চার্লস বুকোস্কি (১৯২০-১৯৯৪), জার্মান বংশোদ্ভূত আমেরিকান কবি। কবিতা ছিলো যার কাছে যাপিত জীবনের সমস্ত জঞ্জাল থেকে মুক্তির পথ। ব্ল্যাক স্প্যারো প্রেসের প্রকাশক জন মার্টিনকে একদিন লেখেন, “আমার কাছে দুটি রাস্তা আছে, হয় এই পোস্ট-অফিস এ কাজ করতে করতে আমি পাগল হয়ে যাবো, আর নয়তো চাকরি ছেড়ে ফুলটাইম লেখক হয়ে উপোস থাকবো। আমি উপোস থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম।” এই জন মার্টিনই প্রকাশ করেন বুকোস্কির প্রথম বই, ‘’পোস্ট অফিস”, বুকোস্কির বয়স তখন পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই। এই বইয়ের পরে বুকোস্কিকে আর উপোস থাকতে হয়নি বরং লেখক হিসেবে অকল্পনীয় সফলতা নিয়ে বুকোস্কির ছয়টি উপন্যাস, কয়েক’শ ছোটগল্প ও কয়েক হাজার কবিতা প্রকাশ পায় ষাটটিরও অধিক বইয়ে, বিক্রি হয় প্রায় বিশ লক্ষ কপি। কিন্তু এই গগনচুম্বী সফলতা সত্ত্বেও বুকোস্কি যে জায়গায় বাকি সবার চাইতে আলদা তা হলো তার জীবনযাপনের ধরন। অর্থযোগ কিংবা জনপ্রিয়তা কোনকিছুই বুকোস্কির জীবনযাপনের ধরনকে বদলাতে পারেনি। বুকোস্কির লেখাও ছিলো তার জীবনযাপনের মতই আড়ম্বরহীন, লেখায় অতিনান্দনিকতা, সুশীলতা বা শালীনতার কোন পর্দা তিনি রাখেননি। যা বলতে চেয়েছেন রাখ ঢাক বাদে অকপটে বলেছেন, বলেছেন অশ্লীলভাবেও। তিনি বুকোস্কি বাদে অন্যকিছু হতে চাননি, রঙ মাখতে চাননি, জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে মেকি চেহারা আঁকেননি। এই বইয়ের মাধ্যমে পাঠক একজন ব্যতিক্রমী কবির জীবন ও তার কবিতার সাথে পরিচিত হবেন।