১৮৯৬ সালে প্রকাশিত দ্যা জুইশ স্টেট বইটি ছিলো থিওডর হার্জেলের একটি যুগান্তকারী কাজ, যা পৃথিবীর বিভন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ইহুদিদের দীর্ঘ দিনের আকাঙ্খা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে বস্তুনিষ্ঠ রূপরেখা প্রণয়ন করে। স্বাধীন-সার্বভৌম ( ইসরাইল) রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ব্যতীত যে ইহুদি বিতর্কের অবসান ঘটানো অসম্ভব, তা এই বইয়ে তিনি আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। তথাপি নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ইহুদিদের সেই ভূমিতে একত্রিত করা মোটেও সহজ কাজ ছিলো না। সিংহভাগ গরিব ইহুদি নতুন ভূমিতে জড়ো হতে রাজি হলেও ধনি ইহুদিরা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবে, তা ছিলো সহজেই অনুমেয়। কেননা নতুন ভূমিতে রাতারাতি চাইলেই বসত-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, হাঁসপাতাল, বিনোদন-কেন্দ্র, ধর্মীয় সিনেগাগ, ইত্যাদি গড়ে তুলা সম্ভব নয়। তথাপি, এতসব প্রতিকূলতাকে পাশ কাটিয়ে ঠিকই প্যালেস্টাইনের বুকে নতুন ভাবে ইসরাইল রাষ্ট্র গড়ে উঠেছে। ধনি-গরিব-মধ্যবিত্ত বিভন্ন শ্রেণীর ইহুদি জনগণে আজ তা সয়লাব হয়েছে। গড়ে উঠেছে অত্যাধুনিক সব ইমারত, গবেষণাগার, ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বিরাণ ভূমিতে এতসব গড়ে তুলতে প্রথমেই যা প্রয়োজন, তা হলো প্রখর কল্পনাশক্তি, দৃঢ়চেতা মনোভাব, এবং বস্তুনিষ্ঠ রূপরেখা। থিওডর হার্জেলের দ্যা জুইশ স্টেট বইটি এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয়ে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক অসংখ্য ইহুদিকে সে সময় আলোরিত করে। তার উল্লেখিত পরিকল্পনার বহু কিছু পরবর্তী সময়ে অনুসৃত হয় নতুন ইসরাইল রাষ্ট্রে। চলুন প্রবেশ করা যাক দ্যা জুইশ স্টেট গ্রন্থটিতে। কীভাবে প্রখর কল্পনাশক্তি ও দৃঢ় সংকল্প একটি যাযাবর জাতিকে একটি নতুন রাষ্ট্র গঠনে সাহায্য করল, বইটি দীর্ঘকাল তার সাক্ষ্য হয়ে থাকবে।