'মেমোরিজ অফ মাই মেলানকলি হোরস' গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের নবতম উপন্যাস। দশ বছর বিরতির পর ২০০৪ সালে প্রকাশিত। অনেকদিন অসুস্থ অবস্থায় কাটাবার পর লেখা। কথা ছিল দু'খন্ডে আত্মজীবনী লিখবেন। 'ভিভির পারা কনতারালা'য়-তো শুরুও করেছিলেন। কিন্তু না-উপন্যাসই পেলাম তাঁর কাছ থেকে। যে রাজনীতি তাঁর প্রিয়, যে ইতিহাস তাঁর অবলম্বন, যে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ তাঁর অন্বিষ্ট, যে প্রতিবাদ তাঁর প্রশ্বাস সেখান থেকে যেন সরে এলেন। বেশ্যালয়কেন্দ্রিক এক বৃদ্ধ সাংবাদিকের মৃত্যুছায়াচ্ছন্ন নিঃসঙ্গ জীবনের অন্তিম যন্ত্রণা ও স্বাধীন বাসনাকে যেন পর্ণোগ্রাফিক কাব্যময়তায়, ভাবালু দার্শনিকতায় স্পষ্টরেখ ছবির মতো তুলে ধরলেন। ক্যারিবিয়ান রূঢ়তা অতিক্রম করে তাহিতি দ্বীপের আগ্নেয় সিক্ততায় বুঝিবা বড় হয়ে উঠল। উগ্র ঘৃণার দাম্ভিকতা থেকে প্রেমের নগ্ন রোম্যান্টিক সৌন্দর্যলোকে উপনীত হলেন তিনি। তাহলে, মার্কেজ কি ক্লান্ত, ইতিহাসের ভার টেনে টেনে অবসন্ন? তাই মনোবিকলনের, প্রেমের, যৌনগর্ভ বিষাদের একখানি আত্মকথনমূলক উপন্যাস রচনা করে ফেললেন যার পরিকল্পনা করেছিলেণ দুই দশকেরও আগে- '....যে বইটি ফিরে আবার পড়লাম সেটি হল 'দ্য হাউজ অফ স্লিপিং বিউটিজ।' লেখক ইয়াসুনারি কাওয়াবাতা। তিন বছর আগে বইটি পড়ে থ হয়ে গিয়েছিলাম এবং এখনও আমার বিশ্বাস বইটি চমৎকার। কিন্তু এই মুহূর্তে বইটি আমার কাজে এল না। কারণ, আমার জানার বিষয় ছিল বৃদ্ধবৃদ্ধাদের যৌন আচরণ সম্পর্কে। যে জাপানি বইটির কথা বললাম, 'তাতে যে সব বৃদ্ধবৃদ্ধাদের কথা রয়েছে তারা সব বিচিত্র সেই জাপানি ব্যাপার-স্যাপারের মতোই-ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের যৌন আচরণের সঙ্গে কিছুমাত্র সম্পর্ক নেই। একদিন খাবার টেবিলে কথাটা পাড়লাম আমার ছেলের সামনে। তাকে জানতাম খুব বাস্তবানুগ। সে বলল, 'দাঁড়াও, আর কয়েকটা বছর অপেক্ষা করো, তোমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই সব জানতে পারবে।'