১৮৪৫ সালের মে মাস থেকে মুন্সীগঞ্জ ঢাকা জেলার একটি মহকুমা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। মোগলদের প্রথম দিকের কয়েকটি থানার একটি হলো মুন্সীগঞ্জ থানা। বর্তমান মুন্সীগঞ্জ হলো বৃহত্তর বিক্রমপুরের অংশ বিশেষ। আর ১৯৮৪ সালের ১লা মার্চ থেকে মুন্সীগঞ্জ “জেলায়” উন্নীত হয়। মুন্সীগঞ্জ সদর, গজারিয়া, টঙ্গীবাড়ি, সিরাজদিখান, লৌহজং, ও শ্রীনগর এ ৬টি উপজেলার সমন্বয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা। বাংলাদেশের প্রত্ন ও ইতিহাস সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলোর মধ্যে মুন্সীগঞ্জ অন্যতম। পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতি এ জেলার ভৌগলিক প্রাচীর হিসেবে নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে শতাব্দির পর শতাব্দি। ইতিহাস ঐতিহ্যের লীলাভূমি মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর। উপমহাদেশের এ জনপদে শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি সকল ক্ষেত্রেই সমৃদ্ধ। নদী বিধৌত মুন্সীগঞ্জ বিক্রমপুরের রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস। পাল, সেন, সুলতানী, পাঠান, মোগল ও ব্রিটিশসহ শাসিত অসংখ্য শাসক গোষ্ঠীর ইতিহাস সমৃদ্ধ মুন্সীগঞ্জ। এছাড়া যুগে যুগে জন্মগ্রহণ করেছেন শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর, বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু, দেশ বন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, দৌলত খান, কবি সৈয়দ এমদাদ আলী, ইব্রাহিম খলিলের মতো মনীষা, যাঁরা উপমহাদেশ খ্যাত ব্যক্তিত্ব। মুন্সীগঞ্জ জেলার রামপাল, বজ্রযোগিনী, মামাসার, ধামদ, সুখবাসপুর, টেঙ্গর, ফিরিঙ্গীবাজার, কেওয়ার, মহাকালী, সোনারং, ধামারণ, মধ্যপাড়া, মিরকাদিম, ভাগ্যকুল, শেখেরনগর, পঞ্চসার, আদাবাড়ী, নসঙ্কর, প্রত্ন ও ইতিহাস সমৃদ্ধ গ্রাম। সেই ইতিহাসের বিক্রমপুরের আধুনিক নাম মুন্সীগঞ্জ। এই মুন্সীগঞ্জকে নিয়ে দুর্গনগরী মুন্সীগঞ্জ বইটি লিখেছেন গোলাম আশরাফ খান উজ্জ্বল। মূল্যবান এ বইটি ইতিহাসের নতুন সংযোজন। যারা প্রাচীন বিক্রমপুর ও আধুনিক মুন্সীগঞ্জ নিয়ে জানতে আগ্রহী দুর্গনগরী মুন্সীগঞ্জ বইটি তাদের তৃপ্ত করবে। ---ড. মোহাম্মাদ হাননান