সালাম ও শুভেচ্ছা নিন। ''আল মাহমুদ ও হুমায়ূন আহমেদের জরুরি বৈঠক'' আমার লেখক জীবনের স্বপ্নের কাজ। এটি আমার ২২তম গ্রন্থ। উপন্যাস হিসেবে পঞ্চম। ঘুড়ি উড়াবার বয়স থেকে আমি আল মাহমুদের লেখার ভক্ত। অন্যদিকে, হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যের নন্দন কাননে প্রবেশ করি কলেজ লাইফে। তাঁরা দু'জনই বাংলা ভাষার অসংখ্য মানুষের কাছে রূপকথার রাজপুত্রের মতো। তাদের নিয়ে যে বিপুল উচ্ছ্বাস আছে, তেমনি সমালোচনা ও নিন্দার কাঁটাও আছে। সমালোচনা থাকতেই পারে, ব্যক্তিগতভাবে সংস্কারের উদ্দেশ্যে করা সকল সমালোচনাকে আমি সুস্বাগত জানাই। কিন্তু সমালোচনা নামে চরিত্রহনন এবং অপবাদ দেওয়া, এক ধরনের মানসিক বিকারগ্রস্ততা ছাড়া আর কিছু নয়। বাংলাদেশে দু'টো শব্দ খুব প্রচলিত। ধর্মান্ধতা এবং নাস্তিকতা। এই দু'টো তকমা অন্যের গায়ে সেঁটে দিতে পারলে আমরা অনেকে আনন্দিত হই এবং নিজে জাতে উঠে গেছি বলে অনুভব করি। মূলত মতান্ধ মানুষ তৈরি করে এই সমাজকে শান্তি, প্রগতি ও মূল্যবোধের জায়গা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চান, তারাই এসব বিভেদ দেয়াল তৈরি করেন। এই উপন্যাসের মধ্য দিয়ে আমি বিভেদের উস্কে দেওয়া অনুসঙ্গের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছি। নিজের অনুভূতিকে ঢেলে দিয়ে সামনে এনেছি সমাজ, রাষ্ট্র এবং বিশ্বের অসঙ্গতিকে। প্রসঙ্গক্রমে এখানে এসেছে গাম, শহর এবং আন্তর্জাতিক বিষয়। প্রযুক্তি এখানে ধরা দিয়েছে অন্যরকম আলোয়। প্রিয় পাঠক, আমরা যে সময়ে দাঁড়িয়ে আছি, তার থেকে ১০০ বছর সামনে বাড়িয়ে এই উপন্যাসের গল্প বলার চেষ্টা করেছি আমি। 'আল মাহমুদ ও হুমায়ূন আহমেদের জরুরি বৈঠক' উপন্যাসটি মূলত আমার মৃত্যুর পরের ঘটনা নিয়ে। শ্রদ্ধেয় মরহুম দুই সাহিত্যিকের মৃত্যুর ১০০ বছর এবং আমার মৃত্যু ৭০ বছরের সময়কে এখানে তুলে ধরেছি। যৌক্তিকভাবে প্রাযুক্তিক পরিবর্তনগুলো এখানে সাহিত্যে ভাষায় সামনে এসেছে। গল্পের প্রয়োজনে হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর আগে শেষ লেখা নবীজী'র অংশটুকুও তুলে ধরেছি। একজন ক্ষুদ্র লেখক হিসেবে চেষ্টা করেছি মাত্র, বিবেচনা করার দায়িত্ব আপনাদের। মানুষের নেতিবাচক বোধ পরিবর্তনের জন্যই মূলত লিখি। অব্যাহতভাবে এ প্রচেষ্টা প্রবহমান থাকবে। সবার আলোময় জীবন প্রত্যাশা করি। প্রিয় পাঠক, বইটি আপনাদের ভালোবাসা পেলেই সার্থকতা। প্রকাশক এবং লেখক শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ ভাইয়ের প্রতিও উপসংহারহীন কৃতজ্ঞতা। যাদের স্কেচ এবং লেন্সের ফ্ল্যাশে দুই কিংবদন্তির ফটোগ্রাফগুলো প্রাণ পেয়েছে, যে ছবিগুলো বইয়ে ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো গুগল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, অধিকাংশ ছবিতেই ক্রেডিট উল্লেখ ছিল না, ফলে নাম উল্লেখ করা অসম্ভব ব্যাপার। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি অন্তরালের সব চিত্রগ্রাহক ও অঙ্কন শিল্পীর প্রতি।