রউফ দেখল, লাল টকটকে বেনারসি শাড়ি পরা একটি মেয়ে অত্যন্ত চঞ্চল ভঙ্গিতে ঘরে ঢুকল। মুখের আদল দেখে বুঝতে পারল, মেয়েটির বয়স খুবই কম। কিছুটা বিচলিত হয়ে জিজ্ঞেস করল, "তুমি টিশা?" টিশা চপলতার সঙ্গে বলল, "আপনার পাশে একটু বসি? শাড়ি পরে হাঁটলে আর দাঁড়িয়ে থাকলে মনে হয়, এক্ষুনি সব খুলে পড়ে যাবে। কী বিশ্রী হবে ব্যাপারটা!" রউফ ভদ্রতার সঙ্গে সাবলীল একটি প্রশ্ন করেছিল, কিন্তু তার পিঠে এমন কথা শুনবে ভাবতেও পারেনি। তারা অপরিচিত, এর আগে কখনো তাদের সাক্ষাৎ হয়নি। মেয়েটির এমন ভাবভঙ্গি দেখে বোঝার উপায় নেই। কোথায় মেয়েটা প্রথমে কাঁপা কাঁপা গলায় সালাম দেবে, সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেবে জড়তার সঙ্গে—তা না, নির্লজ্জের মতো এমন কথা বলে ফেলল। যেন কথার ঝাপটা নয়, দরজা ঠাস করে লাগিয়ে দিল। রউফ বিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। টিশা তার থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে চপল পায়ে এগিয়ে পাশে এসে ধপ করে বসল। কিন্তু এক সেকেন্ডও স্থির থাকল না। পা দোলাতে শুরু করল, আবার হাত নাড়িয়ে চুড়ির রিনিকঝিনিক শব্দ তুলল। রউফের মাথা গরম হয়ে গেল। তার শরীর দপদপ করতে শুরু করল। মনে হলো, এ কী বেয়াদব মেয়ে! চোয়াল শক্ত করে ক্রমাগত ভারি নিঃশ্বাস ছাড়ল সে। টিশা এসব কিছু খেয়াল না করে বলল, "আমার নাম টিশা। আগে-পিছে কিছু নেই, আমি শুধু টিশা। নামটা সুন্দর, তাই না? বাবা রেখেছেন। এই নামের অর্থ হলো বলিষ্ঠ, সাহসী, যার ইচ্ছাশক্তি প্রবল।" রউফ কিছু না বলায় টিশা নিজেই বলতে শুরু করল, "আপনার নাম আমি জানি, ফুপু বলেছেন। মুখে নাম উচ্চারণ করা যাবে না, দাদি বলেছেন। বাঙালি মেয়েরা স্বামীর নাম মুখে আনে না। তাই আমিও আনব না। শুধু নামের অর্থটা বলব—আপনার নামের অর্থ হলো দয়াশীল। কীভাবে জানলাম জিজ্ঞেস করবেন না। থাক, আমিই বলি—গুগলে সার্চ করে জেনেছি।" পা দুলিয়ে, হাত নাড়িয়ে, চোখ পিটপিট করে একটানা কথাগুলো বলে দম নিল টিশা। রউফের শ্বাস-প্রশ্বাস ঘন হয়ে এল। তার নাকের ডগা, কানের লতি, পাতা রক্তিম হয়ে উঠল। রউফ যখন প্রচণ্ড রাগে থাকে, তখন তার নাক-কান লাল হয়ে যায়। টিশা আবার বলল, "আপনি দেখতে জোশ, নামটাও জোশ, আমি ফিদা।" রউফ প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও পরক্ষণে ক্রোধে আর বিরক্তিতে চোখ-মুখ কুঁচকে ফেলল। দাঁতে দাঁত চেপে বলল, "গতরাতে একটি মেয়েকে বিয়ে করেছি আমি। সে আমার বান্ধবী। একজন বিবাহিত পুরুষকে নিশ্চয়ই তুমি বিয়ে করতে চাইবে না?" টিশা খিলখিল করে হেসে উঠল। মাথা দুলিয়ে, মুখে একটু লাজুক ভাব এনে বলল, "আপনার আরও তিনটা বউ থাকলেও আমার কোনো আপত্তি নেই।"
"দারুন একটি গল্প এই আকুলিবিকুলি। সত্যিই মুগ্ধতায় ভরে গেলাম।প্রতিটা চরিত্র এতো সুন্দর করে প্রকাশ করা হয়েছে যে ভাষায় বলে শেষ করা যাবে না।আর সবচেয়ে ভালো লেগেছে টিশা মেয়েটাকে।ওর সদাচরণ, শ্রদ্ধা,ভালোবাসা,অনুভূতি, সততা,গুণগুলো হৃদয়ে লাগার মতো।একজন স্বামীর প্রতি এতোটা ভালোবাসা, বিশ্বাস,ভরসা থাকতে পারে সেটা টিশাকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না।টিশা বাচাল কন্যা হলেও ওর মন ছিলো একদম স্বচ্ছ।কিছু মানুষ আছে ভেতরে কথা রাখতে পারে না,মনের কথা মুখে বলে প্রকাশ করে আনন্দ পায় আর আমার সেরকম মানুষই খুবই পছন্দের। কারণ এরকম মানুষ সবদিক থেকেই সুবিধা পায়।কোনো ভুল পথে যেতে নিলেও কেউ না কেউ এসে সঠিকটা ধরিয়ে দেয়।ওই যে মনের কথার প্রকাশ।সেজন্য টিশাকে আমার প্রচন্ড ভালো লেগেছে। আরেকদিকে রউফ,,ওর চরিত্রটাও ভালো লেগেছে। প্রথমে ওকে খুব খারাপ লেগেছিল।একটু রাগও হয়েছিল রউফের উপর।যে মানুষটা ওকে ধোকা দিলো তার জন্য এতো কিছু। ভালোবাসা বুঝি রউফকে অন্ধ করে রেখেছিল।পড়তে পড়তে একসময় ভেবেছিলাম হয়তো রউফ তার প্রথম প্রেমকেই টেনে নিবে সিদ্ধান্তহীনতার জন্য। যাক শেষমেষ সে তার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে।এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।তবে একসময় রউফের জন্য খারাপও লেগেছে। সিদ্ধান্তহীনতায় যে ভোগে সেই জানে এর যন্ত্রণা কি। আর তামসী,ওকে নিয়ে কিছু বলার নেই। ওর প্রতি আমার খারাপ লাগা, ভালো লাগা কোনো অনুভূতিই হয়নি।শুধু হয়েছে আফসোস।তবে হ্যা তামসীর মৃত্যুতে আমার মন সায় দেয়নি।মেয়েটা একটা বার স্বার্থহীন হয়ে দেখতো জীবনে সুখের অভাব হতো না।আত্যহত্যা সব সমস্যার সমাধান তো নয়।তবুও সেই ভুলের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেক বড় ভুলের পথে পা বাড়ায়।এটাই সবচেয়ে বড় আফসোস। যাই হোক,পুরো গল্পটা পড়ে বেশ ভালো লেগেছে।টিশার আকুলিবিকুলি অনুভূতি আমাকেও আকুলিবিকুলি করে তুলেছিলো।গল্পটা পড়তে পড়তে কখন শেষ হয়ে গেল টেরই পেলাম না।মনে চাইলো আরও পড়তে।সবশেষে বলবো,আকুলিবিকুলি আমায় অনেকটা প্রশান্তি দিয়েছে।অসাধারণ।"
Tisha is a character of simplicity, positiveness and sharpness. Excellent 👌👌👌
Read all reviews on the Boitoi app
দারুন
গল্পটা এত্ত সুন্দর হবে ভাবতেও পারিনি। জান্নাতুল আপুর নায়কগুলো খুবই ব্যাক্তিত্বের অধিকারি। প্রথমদিকে রউফকে আমার চরম বিরক্ত লেগেছিলো। কিন্তু পরে আমি তো ওর ফ্যান হয়ে গেছি। জাস্ট অসাধারণ। প্যায়সা ওয়াসুল গল্প। এই লাইনটা, " আপনার মনের আকুলতা আর আমার মনের ব্যাকুলতা মিলেমিশে যে অনুভূতির রচনা করবে তাই আকুলিবিকুলি। " এটা আমার ভবিষ্যৎ বরকে পটানোর জন্য ট্রাই করবো ইংশাআল্লাহ
আমি 💔 ফিদা❤️
আপনার লিখা পরলে সবসময় না লাস্ট টা ধরে রাখে।আর সত্যি বলতে মন টা happy ending হলেও খারাপ লাগে।Khub unique আপনি আর আপনার লিখা।
এতো অসাধারণ একটা গল্প "আকুলিবিকুলি" গল্পের কিছু ক্লিপ পড়ে বুঝতেই পারিনি যে ভেতরে এমন একটা কাহিনি আছে। প্রথমে যখন রউফ তামসীকে বিয়ে করে তখন আমি বাকরূদ্ধ! এটা কি হলো? নায়িকা না টিশা? তাহলে ওকে কীভাবে বিয়ে করে? কিন্তু আস্তে আস্তে পড়ার পর সব ক্লিয়ার হলো। আর আমি মুগ্ধতায় ডুবে গেলাম।😌 টিশা মেয়েটা একটু বাচাল টাইপের। কিন্তু তার ভালোবাসা এতো নিখুঁত! যে কি বলবো। স্বামীকে যে এতোটা বিশ্বাস, ভরসা আর ভালোবাসা যায় তা যেন টিশাকে না দেখলে জানতেই পারতাম নাহ। মেয়েটা একদম সরল মনের। অসম্ভব ভালো লেগেছে টিশাকে। আর রউফ তার প্রতি এতো রাগ উঠছে বাপ! যে মেয়ে তাকে ধোঁকা দিলো, অন্যের বাচ্চা পেটে নিল তাকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে কিছু না ভেবেই বিয়ে করে নিল! 😪 কিন্তু পরে সে তার ভুল বুঝতে পেরেছো এটাই অনেক। তাদের ভালোবাসা বেঁচে থাকুক।😌 তোমাকেও ভালোবাসা নামীপু। এতো অসাধারণ একটা গল্প উপহার দেওয়ার জন্য।😌 রেটিং :৫/৫ আহানা🥀🤍
অনেক সুন্দর একটি বই ।
আপু এতো রোমান্টিক বই কিভাবে লিখেন?বাস্তব জীবনে ও হয়তো আপনি এমন❤️বইটা প্রথমে পড়ে তামসীকে বিয়ের ব্যাপারটা কেন জানি ভালো লাগেনি তাই স্কিপ করে গেছিলাম।অভিমানিতা পড়ে আবার ও আপনার গল্প পড়তে ইচ্ছে হলো তাই এটা আবার পড়লাম।দারুন অনূভুতি ছিল🥰চিন্তা করছিলাম এতোদিন কি মিস করছি🤔
সুন্দর হয়েছে। 💖
জোস ছিলো। ইউনিক ছিলো গল্প টা পুরো। আর তোমার লেখার ফহরন বরাবরের মতোই মুগ্ধ করেছে আমাকে।।আরেক টা কথা নাইমাপু তুমি কি জানো আমি শুধু তোমার গল্প গুলো পড়ার জন্যই আইডি খুলেছি।❤️🩹❤️🩹❤️🩹আমার এতো ভালো লাগে তোমার গল্প,উপন্যাস তোমাকে বলে বুঝাতে পারবো না।।ট