ছেলে বড় হল। পাঁচ বছরে পড়ল গদাধর। কামারপুকুর গ্রামের লাহাবাবুদের বাড়ির নাটমন্দিরে পাঠশালা। বাবা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় ছেলে গদাধরকে সেই পাঠশালায় ভর্তি করিয়ে দিলেন। কিন্ত্ম পড়াশোনায় খুব বেশি মন নেই গদাধরের। শুধু বাংলাটা পড়তে ভাল লাগে। অংক কষতে গেলেই মাথা গুলিয়ে যায়। বামুনের ছেলে। ছোটবেলাতেই মুখে মুখে শিখেছে দেবদেবীর প্রণাম মন্ত্র। সেগুলো কিন্তু সে বেশ গড়গড়িয়ে বলে যেতে পারে। তার কিছুদিন পরেই রামায়ণ পড়তে পারে সুর করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গলার সুর এবং বলার ভঙ্গিও তার সুন্দর হয়েছে। তাই মধুযোগীর বাড়িতে তার রামায়ণ পড়া শুনতে ভিড় জমে যায়। একদিন বিকেলবেলা সে রামায়ণ পাঠ করছে। বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও শুনছে মনোযোগ দিয়ে। কাছেই আমগাছের ওপর বসে ছিল একটা হনুমান। সে লাফ দিয়ে ঠিক গদধরের কাছে এসে পড়ল। তারপর পা জড়িয়ে ধরল গদাধরের। হইচই করে উঠল সবাই। কেউ বা ভয় পেয়ে উঠে চলে গেল। কিন্তু গদাধর একটুও নড়ল না। সে হনুমানের মাথায় গায়ে হাত বুলিয়ে দিল। বুঝি শ্রীরামচন্দ্রের আশীর্বাদ পেয়েই খুশী হয়ে রামভক্ত হনুমান আবার লাভ দিয়ে গাছে উঠে গেল।