নীরব চারদিক। সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। শুধু একজনের চোখে কোন ঘুম নেই। চোখ বন্ধ করে অপেক্ষায় আছে সে। অপেক্ষায় আছে শয়তানের। ছোট রুমের ভেতরে সম্পূর্ণ নগ্ন গায়ে বসে আছে সে। একটা হাঁটু ভাজ করে অপর হাঁটুর উপরে তোলা, একটা হাত উপরের দিকে উঠানো। গভীর ধ্যানে আছে সে। পুরো ঘর অন্ধকার হয়ে আছে। ঘরের ভেতরে ছোট একটা জানালা আছে শুধু। সেই জানালা দিয়েও কোন আলো আসছে না। হঠাৎ করে রুমের ভেতরে কেমন এক লালচে আভা ছড়াতে শুরু করলো। সেই আভা চোখে দেখতে না পেলেও অনুভব করছে সে। আসছে, প্রভু আসছে। তার ডাকে সাড়া দিয়ে আসছে প্রভু। চোখ মেলে সে দেখতে পেলো সেই লাল আভাকে। নত হয়ে মাটিতে ঠেকালো মাথা। সমর্পণ করে দিলো নিজেকে প্রভুর পদতলে। কিছুক্ষণ পর সেই লালচে আভা মিলিয়ে গেলো। অন্ধকার এসে আবার গ্রাস করে নিলো পুরো রুমটাকে। মাটি থেকে মাথা তুললো সে। একটা কাগজ পড়ে আছে মাটিতে। সেটা হাতে নিলো, কিন্তু অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না কি লেখা আছে সেখানে। দ্রুত সে ছুটে গেলো তার বিছানার দিকে। তোষকের নিচ থেকে বের করে আনলো টর্চ। সেটা জ্বালিয়ে আলো ফেলে দেখতে লাগলো কাগজটা। তার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। পড়া শেষ করে কাগজটা সে ভাজ করে তোষকের ফুটো দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দিলো। তারপর বিছানার উপরে রাখা লুঙিটা পরে নিয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়লো সে। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে নিলো এবং বলা চলে সারাদিন এক প্রকার চুপচাপই থাকলো সে। কারও সাথেই কোন প্রকার কথা বার্তায় গেলো না। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথেই নিজের রুমের মেঝেতে বসে পড়লো।