শ্ব মুহূর্তগুলোতে অন্য আরেকরকম আবহ এসে ছিল । শেষের দিকে গিয়ে একই সাথে মিশে যাওয়ার জন্য যে চেষ্টাও তাও দারুণ ছিল । এই গল্পের সবথেকে ভালো লাগার দিক হলো, চরিত্র গঠন । যেভাবে গল্পের প্রয়োজনে পটভূমির সাথে খাপ খাওয়াতে গিয়ে গল্পের চরিত্রগুলোকে গঠন করে এবং তা অনুযায়ী উপস্থিতি দেয়া হয়েছে তা বেশ দারুণ ছিল । কোথাও একটা গল্পে ভারসাম্যপূর্ণ আবহের মেলবন্ধন ঘটিয়েছে যেন । নন্দিতা চরিত্রটির গঠন বেশ ভালো ছিল । দারুণ ভাবে যেন কোথাও একটা অদ্ভুত সৌন্দর্য দিয়েছে । মেঘদূত চরিত্রটির গঠন এবং উপস্থিতি বেশ অসাধারণ ছিল । দারুণ এবং অন্যরকম বলেই বোধহয় তার চরিত্রটির গঠন এই গল্পে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল । কারণ গল্পে ভারসাম্যপূর্ণ আবছায়া তৈরি করতে এই চরিত্রটির প্রয়োজন ছিল । এছাড়াও হৃদিতা চরিত্রটির গঠন বেশ ভালো । তার চরিত্রে আত্মসম্মানবোধ, মানসিকতা বেশ ভালো লাগার মতো ছিল । এছাড়াও ফারহান এর উপস্থিতি এই গল্পে দারুণ ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে । বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের, সবাইকে সাহায্য করার মনোভাব নিয়ে থাকা মানুষটির সুখের প্রয়োজন ছিল খুব । এছাড়াও গল্পে উঠে এসেছে অহনা, ফিরোজা, আশফাক গল্পের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চরিত্রগুলো । এই গল্পে দারুণ কিছু মুহূর্ত আছে যেগুলো আমার বেশ প্রিয় । গল্পে আছে বৃষ্টির দিনের কিছু নিঃসঙ্গতা, কিছু এলোমেলো পথচলা । যে মুহূর্তগুলো দারুণ প্রিয় । ওই সময়ের কিছু শব্দচয়ন, পরিস্থিতির বর্ণনা করার চেষ্টা গল্পে দারুণ ভাবে সাজানো হয়েছে । এছাড়াও গল্পে আবহ সৃষ্টি তৈরি করার জায়গায় যেন অদ্ভুত এক সুরের খেলা ছিল । যার মূর্ছনায় যেন পৃথিবীতে ভালোলাগা কাজ করেছে কোথাও একটা । এই গল্পে মনস্তাত্ত্বিক কিছু দৃষ্টিভঙ্গি এবং আবহ এসেছে যা গল্পের পটভূমিতে দারুণ ভাবে ব্যবহার করে গল্পে এক অদ্ভুত মায়া তৈরি করেছে । এক ধরনের কেমন একটা অনুভব যেন! কোথাও একটা আবেশিত করে দেওয়া আবছায়া! বৃষ্টিদিনের আগন্তুক যেন একরাশ ভালোবাসা নিয়ে অচেনা আগন্তুক হয়ে থেকেই কোথাও একটা মনে মনে যেন চেনা হয়ে রূপ নেয় । রূপ নেয় অদ্ভুত এক সাক্ষীর, অদ্ভুত এক ভালোবাসার গল্পে । যে গল্পে পৃথিবীজুড়ে সৌন্দর্য নামে, মাতাল হাওয়ার । লেখক নুসরাত জাহান লিজা এর লিখনশৈলীর সাথে আমার তেমন একটা পরিচয় নেই । কিন্তু এই পটভূমিটা যেভাবে তিনি ব্যবহার করেছেন তা বেশ ভালো চেষ্টা ছিল । হয়তো এই গল্পে আরেকটু গভীরতা আনলে গল্পটা আরো অসাধারণ দারুণ কিছু রূপ নিতে পারতো । গল্পে খানিকটা গভীরতা কম থাকলেও এই গল্পের সবকিছুই যেন বেশ ভালো । মুগ্ধ করে দেয়ার মতো । তবে গল্পে বানান ভুল বেশ অনেকগুলো । বানান ভুল থাকলে এরকম একটা দারুণ পটভূমিতে মনোযোগ দিতে কখনও কখনও দেরি হয়ে যায় । পরবর্তীতে এই দিকে খেয়াল রাখার চেষ্টা করা বেশ ভালো পদক্ষেপ । লেখকের পরবর্তী লেখার জন্য শুভকামনা রইলো । রেটিংঃ ৪.৮/৫
রিভিউ দেখে নিয়ে নিলাম,পড়ার পরে আবার কমেন্ট করবো
আপু, "বৃষ্টিদিনের আগন্তুক" পড়া শেষ। তোমার প্রেজেন্টেশন আমার বরাবরই পছন্দের এটা তুমি জানো। তাই সেটা নিয়ে কিছু না বলি। উপন্যাসটা মনে হচ্ছে শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেলো। আর একটু বড় করে লিখতে। যতসময় মেঘদূত চরিত্রটা ছিলো তত সময় তো দারুণ লেগেছে। পরে খারাপ লেগেছে সেটা বলছি না কিন্তু হেয়ালি করে কথা বলা প্রেমিক বোধহয় পড়ার জন্য সেরা প্রেমিক। আমার বয়সের দোষও হতে পারে। তুমি সাইকোলজিক্যাল প্রবলেমগুলো খুব ভালো লিখতে পারো তার প্রমাণ এটা। আমি তো ভাবতেই পারেনি মেঘদূত কোনো হ্যালুশিলেসন হবে। তবে ফারহানের মানিয়ে নেয়া, নিজের মনটাকে রিয়ালাইজ করতে পারার ব্যাপারটা সুন্দর। সবই ভালো শুধু অভিযোগ একটা। মেঘদূতকে খুব অল্প সময় রাখলে। আর শেষ বা করলে কেন! ভীষণ ভালো লেগেছিলো। ওকে আরেকটু বড় কেন করলে না!
অসাধারণ। এরকম কল্পজগতীয় প্লট পড়তে দারুণ লাগে। এই অনুভূতিটা দারুণ। মিষ্টি আবার বিষাক্ত সুখের মতো। কারণ ব্যক্তিটি যখন বাস্তবের মাটিতে আচড়ে পড়ে বুঝতে পারে তার কল্পনা টা মিথ্যা তখন এতোদিনের সুখকর অনুভূতি বিষাক্ত হয়ে ধরা পড়ে। খুব ভয়ে ছিলাম শেষ পর্যন্ত কি হবে। কিন্তু সমাপ্তিটা বরাবরই তুমি মনোমুগ্ধকর করে তুলে ধরো। ফেসবুকে মন্তব্য করেছিলাম। বান্ধবিকে গিফট দিতে গিয়ে আজকে হুট করে বইটই এ রেটিং দিতে ইচ্ছা হলো। তাই এই আনাড়ি হাতের ছোট্ট মন্তব্য
অসম্ভব সুখপাঠ্য একটি গল্প। টুইস্টটা দারুণ লেগেছে। ভাষার ব্যবহার চমৎকার লেগেছে। লেখকের আরো ইবুক আশা করছি।
বৃষ্টিদিনের আগন্তুক পড়লাম। ভালো লাগলো। আপনার গল্পে নারী চরিত্রগুলো অনেক ভালোবাসা দিয়ে তৈরী করেন আপনি। তাদের মন আর চোখের সৌন্দর্যে চারপাশ সুন্দরে সুন্দরে ভরে উঠে। আর মা চরিত্রগুলোয় এত মায়া দেন আপনি! ফারহানের মা ফিরোজা বেগম কখন যে পাঠকের মায়েদের সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে যায় টের পাওয়া যায় না। ভালো থাকবেন। শুভ কামনা রইলো।
ভীষণ সুন্দর
নতুন লেখিকা হিসেবে নুসরাত জাহান লিজা আপুর সব লেখাই ভীষণ ভালো।তবে মেঘদূত আর আকাশলীনার গল্পটা তার অন্য লেখার থেকে যদিও আলাদা,তবে খুবই পরিপাটি এই লেখাটি সকলের মন ছুঁয়ে যাবে।শেষ টা এতো সুন্দর!!❤️