ফিতনা, এই নামটি শুনেই চমকে উঠলেন, চমকে উঠার কিছুই নেই। এটা তো মহা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভবিষ্যৎবাণী। শেষ যুগটা হবে ফিতনার যুগ। এখন আমরা সেই যুগেই দিনাতিপাত করছি। ফিতনার এই কালো থাবায় মানুষ একেবারেই কাণ্ডজ্ঞানহীন হয়ে পড়েছে। সবাইকে গোলক ধাঁধায় ফেলে দিয়েছে। ফিতনার এই ভয়াবহতা দিন দিন এতোই বেড়ে চলেছে যে, বিশেষ থেকে সাধারণ কেউই এর থেকে নিরাপদ নয়। এখন এই নাজুক পরিস্থিতিতে ফিতনা থেকে কিভাবে বাঁচবো, পরিত্রাণের উপায় কি? লেখক বেশ গোছালোভাবে এখানে উপস্থাপন করেছেন। লেখক এখানে ফিতনাকে দু’ভাগে ভাগ করেছেন। ইলমী ফিতনা এবং আমলী ফিতনা। কোন্ ফিতনা কিভাবে প্রতিহত করতে হবে সেটাও অত্যন্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। পাঠক! এ বইয়ের একেকটি লাইন যখন পড়বেন তখন মনে হবে এই ফিতনাগুলো প্রতিনিয়তই ঘটছে আমাদের সমাজে। যেমন-মনে করুন, দলের মধ্যে মতবিরোধ করা, অবাধে ফটো তোলা, বস্তুবাদীদের বস্তুবাদী ফিতনা, বিদ্বান ও কলামিস্টদের ফিতনা, নারী স্বাধীনতা ও বেপর্দার ফিতনা ইত্যাদি। এ জাতীয় অনেক বিষয় এখানে উল্লেখ করছেন। মোটকথা লেখক এ কিতাবে বর্তমান সমাজের যত অঙ্গনে ফিতনা ঢুকে পড়েছে সেগুলো সম্পর্কে আমাদেরকে অবগত করেছেন এবং এর থেকে উত্তরণের উপায় কি হতে পারে তাও বিশেষ ভঙ্গিমায় ব্যক্ত করেছেন। জাহেলী যুগের কথা আমরা জানি, নারীর প্রতি অবিচার এতটাই চরমে পৌঁছে ছিল যে, পিতা নিজের কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দিত। কন্যা সন্তানের প্রতি যে আচরণ আমরা সমাজে দেখছি, তা কি হাদীসে বর্ণিত সেই পঁচন ও অশুভ প্রত্যাবর্তনেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে? অন্তত পুত্র সন্তানের জন্মে আমরা যতটা খুশি হই, কন্যা সন্তানের বেলায় কি ততটা খুশি হতে পারি? এই অসুস্থ মানসিকতার প্রতিকার না করে কি নারীর প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা রোধ করা সম্ভব? তা ছাড়া রাসূলুল্লাহ সা. কন্যা সন্তান প্রতিপালনে যে মহা সুসংবাদ দিয়েছেন, সেগুলো জানলে কন্যা সন্তানের বাবারা নিজেদেরকে সত্যিই গর্বিত মনে করবেন। আর যারা এখনও এই নেয়ামত লাভে ধন্য হয়নি, তারা নিশ্চয়ই কন্যা সন্তানের আশায় বুক বাঁধবেন।