‘আমারে একটা পুতুল আইনা দিবা?’ ‘পুতুল! পুতুল দিয়া তুমি কী করবা?’ ‘তুমি তো কাজের লাইগ্গা এদিক সেদিক চইল্লা যাও। একা একা এতো বড় বাড়িতে আমার ভাল্লাগে না। পুতুলডা লইয়া আমি সারাদিন থাকমু। হাসমু, খেলমু, আনন্দ করমু। অনেক দিন তো অইল, এবার আমারে একটা পুতুল দাও না।’ ‘কই তুমি একা? বাড়িতে তো কত মানু আছে।’ ‘তারপরও, আমার একান্ত একটা পুতুল লাগবে!’ রূপক এবার বুঝতে পেরে বলল, ‘ওরে, আমার গিন্নি সোজাসুজি কইলেই তো পারো, ঘরে একখান নতুন মেহমান লাগবে। এতো প্যাঁচাইয়া কওয়ার কী আছে!’ লজ্জার রেখা কিছুটা কমিয়ে স্নেহা বলল, ‘বুঝতেই যহন পারছো, দাও এবার একখান নতুন মেহমান আইন্না দাও।’ ‘হ, আমিও তাই ভাবছি। ম্যালা দিন তো অইল, এবার একটা সোনামণি দরকার। তয় আর কিছুদিন অপেক্ষা করো, সময় অইলেই ফুল ফুটামু।’ খুশিতে স্নেহার মনটা ভরে গেল। ঘরে নতুন অতিথি আসবে। হাসবে, খেলবে, নাচবে—কী আনন্দ! স্কুলে যাবে, পড়াশোনা করবে। স্কুল থেকে ফিরে এসে মা বলে ডাকবে। তখন শত কাজ ফেলে রেখে পুতুলটাকে কোলে নিয়ে আদর করবে। ভাবতেই লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে স্নেহা। সেদিনের সেই ছোট্ট মেয়েটা মা হবে। তার কোলেও ফুটফুটে একটা সোনামণি থাকবে। কিন্তু আবার মন খারাপ হচ্ছে এই ভেবে, আর কত দেরী! ইচ্ছে করছে আজই সোনামণির সোনামুখ খান দেখতে!